বাংলাদেশে উন্মত্ত জনতার তাণ্ডব থেকে রেহাই পায়নি বিএনপি নেতার সাত বছরের শিশুকন্যাও। আগুনে পুড়ে গুরুতর ভাবে জখম হয়েছিলেন ওই নেতার আরও দুই মেয়ে। বুধবার গভীর রাতে ঢাকায় চিকিৎসাধীন অবস্থাতেই মৃত্যু হল বিএনপি নেতার জ্যেষ্ঠ কন্যারও।
শুক্রবার রাতে চট্টগ্রাম বিভাগের লক্ষ্মীপুর জেলায় ওই বিএনপি নেতা বেলাল হোসেনের বাড়ির দরজায় তালা লাগিয়ে আগুন ধরিয়ে দিয়েছিল উন্মত্ত জনতা। অগ্নিদগ্ধ হয়ে মৃত্যু হয়েছিল বেলালের সাত বছরের শিশুকন্যা আয়েশা আক্তারের। অগ্নিকাণ্ডে গুরুতর ভাবে জখম হন বেলাল এবং তাঁর অপর দুই কন্যা সায়মা আক্তার বীথি এবং সালমা আক্তার স্মৃতি আক্তার। সায়মা এবং সালমাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকার জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে নিয়ে যাওয়া হয়। বুধবার রাত ১টা নাগাদ (বাংলাদেশের স্থানীয় সময় অনুসারে) চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয় সালমার। তার শ্বাসনালি-সহ শরীরের ৯০ শতাংশই পুড়ে গিয়েছিল।
অগ্নিকাণ্ডে জখম হয়েছিলেন বেলাল নিজেও। বুধবার সকালে হাসপাতাল থেকে ছাড়া পান তিনি। কনিষ্ঠ কন্যার শেষকৃত্যে অংশ নিতে পারেননি। সেই দুঃখ চেপে রেখেই বৃহস্পতিবার হাসপাতালে অন্য দুই কন্যাকে দেখতে যাওয়ার পরিকল্পনা করেছিলেন তিনি। বুধবার বিকেলে বাংলাদেশের সংবাদপত্র ‘প্রথম আলো’কে বেলাল বলেন, “আজ ছোট মেয়েটার কবর দেখলাম। কাল (বৃহস্পতিবার) ঢাকায় বড় মেয়েটারে দেখতে যাব। চোখ খুইল্যা বাপরে দেখলে মেয়েটা একটু শান্তি পাব।” তবে তাঁর সেই আশা আর পূরণ হল না।
দুষ্কৃতীরা বাড়িতে আগুন ধরানোর সময় টিনের ঘরের তিনটি কক্ষে বেলাল, তাঁর স্ত্রী নাজমা বেগম, তিন কন্যা ও দুই পুত্র ঘুমাচ্ছিলেন। বেলাল স্ত্রী, চার বছর বয়সি পুত্র নাজমুল ইসলাম, চার মাস বয়সি নজরুল ইসলাম, জ্যেষ্ঠ কন্যা সালমা এবং মধ্যম কন্যা সায়মাকে ঘরের টিনের বেড়া উঁচু করে কোনও রকমে বার করতে পেরেছিলেন। কিন্তু ‘আব্বু বাঁচাও’ বলে চিৎকার করতে করতে আগুনে ঝলসে মারা যায় বেলালের সাত বছরের কন্যা আয়েশা।