Advertisement
E-Paper

মালির হোটেলে জঙ্গি হানা, নিহত ২৭ জন পণবন্দি

তখনও সকলের ঘুম ভাঙেনি। তার আগেই গুলির শব্দ। বোমা ফাটার আওয়াজ। প্যারিস হামলার এক সপ্তাহ পেরোতে না পেরোতেই আবার জঙ্গি হামলা। এ বার অবশ্য ইউরোপ নয়। লক্ষ্য পশ্চিম আফ্রিকার দেশ মালি। সেখানকার রাজধানী বামাকোর একটি বিলাসবহুল হোটেল ‘র‌্যাডিসন ব্লু’-তে আজ বন্দুক হাতে আট ঘণ্টা ধরে তাণ্ডব চালাল জঙ্গিরা।

সংবাদ সংস্থা

শেষ আপডেট: ২১ নভেম্বর ২০১৫ ০২:৫০
চলছে উদ্ধারকাজ। শুক্রবার মালির র্যাডিসন ব্লু হোটেলের বাইরে। —এএফপি

চলছে উদ্ধারকাজ। শুক্রবার মালির র্যাডিসন ব্লু হোটেলের বাইরে। —এএফপি

তখনও সকলের ঘুম ভাঙেনি। তার আগেই গুলির শব্দ। বোমা ফাটার আওয়াজ।

প্যারিস হামলার এক সপ্তাহ পেরোতে না পেরোতেই আবার জঙ্গি হামলা। এ বার অবশ্য ইউরোপ নয়। লক্ষ্য পশ্চিম আফ্রিকার দেশ মালি। সেখানকার রাজধানী বামাকোর একটি বিলাসবহুল হোটেল ‘র‌্যাডিসন ব্লু’-তে আজ বন্দুক হাতে আট ঘণ্টা ধরে তাণ্ডব চালাল জঙ্গিরা। প্রথমেই হোটেলের ১৭০ জনকে আটকে রাখে জঙ্গিরা। পণবন্দিদের মধ্যে ছিলেন ২০ জন ভারতীয়ও। শেষ পর্যন্ত অবশ্য মালি সেনা-পুলিশের সঙ্গে ফরাসি এবং মার্কিন বাহিনীর যৌথ অভিযানে মুক্ত করা যায় বেশির ভাগ পণবন্দিকে। কিন্তু ঘটনাস্থলে উপস্থিত রাষ্ট্রপুঞ্জের শান্তিরক্ষীবাহিনী সূত্রে খবর, তাঁরা হোটেলে ২৯টি দেহ পড়ে থাকতে দেখেছেন। তার মধ্যে দু’টি দেহ বন্দুকবাজের হলেও বাকি ২৭ জন পণবন্দি বলে শনাক্ত করা গিয়েছে। হামলার দায় স্বীকার করেছে আল কায়দার একটি শাখা সংগঠন।

ভারতের বিদেশ মন্ত্রক সূত্রে খবর, ২০ জন ভারতীয়কেই নিরাপদে হোটেলের বাইরে নিয়ে আসা সম্ভব হয়েছে। দুবাইয়ের একটি ব্যবসায়ী সংগঠনে কাজ করতেন তাঁরা। কর্মসূত্রে বামাকো এসেছিলেন।

শহরের কেন্দ্রস্থল থেকে একটু পশ্চিমে র‌্যাডিসন ব্লু হোটেল। খাস মন্ত্রীদের দফতরও এই হোটেল থেকে খুব একটা দূরে নয়। সকাল সাতটা নাগাদ হোটেলে হানা দেয় দুষ্কৃতীরা। হোটেলের এক কর্মীর কথায়, ‘‘আমি বাগানে কাজ করছিলাম। হঠাৎ একটা গাড়ি এসে দাঁড়াল। কূটনৈতিকদের গাড়িতে যেমন নম্বর প্লেট থাকে, ওই গাড়িতেও তেমনটাই ছিল।’’ গেটের রক্ষীরা গাড়িটা থামাতেই মুখ ঢা়কা জঙ্গিরা নেমে এলোপাথাড়ি গুলি চালাতে শুরু করে। আহত হয়েছেন গেটের নিরাপত্তা রক্ষীরাও।

