ঢাকায় ৩২ নম্বর ধানমন্ডির বাড়ি ভেঙে গুঁড়িয়ে দেওয়া নিয়ে বাংলাদেশে মুহাম্মদ ইউনূসের অন্তর্বর্তী সরকারের অন্দরেই কি ভিন্ন মত তৈরি হচ্ছে? ইউনূস প্রশাসন বলছে, হাসিনার ‘সহিংস আচরণের প্রতিক্রিয়া’-তেই ভাঙচুর হয়েছে। আবার ইউনূস সরকারেরই এক উপদেষ্টা বাংলাদেশবাসীকে ভাঙার বদলে গড়ার উপর জোর দেওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন।
বাংলাদেশের সাধারণ মানুষের উদ্দেশে উপদেষ্টা মাহফুজ আলম প্রশ্ন ছুঁড়ে দিয়েছেন, “গড়ার তাকত আছে আমাদের?” ঘটনাচক্রে তিনি যখন সমাজমাধ্যমে এ নিয়ে প্রশ্ন তোলেন, তখন ঢাকার ৩২ নম্বর ধানমন্ডির বাড়িতে চড়াও হয়েছেন এক দল উন্মত্ত জনতা। মুহাম্মদ ইউনূসের অন্তর্বর্তী সরকারের দফতরহীন উপদেষ্টা মাহফুজ। সমাজমাধ্যমে তিনি বাংলাদেশবাসীকে স্মরণ করিয়ে দেন, “ভাঙার পরে গড়ার সুযোগ এসেছে। কিন্তু অনন্ত ভাঙা প্রকল্প আমাদের জন্য ভাল ভবিষ্যতের ইঙ্গিতবহ না।”
শেখ মুজিবর রহমানের বাসভবন ৩২ নম্বর ধানমন্ডির বাড়ি প্রসঙ্গে সরাসরি কোনও মন্তব্য করেননি ইউনূস সরকারের উপদেষ্টা। তবে সমাজমাধ্যমে ‘অনন্ত ভাঙা প্রকল্প’র সমালোচনা করেছেন তিনি। মাহফুজের মতে, ‘ফ্যাসিবাদে’র বিরুদ্ধে লড়াই মানে শুধু ভাঙা নয়, এটি বিকল্প গড়ারও লড়াই। বাংলাদেশবাসীকে নতুন ব্যবস্থাপনায় ভাঙার চেয়ে গড়াকে বেশি গুরুত্ব দিতে দেখার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি। ইউনূস প্রশাসনের উপদেষ্টা লিখেছেন, “ভাঙার প্রকল্প থেকে সরে এসে দিনকে দিন আমাদের গড়ার প্রকল্প হাতে নেওয়া উচিত।” দেশবাসীকে গড়ার কাজে সক্রিয় ভূমিকা নিতে আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
আরও পড়ুন:
মাহফুজ নিজের সমাজমাধ্যমের পাতায় লিখেছেন, “আমরা আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক আধিপত্যবাদ মোকাবিলা করছি। নিছক কিছু মূর্তি বা দালান নয়। মূর্তি না ভেঙে আমাদের উচিত শত্রুদের শক্তির বিপরীতে পাল্টা চিন্তা, শক্তি ও কর্তৃত্ব গড়ে তোলা।” বুধবার রাত থেকে ধানমন্ডির ঘটনা নিয়ে ইতিমধ্যে সরকারি ভাবে প্রতিক্রিয়া প্রকাশ করেছে ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার। ইউনূস প্রশাসন মনে করছে, হাসিনার ‘সহিংস আচরণের প্রতিক্রিয়া’-তেই ভাঙচুর করা হয়েছে শেখ মুজিবের বাড়িতে। অন্তর্বর্তী সরকারের দাবি, ‘ভারতে বসে’ হাসিনা জুলাইয়ের গণআন্দোলন নিয়ে যে ‘প্ররোচনামূলক’ মন্তব্য করেছেন, তারই প্রভাব পড়েছে মানুষের উপর। ক্ষুব্ধ হয়ে তাঁরা ভাঙচুড় করেছেন বঙ্গবন্ধুর স্মৃতিবিজড়িত বাড়িতে।