Advertisement
১৬ এপ্রিল ২০২৪
কেনিয়া

ছাত্রাবাসে জঙ্গি হানা, হত ১৪৭

ভোর পাঁচটা। তখনও ভাল করে ঘুমই ভাঙেনি সকলের। কেনিয়ার গারিসা ইউনিভার্সিটি কলেজের ছাত্রাবাসের ডর্মেটরিতে আচমকাই শুরু হয় গুলিবর্ষণ। মুখোশ পরা জঙ্গিরা ততক্ষণে ঢুকে পড়েছে হস্টেল চত্বরে। ডর্মেটরিগুলিতে ঢুকেই নির্বিচারে গুলি চালানো শুরু করে দেয় তারা। প্রাণ বাঁচানোর জন্য তখন গোটা হস্টেল জুড়ে শুরু হয় হুড়োহুড়ি।

হস্টেল চত্বর জঙ্গিমুক্ত করতে তৎপর সেনা। বৃহস্পতিবার সোমালিয়ার সীমান্তবর্তী গারিসা শহরে। ছবি: রয়টার্স।

হস্টেল চত্বর জঙ্গিমুক্ত করতে তৎপর সেনা। বৃহস্পতিবার সোমালিয়ার সীমান্তবর্তী গারিসা শহরে। ছবি: রয়টার্স।

সংবাদ সংস্থা
নাইরোবি শেষ আপডেট: ০৩ এপ্রিল ২০১৫ ০৩:০০
Share: Save:

ভোর পাঁচটা। তখনও ভাল করে ঘুমই ভাঙেনি সকলের। কেনিয়ার গারিসা ইউনিভার্সিটি কলেজের ছাত্রাবাসের ডর্মেটরিতে আচমকাই শুরু হয় গুলিবর্ষণ। মুখোশ পরা জঙ্গিরা ততক্ষণে ঢুকে পড়েছে হস্টেল চত্বরে। ডর্মেটরিগুলিতে ঢুকেই নির্বিচারে গুলি চালানো শুরু করে দেয় তারা। প্রাণ বাঁচানোর জন্য তখন গোটা হস্টেল জুড়ে শুরু হয় হুড়োহুড়ি। কিছু বুঝে ওঠার আগে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে জনা কয়েক পড়ুয়া। আজ সকালে উত্তর-পূর্ব কেনিয়ার গারিসা শহরের কলেজের ছাত্রাবাসে জঙ্গি হামলায় ১৪৭ জন পড়ুয়া নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন কেনিয়া সরকারের অফিসারেরা। আহত প্রায় ৮০ জন। নিরাপত্তাবাহিনীর অভিযানে ৪ জন জঙ্গি নিহত হয়েছে।

সোমালিয়ার সীমান্ত লাগোয়া গারিসা শহরে এই হামলার দায় স্বীকার করেছে সোমালিয়ার আল শাবাব জঙ্গি গোষ্ঠী। মুসা ইয়েগো নামে এক পুলিশ অফিসার জানাচ্ছেন, যে ভাবে খ্রিস্টান পড়ুয়াদের বেছে বেছে হামলার নিশানা করা হয়েছে, তা দেখে এটা আল শাবাবের কাজ বলেই তাঁরা অনুমান করেছিলেন। এর আগেও কেনিয়ায় এ ভাবে হামলা চালিয়েছে আল কায়দার এই শাখা গোষ্ঠী।

শুধু তাই নয়, ওই কলেজের কয়েকটি ডর্মেটরিতে ঢুকে কিছু পড়ুয়াকে পণবন্দি করা হয়েছে বলেও দাবি করেছে জঙ্গিরা। যদিও সরকারি ভাবে বিষয়টি নিয়ে মুখ খুলতে চাইছেন না কেউই। হামলার খবর পেয়েই গোটা হস্টেল চত্বর ঘিরে ফেলে পুলিশ। সেখানে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না সংবাদমাধ্যমকেও। সরকারি ভাবে জানানো হয়েছে, গুরুতর আহত কয়েক জনকে নাইরোবির হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।

পুলিশ জানিয়েছে, আজ ভোরে ওই হস্টেলের নিরাপত্তারক্ষীদের গুলি করে হস্টেল চত্বরে ঢোকে জঙ্গিরা। তাদের লক্ষ্যই ছিল ডর্মেটরিগুলি। ঢুকেই তাই সেখানে থাকা পড়ুয়াদের উপরে হামলা শুরু করে তারা। আজকের হামলায় কোনও মতে প্রাণে বেঁচেছেন অগাস্টিন আলাঙ্গা। ২১ বছরের ওই ছাত্র সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, তাঁদের ডর্মেটরিতে পাঁচ জন জঙ্গি ঢুকেছিল। তাঁর কথায়, ‘‘পালাতে গিয়ে আহত হই। প্রাণ বাঁচানোর তাগিদে খালি পায়েই দৌড়েছিলাম।’’

আজকের অভিজ্ঞতার কথা শুনিয়েছেন গ্রেস কাই নামের এক ছাত্রীও। ওই ছাত্রাবাস লাগোয়া একটি টিচার্স ট্রেনিং কলেজের ছাত্রী গ্রেস। তিনি বলেছেন, ‘‘প্রাণ বাঁচানোর তাগিদে পড়ুয়াদের হুড়োহুড়ি শুনে ঘুম থেকে উঠে পড়েছিলাম। অন্ধকারের মধ্যে চারদিকে তখন শুধু চিৎকার আর ছুটোছুটি।’’

নাইরোবির ওয়েস্টগেট মল-সহ বিভিন্ন স্থানে মুসলিম মৌলবাদী জঙ্গিদের হামলার মোকাবিলা করতে হয়েছে কেনিয়াকে। তবে অনেকের মতে, ১৯৯৮ সালে মার্কিন দূতাবাসে হামলার পরে এই প্রথম কেনিয়ায় এত বেশি প্রাণহানি ঘটাতে পারল জঙ্গিরা।

কেনিয়ায় হামলার কড়া সমালোচনা করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তাঁর কথায়, ‘‘বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে এই হানা বর্বরদের কাজ।’’ কেনিয়ায় ভারতীয় বংশোদ্ভূেতর সংখ্যা অনেক। নাইরোবির ওয়েস্টগেট মলে জঙ্গি হামলায় কয়েক জন ভারতীয় বংশোদ্ভূত নিহত হয়েছিলেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE