Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

মোদীর সফরে রোহিঙ্গা ছায়া

রোহিঙ্গা উদ্বাস্তুদের নিয়ে ভুগতে হচ্ছে ভারতকেও। তবু মায়ানমার সরকারের পাশে থাকারই বার্তা দিচ্ছে নয়াদিল্লি। উত্তর মায়ানমারের রাখাইন প্রদেশে রোহিঙ্গাদের নিয়ে সমস্যা সে দেশের কাছেও এক সঙ্কট। যা কিনা ক্রমেই তীব্র হচ্ছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০২ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ০৮:২০
Share: Save:

চিনে ব্রিকস সম্মেলন সেরে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী মায়ানমার যাচ্ছেন আগামী মঙ্গলবার। চিনের ক্রমবর্ধমান প্রভাব থেকে গুরুত্বপূর্ণ এই প্রতিবেশী রাষ্ট্রের মুখ কিছুটা হলেও ভারতের দিকে ঘোরানোই মোদীর এই সফরের মূল লক্ষ্য। পাশাপাশি ‘অ্যাক্ট ইস্ট’ প্রকল্পে মায়ানমারকে আরও বেশি করে সমিল করার দিকেও জোর দিতে চান তিনি। কিন্তু এই উদ্যোগে কিছুটা হলেও ছায়া ফেলছে ক্রমশ অগ্নিগর্ভ হয়ে ওঠা রোহিঙ্গা সমস্যা। ভারত-মায়ানমার দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে এটি এক বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে উঠেছে।

রোহিঙ্গা উদ্বাস্তুদের নিয়ে ভুগতে হচ্ছে ভারতকেও। তবু মায়ানমার সরকারের পাশে থাকারই বার্তা দিচ্ছে নয়াদিল্লি। উত্তর মায়ানমারের রাখাইন প্রদেশে রোহিঙ্গাদের নিয়ে সমস্যা সে দেশের কাছেও এক সঙ্কট। যা কিনা ক্রমেই তীব্র হচ্ছে। রোহিঙ্গাদের হাতে সম্প্রতি আক্রান্ত হয়েছে সে দেশের পুলিশ। ভারত আজও তীব্র ভাষায় তার নিন্দা করে জানিয়েছে, মায়ানমারের পাশেই থাকতে চায় নয়াদিল্লি। বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র রভীশ কুমারের কথায়, ‘‘মায়ানমারের নিরাপত্তাকর্মীদের প্রাণহানিতে আমরা ব্যথিত। কঠোর ভাষায় এই ধরনের হামলার নিন্দা করা উচিত।’’

কিন্তু সমস্যা হল, ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে প্রায় ৪০ হাজার রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশকারী রয়েছে। তাদের ফেরত পাঠানোর জন্য তৎপরতাও শুরু করেছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী কিরেন রিজিজু জানিয়েছেন, তাদের ফেরত পাঠাতে রাজ্যগুলিকে নির্দেশ দিচ্ছে কেন্দ্র। কিন্তু মায়ানমার তাদের ফিরিয়ে নিতে চায় না। এই বাঙালি উদ্বাস্তুদের নিতে চায় না বাংলাদেশও। ফলে মোদীর সফরে বিষয়টি নিয়ে শেষ পর্যন্ত কী সিদ্ধান্ত হয়, তা খুবই গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠতে চলেছে বলে মনে করছে কূটনৈতিক শিবির।

এরই মধ্যে ভারতে অবৈধ ভাবে বসবাসকারী রোহিঙ্গা মুসলিম অনুপ্রবেশকারীদের মায়ানমারে ফেরত পাঠানোর সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে যে পিটিশন জমা পড়েছিল, সুপ্রিম কোর্টে তা নিয়ে শুনানি হবে ৪ সেপ্টেম্বর। আবেদনটি করেছেন দু’জন রোহিঙ্গা অভিবাসী। তাঁদের বক্তব্য, মায়ানমারে তাঁদের অত্যাচারিত হতে হয়। এই অবস্থায় তাঁদের জোর করে সে দেশে পাঠালে, তা নানা আন্তর্জাতিক নীতি এবং মানবিকতার বিরুদ্ধে যাবে। সব মিলিয়ে উভয়সঙ্কটে ভারত।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE