জেন জ়ি-র হিংসাত্মক আন্দোলনের জেরে প্রেসিডেন্ট দেশ ছেড়ে পালানোর পরেই পূর্ব আফ্রিকার দ্বীপরাষ্ট্র মাদাগাস্কারের ক্ষমতা দখল করল সেনাবাহিনী। আর তার পরেই সেনার তত্ত্বাবধানে পার্লামেন্ট সদস্যদের অধিবেশনের আয়োজন করে আনুষ্ঠানিক ভাবে বরখাস্ত করা হল পলাতক প্রেসিডেন্ট অ্যান্ড্রে রাজ়োয়েলিনাকে।
মাদাগাস্কার সেনার এলিট ‘কাপসাট’ ব্যাটালিয়নের দায়িত্বপ্রাপ্ত এক কর্নেল সাময়িক ভাবে মুখ্য প্রশাসক নিযুক্ত হয়েছেন বলে সে দেশের সংবাদমাধ্যম জানাচ্ছে। ‘পলাতক’ অ্যান্ড্রে মঙ্গলবার সেনার ক্ষমতা দখলের নিন্দা করে সমাজমাধ্যমে একটি পোস্ট করেন। তিনি লেখেন, ‘‘আমি আগেই আইনসভা (পার্লামেন্ট) ভেঙে দিয়েছিলাম। তাই তার সদস্যদের ভোটদানের কোনও অধিকারই নেই।’’
গত ২৫ সেপ্টেম্বর বিদ্যুৎ এবং পানীয় জলের সঙ্কটে ক্ষুব্ধ মাদাগাস্কারের রাজধানী আন্তানানারিভোর বাসিন্দাদের একাংশ পথে নেমেছিলেন। ধীরে ধীরে তা ছড়িয়ে পড়ে দেশের অন্যত্র। আর সামনের সেই আন্দোলনের সামনের সারিতে চলে আসে জেন জ়ি। প্রেসিডেন্ট অ্যান্ড্রের পাশাপাশি বিক্ষোভের অভিমুখ ছিল প্রধানমন্ত্রী ক্রিশ্চিয়ান এনৎসে এবং তাঁদের ঘনিষ্ঠ ধনকুবের মায়মি রাভাতোমাঙ্গার বিরুদ্ধে। গত ১ অক্টোবর এনৎসে সরকারকে বরখাস্ত করে, পার্লামেন্ট ভেঙে দিয়ে নতুন নির্বাচনের ঘোষণা করেছিলেন অ্যান্ড্রে। কিন্তু বিক্ষোভের আঁচ স্তিমিত হয়নি। উল্টে সম্প্রতি প্রাক্তন ফরাসি উপনিবেশটির সেনাবাহিনীর একাংশও প্রকাশ্যে প্রেসিডেন্টের বিরোধিতা করেছিল।
আরও পড়ুন:
এই পরিস্থিতিতে সোমবার গোপনে দেশ ছাড়েন অ্যান্ড্রে। মাদাগাস্কারের বিরোধী নেতা সিতেনি র্যান্ড্রিয়ানা সোলোনিয়াইকো প্রথম সংবাদ সংস্থা রয়টার্সকে সে খবর জানিয়ে বলেন, ‘‘প্রেসিডেন্ট দেশ ছেড়ে চলে গিয়েছেন। আমরা প্রেসিডেন্টের দফতরের কর্মীদের থেকে নিশ্চিত ভাবে জেনেছি যে তিনি দেশ ছেড়েছেন।’’ ফ্রান্সের সংবাদমাধ্যম আরএফআই দাবি করেছে, সে দেশের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ সঙ্গে সমঝোতার ভিত্তিতে অ্যান্ড্রেকে ফরাসি সামরিক বিমানে মাদাগাস্কার থেকে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। ঘটনাচক্রে, মাদাগাস্কারে সেনার ওই এলিট ‘কাপসাট ব্যাটালিয়ন’ ২০০৯ সালে প্রথম বার অ্যান্ড্রেকে ক্ষমতা দখলে সহায়তা করেছিল। ওই বছর তৎকালীন প্রেসিডেন্ট মার্ক রাভালোমানানাকে সরিয়ে তিনি সেনার সাহায্যে অন্তর্বর্তী প্রেসিডেন্ট হয়েছিলেন। এ বার তার বিরুদ্ধেই আবার সেনার একই ব্যাটালিয়ন বিদ্রোহ করে ক্ষমতা দখল করল।