বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের উপর নির্যাতনের ঘটনাগুলি আদৌ ‘সাম্প্রদায়িক’ নয়। পুলিশের একটি রিপোর্ট উল্লেখ করে এমনটাই দাবি করেছে মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার। গত ৫ অগস্ট সে দেশের প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দিয়ে ভারতে চলে এসেছিলেন শেখ হাসিনা। অভিযোগ, তার পর থেকে বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের উপর অত্যাচার বেড়ে গিয়েছে। বাংলাদেশ পুলিশের রিপোর্টে সংখ্যালঘুদের উপর নির্যাতনের ঘটনা অস্বীকার করা হয়নি। তবে দাবি, সেগুলি সব ‘রাজনৈতিক হামলা’, সাম্প্রদায়িক কারণে নয়।
সংখ্যালঘুদের উপর নির্যাতনে ‘জ়িরো টলারেন্স’ নীতি গ্রহণ করা হবে বলে জানিয়েছে ইউনূসের সরকার। এই ধরনের ঘটনায় সরাসরি অভিযুক্তকে গ্রেফতারের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশের পুলিশ সংখ্যালঘুদের সাহায্যের জন্য একটি বিশেষ হোয়াট্সঅ্যাপ নম্বরও চালু করেছে। সাধারণ মানুষ সেই নম্বরে যোগাযোগ করে পুলিশের কাছে অভিযোগ জানাতে পারবেন।
আরও পড়ুন:
বাংলাদেশ হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ দাবি করেছে, হাসিনা দেশ ছাড়ার এক দিন আগে থেকে সংখ্যালঘুদের উপর নির্যাতন বেড়ে গিয়েছে বাংলাদেশে। ৪ অগস্ট থেকে এখনও পর্যন্ত সারা দেশে মোট ২০১০টি সাম্প্রদায়িক হিংসার ঘটনা ঘটেছে। তার মধ্যে ১,৭৬৯টি ঘটনার অভিযোগ থানায় দায়ের করা হয়েছে। সেগুলি মূলত সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের উপর হামলা এবং ভাঙচুরের ঘটনা। ওই সমস্ত অভিযোগের প্রেক্ষিতে বাংলাদেশ পুলিশ ৬২টি মামলা রুজু করেছে। গ্রেফতার করা হয়েছে অন্তত ৩৫ জন অভিযুক্তকে।
বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের মুখ্য উপদেষ্টার উপপ্রেস সচিব আবুল কালাম আজ়াদ মজুমদার সংখ্যালঘু সংগঠনের এই রিপোর্ট এবং পুলিশের রিপোর্ট উল্লেখ করে শনিবার দাবি করেন, এই সংখ্যালঘু নিগ্রহের ঘটনাগুলি অধিকাংশই ‘রাজনৈতিক’। এর নেপথ্যে সাম্প্রদায়িক কোনও উস্কানি নেই। তিনি বলেন, ‘‘পুলিশ তদন্ত করে জানতে পেরেছে, ১,২৩৪টি ঘটনার চরিত্র ‘রাজনৈতিক’। মাত্র ২০টি ঘটনা সাম্প্রদায়িক।’’ এ ছাড়া, পুলিশের খাতায় জমা পড়া ১৬১টি অভিযোগ অসত্য বলেও দাবি করেছে বাংলাদেশ সরকার।
হাসিনা সরকারের পতনের পর গত ৮ অগস্ট থেকে বাংলাদেশের ক্ষমতায় এসেছে অন্তর্বর্তী সরকার। হাসিনা এখনও ভারতে। তাঁর প্রত্যর্পণ চেয়ে নয়াদিল্লিতে চিঠিও দিয়েছে ঢাকা।