বাংলাদেশে ২০ জন ছাত্রের ফাঁসির সাজা বহাল রাখল সে দেশের হাই কোর্ট। যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে আরও পাঁচ পড়ুয়াকে। ২০১৯ সালে বাংলাদেশের প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অফ ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড টেকনোলজি বা বুয়েট)-এর এক পড়ুয়াকে পিটিয়ে খুনের মামলায় নিম্ন আদালত আগেই এই সাজা ঘোষণা করেছিল। রবিবার সেই সাজাই বহাল রাখে বাংলাদেশের হাই কোর্ট। বাংলাদেশি সংবাদমাধ্যম ‘প্রথম আলো’ অনুসারে, আবরার ফাহাদ নামে বাংলাদেশ প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় বর্ষের ওই পড়ুয়াকে ছাত্রশিবিরের কর্মী সন্দেহ পিটিয়ে খুনের অভিযোগ ওঠে একদল পড়ুয়ার বিরুদ্ধে। ছাত্রশিবির হল বাংলাদেশের অন্যতম রাজনৈতিক সংগঠন জামায়াত-ই-ইসলামির ছাত্র শাখা।
রবিবার বাংলাদেশের হাই কোর্টের বিচারপতি একেএম আসাদুজ্জামান এবং বিচারপতি সৈয়দ এনায়েত হোসেনের বেঞ্চ এই মামলায় রায় দিয়েছেন। সংবাদ সংস্থা পিটিআই জানিয়েছে, মামলায় আসামিরা প্রত্যেকেই ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়া ছিলেন এবং তাঁরা অধুনা নিষিদ্ধ বাংলাদেশ ছাত্র লীগ (শেখ হাসিনার আওয়ামী লীগের ছাত্র শাখা)-এর সঙ্গে যুক্ত ছিলেন।
পিটিআই জানিয়েছে, ২০১৯ সালে তৎকালীন সরকারের সমালোচনা করে সমাজমাধ্যমে একটি পোস্ট করেছিলেন আবরার। এই পোস্টের জেরেই তাঁর উপর হামলা হয়েছিল বলে অভিযোগ। পরে বিশ্ববিদ্যালয় চত্বর থেকেই ওই পড়ুয়ার দেহ উদ্ধার হয়। সংবাদ সংস্থা পিটিআই অনুসারে, মামলার তদন্তে উঠে আসে ২৫ জন ছাত্র মিলে ক্রিকেটের ব্যাট এবং অন্য জিনিস দিয়ে প্রায় ছ’ঘণ্টা ধরে আবরারকে মারধর করেছিল। ঘটনার পরেই পড়ুয়াদের বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার করা হয়।
আরও পড়ুন:
বস্তুত, হাসিনার শাসনকালেই ঢাকার এক আদালত ২০ জন অভিযুক্তের মৃত্যুদণ্ডের নির্দেশ দেয়। ২০২০ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর ঢাকার এক ফাস্ট ট্র্যাক আদালত (দ্রুত বিচার ট্রাইবুনাল) চার্জ গঠন করে। পরে ২০২১ সালের ৮ ডিসেম্বর ২০ জনের ফাঁসি এবং পাঁচ জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয় নিম্ন আদালত। রবিবার নিম্ন আদালতের সাজাই বহাল রাখে বাংলাদেশের হাই কোর্ট। বাংলাদেশের সংবাদপত্র প্রথম আলো অনুসারে, হাই কোর্টের রায়ের পরে মৃত ছাত্রের বাবা বরকত উল্লাহ জানান, আদালতের রায়ে তাঁরা আপাতত সন্তুষ্ট। তবে রায় দ্রুত কার্যকর করার দাবি তুলেছেন তিনি।