এক পণবন্দি মহিলাকে উদ্ধার করে হোটেলের বাইরে নিয়ে আসছে পুলিশ। ছবি: এএফপি।

ক’জন ছিল সেই দলে? তা নিয়ে ধোঁয়াশা রয়ে গিয়েছে। কেউ বলছে, দশ। কেউ তেরো। কারও কথায় হামলাকারীদের সংখ্যাটা আসলে পাঁচ। পুলিশ জানিয়েছে, দু’জন হামলাকারীর মৃত্যু হয়েছে। একটি সূত্রের দাবি, সব পণবন্দিরা মুক্তি পেলেও হোটেলে এখনও রয়ে গিয়েছে বেশ কয়েক জন বন্দুকবাজ।

ঘটনার সঙ্গে সঙ্গেই এলাকায় হাজির হয়ে যায় পুলিশ। মুহূর্তের মধ্যেই ঘিরে ফেলা হয় হোটেল চত্বর। টিভি ফুটেজে দেখা যায়, এ কে-৪৭ হাতে হোটেলের বারান্দায় ঘোরাঘুরি করছে দুষ্কৃতীরা। এক পুলিশ কর্তা জানিয়েছেন, হোটেলে ঢুকে ধীরে ধীরে এক একটা তলা থেকে তাঁরা পণবন্দিদের মুক্ত করা শুরু করেন। এক বাসিন্দার কথায়, ‘‘পুলিশ আমাকে এবং আরও ছ’জনকে বাইরে নিয়ে আসে।’’ হোটেলে আটক ছিলেন গিনির এক গায়ক, সেকুবা ব্যাম্বিনো। তিনি বলেছেন, ‘‘রিসেপশন চত্বর থেকে আওয়াজ পাই প্রথমে। বুঝতে পারি নিছক পিস্তলের শব্দ নয়। ঠিক পাশের ঘরেই হানা দিয়েছিল জঙ্গিরা। আমি খাটের তলায় লুকিয়ে ছিলাম।’’


সবিস্তার জানতে ক্লিক করুন

এই হামলার দায় স্বীকার করে টুইট করে আল মুরাবিতুন জঙ্গি গোষ্ঠী। আফ্রিকায় আল কায়দার শাখা স‌ংগঠন বলে পরিচিত সেটি।

মালি পুলিশের সঙ্গে দুষ্কৃতী মোকাবিলায় আজ হাত মিলিয়েছে সে দেশে থাকা রাষ্ট্রপুঞ্জ, আমেরিকা ও ফ্রান্সের শান্তিরক্ষা পুলিশ বাহিনীও। ফরাসি প্রেসিডেন্ট ফ্রাঁসোয়া ওলাঁদ বলেছেন, ‘‘আমরা আমাদের বন্ধু দেশ, মালির পাশে আছি।’’ চিন প্রশাসনের দাবি, তাদের অন্তত সাত জন পণবন্দি ছিল সেই হোটেলে। তুরস্কের একটি বিমান সংস্থা জানিয়েছে, আটক ছিলেন তাদের ছয় কর্মীও। চাদে একটি সম্মেলনে গিয়েছিলেন মালির প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম বুবাকার কেত। কিন্তু এই পরিস্থিতিতে সফর কাটছাঁট করে দেশে ফিরে আসছেন তিনি।

সরকারপন্থী বাহিনীর সঙ্গে জুন মাসেই একটি শান্তি চুক্তি হয়েছিল জঙ্গিদের। তবে তা অমান্য করে এর আগেও অগস্ট মাসে মালির আর একটি শহর সিভরের একটি হোটেলে হামলা চালিয়েছিল জঙ্গিরা। সে যাত্রায় রেহাই পাননি রাষ্ট্রপু়ঞ্জের কর্মীরা।

islamist extremist mali hotel
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy