প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। —ফাইল চিত্র।
লোকসভা ভোটের মুখে প্রধানমন্ত্রীর দূত হিসেবে প্রায় প্রতিনিয়ত ভারত তথা নরেন্দ্র মোদীর ‘বিশ্বগুরু’ ভাবমূর্তি তুলে ধরতে নিত্যনতুন কূটনৈতিক তত্ত্ব উপস্থাপিত করছেন বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। এই আবহে ইউক্রেনের উপরে রাশিয়ার পরমাণু হামলার ভাবনা মোদীর হস্তক্ষেপেই আটকে যাওয়ার খবর আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে ভেসে ওঠা সেই চেষ্টায় নতুন করে সিলমোহর দিতে পারে বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহলের একাংশ।
আমেরিকান সংবাদমাধ্যমের এক রিপোর্টে দাবি, ইউক্রেনের উপরে রাশিয়া পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহারের পথে হাঁটার কথা ভাবলেও, তা শেষমেশ হয়নি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর জন্য। ওই রিপোর্ট অনুযায়ী, মোদীর হস্তক্ষেপেই ইউক্রেনের উপরে পরমাণু-হামলার পরিকল্পনা থেকে বিরত করা গিয়েছিল রাশিয়াকে। ২০২২ সালেই নাকি ইউক্রেনে ওই পারমাণবিক অস্ত্রে আক্রমণের ছক কষেছিলেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। রিপোর্টে দাবি, মোদীর ভারত ছাড়াও চিন-সহ বেশ কয়েকটি দেশ সেই বিপদ এড়াতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে।
এই প্রতিবেদনে আমেরিকান প্রশাসনের এক শীর্ষ কর্তার উদ্ধৃতি, “আমরা শুধুমাত্র এই দেশগুলিকে বার্তাই পাঠাইনি। তাদের পিছনে লেগে থেকেছি, চাপ দিয়েছি, উৎসাহও জুগিয়েছি রাশিয়াকে নিবৃত্ত করতে। আন্তর্জাতিক স্তরে এ বিষয়ে প্রবল উদ্বেগ দেখানোটা কাজে এসেছে। ওরা (রাশিয়া) বুঝতে পেরেছে, যা করতে চলেছে তার দাম কতটা দিতে হবে।” তাঁর কথায়, “আমরা যতটা জানি, ভারত, চিন এবং অন্য কিছু দেশও তাদের (মতামতের) ওজন মস্কোর উপরে চাপিয়েছিল। রাশিয়ার চিন্তায় কিছুটা পরিবর্তন আসে তার পরেই।”
প্রসঙ্গত, গত বছর উজ়বেকিস্তানে এসসিও শীর্ষ সম্মেলনে পুতিনের মুখোমুখি আলোচনায় বসে মোদী বলেছিলেন, ‘‘এই সময় যুদ্ধের নয়।’’ তাঁর এই কথা নয়দিল্লির জি২০ যৌথ বিবৃতিতেও উঠে এসেছে। এটা ঘটনা যে, রাশিয়ার সঙ্গে কূটনৈতিক দর কষাকষির ক্ষেত্রে ভারত পশ্চিমের গুরুত্বপূর্ণ তাস। ভারতের বিশাল বাজার, জ্বালানি এবং প্রতিরক্ষা সরঞ্জামের বিপুল চাহিদা মস্কোর কাছে অত্যন্ত আকর্ষণীয়। বিশেষত আমেরিকার আর্থিক নিষেধাজ্ঞার পরে। তাই পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহারে রাশিয়াকে নিবৃত্ত করতে অন্য দেশের পাশাপাশি ভারতকেও যে পশ্চিমী দুনিয়া কাজে লাগাবে, এ ব্যাপারে আশ্চর্য হওয়ার তেমন কিছু নেই বলেই কূটনৈতিক শিবিরের অভিমত।
কিন্তু এই প্রশ্নও উঠছে যে, দু’বছর আগের এই ঘটনার কথা ঠিক ভারতে লোকসভা ভোটের মুখেই উঠে এল কেন? এ ক্ষেত্রে মোদীর আন্তর্জাতিক ভাবমূর্তিকে এই গুরুত্বপূর্ণ সময়ে বড় করে দেখালে তার ফল ঘরোয়া রাজনীতিতেও পড়বে বলে মনে করছে রাজনৈতিক শিবিরের একাংশ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy