Advertisement
E-Paper

হাসিনার ‘সহিংস আচরণের প্রতিক্রিয়া’! মুজিবের বাড়ি ভাঙচুর নিয়ে প্রথম বিবৃতি ইউনূসের বাংলাদেশের

ধানমন্ডির বাড়ি ভাঙচুরের ঘটনার সমালোচনা করলেও প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী হাসিনার দিকেই আঙুল তুলেছে ইউনূস সরকার। তাদের দাবি, হাসিনার ‘প্ররোচনামূলক’ মন্তব্যের কারণেই এই ঘটনা ঘটেছে।

ধানমন্ডির বাড়িতে ভাঙচুর। (ইনসেটে) মুহাম্মদ ইউনূস।

ধানমন্ডির বাড়িতে ভাঙচুর। (ইনসেটে) মুহাম্মদ ইউনূস। গ্রাফিক: আনন্দবাজার অনলাইন।

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক

শেষ আপডেট: ০৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ১৭:১৩
Share
Save

শেখ হাসিনার ‘সহিংস আচরণের প্রতিক্রিয়া’-তেই ভাঙচুর করা হয়েছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ধানমন্ডির বাড়ি। ঘটনার পরের দিন, বৃহস্পতিবার প্রথম বার বিবৃতি দিয়ে এমনটাই দাবি করল মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার। এই ঘটনার সমালোচনা করলেও প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী হাসিনার দিকেই আঙুল তুলেছে তারা। দাবি করেছে, ‘ভারতে বসে’ হাসিনা জুলাইয়ের গণআন্দোলন নিয়ে যে ‘প্ররোচনামূলক’ মন্তব্য করেছেন, তারই প্রভাব পড়েছে মানুষের উপর। ক্ষুব্ধ হয়ে তাঁরা ভাঙচুর করেছেন বঙ্গবন্ধুর স্মৃতিবিজড়িত বাড়িতে।

বৃহস্পতিবার প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে প্রকাশ করা বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘‘গত ছ’মাসে ৩২ নম্বর বাড়িটিতে কোনও ধরনের আক্রমণ, ধ্বংসযজ্ঞ হয়নি। বুধবার রাতে এটি ঘটেছে পলাতক শেখ হাসিনার বক্তব্য ঘিরে, যার দুটো অংশ রয়েছে। একটা অংশ হল, জুলাই গণঅভ্যুত্থানে যাঁরা আত্মদান করেছেন শেখ হাসিনা তাঁদের অপমান করেছেন, অবমাননা করেছেন। শহিদের মৃত্যু সম্পর্কিত অবান্তর, আজগুবি ও বিদ্বেষমূলক কথা বলে পলাতক শেখ হাসিনা জুলাই গণঅভ্যুত্থানকে অবজ্ঞা করেছেন ও অশ্রদ্ধা জানিয়েছেন।’’ (বিবৃতির বয়ান অপরিবর্তিত)

বিবৃতিতে আরও দাবি করা হয়েছে, জুলাইয়ের ