পাকিস্তানের সেনাপ্রধান আসিম মুনির চিনে গিয়েছেন। দেখা করেছেন চিনের বিদেশমন্ত্রী ওয়াং ই-র সঙ্গে। ‘অপারেশন সিঁদুর’ এবং ভারতের সঙ্গে পাকিস্তানের সংঘাতের পর মুনির এই প্রথম চিনে গেলেন। সূত্রের খবর, সেখানে তাঁকে কড়া কিছু প্রশ্নের মুখোমুখি হতে হয়েছে। পাকিস্তানে চিনা নাগরিকদের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন ওয়াং। জানতে চেয়েছেন, চিনাদের সুরক্ষার জন্য কী কী বন্দোবস্ত করেছে পাকিস্তান সরকার। শুধু চিনের নাগরিক নয়, পাকিস্তানে অবস্থিত চিনা প্রতিষ্ঠান এবং বিভিন্ন প্রকল্পের বিষয়েও তিনি খোঁজখবর নিয়েছেন।
বেজিংয়ে চিনের বিদেশমন্ত্রী ওয়াং ই-র সঙ্গে পাকিস্তানের সেনাপ্রধান আসিম মুনির। ছবি: এক্স।
উল্লেখ্য, গত কয়েক বছর ধরে পাকিস্তানে পর পর মৃত্যু হয়েছে চিনের নাগরিকের। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই মৃত্যুর নেপথ্যে রয়েছে কোনও না কোনও সন্ত্রাসবাদী হামলা। ২০২৪ সালের অক্টোবর মাসে করাচি বিমানবন্দরের ঠিক বাইরে একটি গাড়িতে আত্মঘাতী বিস্ফোরণ হয়েছিল। তাতে দু’জন চিনা নাগরিকের মৃত্যু হয়। আবার, ওই বছরেরই মার্চ মাসে উত্তর পাকিস্তানে আত্মঘাতী বোমা হামলায় মৃত্যু হয় পাঁচ জন চিনা শ্রমিকের। পর পর ঘটনার দিকে বেজিং নজর রেখেছে। মুনির যাওয়ার পর সেই প্রসঙ্গই তোলা হয়েছিল।
আরও পড়ুন:
চিনের বিদেশমন্ত্রী পাকিস্তানে চিনাদের নিরাপত্তার প্রসঙ্গ তুললে পাক সেনাপ্রধান তাঁকে আশ্বস্ত করেন। তিনি বেজিং এবং ইসলামাবাদের পারস্পরিক বন্ধুত্ব, সৌভ্রাতৃত্বের বিষয়টিতে জোর দেন। জানান, কঠিন সময়েও এই দুই দেশ একে অপরের পাশে থেকেছে। চিনের বিদেশমন্ত্রীকে মুনির আশ্বাস দিয়েছেন, চিনাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সম্ভাব্য সকল পদক্ষেপ করবে পাক সেনা।
গত ২২ মে পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলার পর ভারত যখন পাকিস্তানকে দায়ী করে একের পর এক পদক্ষেপ করছে, সেই সময়েও চিনকে পাশে পেয়েছিল ইসলামাবাদ। তাদের নিরপেক্ষ আন্তর্জাতিক তদন্তের দাবিকে সমর্থন করে বার্তা দিয়েছিল বেজিং। এর পর ২৬ মে মধ্যরাতে পাকিস্তানে হামলা চালায় ভারত। ‘অপারেশন সিঁদুর’-এ একাধিক পাক জঙ্গিঘাঁটি ধ্বংস করা হয়। তার পরেই দুই দেশ সশস্ত্র সংঘাতে জড়িয়ে পড়ে, যা টানা চার দিন স্থায়ী হয়েছিল। এই সংঘাতের সময়ে চিনকে প্রথম থেকেই পাশে পেয়েছিল পাকিস্তান। ১০ মে ভারত-পাক সংঘর্ষবিরতি হয়। তার পর থেকে পাকিস্তান আন্তর্জাতিক মহলে কূটনীতিকে আশ্রয় করে সক্রিয় ভাবে প্রতিরক্ষা জোরদার করার চেষ্টা চালাচ্ছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এমন একটা সময়ে মুনিরের চিন সফর অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ।
মুনিরের সফরকালে পাকিস্তানের প্রতি সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করেছেন চিনের বিদেশমন্ত্রী। বলেছেন, ‘‘চিন এবং পাকিস্তান সব সময়, যে কোনও পরিস্থিতিতে একে অপরের পাশে থেকেছে। নানাবিধ চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হয়েছে। পাকিস্তান সব সময় চিনের কূটনৈতিক অগ্রাধিকার।’’ চিনের সমর্থনের জন্য বেজিংয়ের বিদেশমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন মুনির।