লক্ষ লক্ষ ডলার জালিয়াতির অভিযোগ ছিল তার বিরুদ্ধে। মার্কিন আদালত শেষ পর্যন্ত দোষী সাব্যস্ত করল ভারতীয় নাগরিক হর্ষ পটেলকে। টেক্সাসের সার্দার্ন ডিস্ট্রিক্ট কোর্টের বিচারক ডেভিড হিটনার হর্ষকে দোষী সাব্যস্ত করেছেন। অগস্টে হবে সাজা ঘোষণা।
২৮ বছরের এই যুবক বর্তমানে আমেরিকার নিউ জার্সির বাসিন্দা। অভিযোগ, প্রতারণা করে মার্কিন নাগরিকদের কাছ থেকে লক্ষাধিক ডলার নেওয়ার পিছনে বড় ভূমিকা ছিল হর্ষের। তার আগে আরও দুই ভারতীয়কে একই অপরাধে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছিল। তাদের নাম, ভরতকুমার পটেল (৪৩) ও অশ্বিনভাই চৌধুরি (২৮)।
ঘটনা ২০১৫ সালের। আমদাবাদের বেশ কয়েকটি কল সেন্টার থেকে আমেরিকার বিভিন্ন শহরের কয়েকশো নাগরিককে ফোন করা হয়। নিজেদের মার্কিন আয়কর দফতর বা অভিবাসী দফতরের অফিসার পরিচয় দিয়ে ওই কলাররা জানায়, খুব তাড়াতাড়ি মোটা অঙ্কের ডলার না-দিলে পুলিশ গিয়ে তাঁদের বাড়ি তল্লাশি করবে। এমনকী তাঁদের গ্রেফতারও করা হতে পারে। বেছে বেছে এমন ব্যক্তিদের ফোন করা হতো, যাঁদের বিরুদ্ধে কোনও না কোনও মামলা ঝুলছে। ফোন পেয়ে নিজেদের বাঁচাতে তড়িঘড়ি টাকা দিতে রাজি হয়ে যেতেন ওই মার্কিন নাগরিকরা। মূলত ডিজিটাল পদ্ধতিতেই হতো আর্থিক লেনদেন। ডলার দেওয়ার কিছু দিনের মধ্যেই পাততাড়ি গুটিয়ে ফেলত সংস্থাটি। মোটা ডলার নিয়ে উধাও হতো হর্ষ।
দেশের কয়েক জন নাগরিকের থেকে একই ধরনের অভিযোগ পেয়ে বিষয়টি নিয়ে তদন্ত শুরু করে হোমল্যান্ড সিকিউরিটি এবং মার্কিন তদন্তকারী সংস্থা এফবিআই। গত অক্টোবরে তদন্তে জানা যায়, ভারতের কয়েকটি এলাকার কল সেন্টার থেকে এই ধরনের ফোনগুলি করা হচ্ছে। তার পরই গোয়েন্দাদের নজরে আসে আমদাবাদের কয়েকটি কল সেন্টার। পাঁচটি কল সেন্টারের প্রায় ৫০ জন কর্মীকে জিজ্ঞাসাবাদ করে হর্ষের ভূমিকা প্রকাশ্যে আসে। একই ভাবে তল্লাশি চালানো হয় পুণে, নয়ডা এবং গুরুগ্রামের কয়েকটি কল সেন্টারেও। জেরায় হর্ষ জালিয়াতির অভিযোগ স্বীকার করেছে বলে দাবি করেছে মার্কিন পুলিশ। এ-ও জানা গিয়েছে, এক এক জন কাস্টমারের কাছ থেকে ৫০০ থেকে ৬০ হাজার ডলার পর্যন্ত চাওয়া হয়েছে।
প্রায় একই ধরনের অভিযোগে গত মাসে গ্রেফতার হয় সাগর ঠক্কর নামে আর এক ভারতীয়। ২৪ বছরের সাগরকে মুম্বই বিমানবন্দরে ধরা হয়। তার দুবাই পালিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা ছিল। ২০১৩ সাল থেকে দক্ষিণ এশিয়ার বিভিন্ন দেশের নাগরিকদের সঙ্গে প্রতারণা করে প্রায় একই কায়দায় অর্থ লুটেছিল সাগর। আড়াই কোটি টাকার একটি বিদেশি গাড়ি নিজের প্রেমিকাকে উপহার দিয়েছিল সাগর। যেটি ক্রিকেটার বিরাট কোহালির কাছ থেকে কেনা। পুলিশ পরে জানায়, গোটা মামলায় বিরাটের কোনও ভূমিকা ছিল না, কারণ তিনি প্রকৃত ক্রেতার পরিচয় না জেনেই গাড়িটি বেচেছিলেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy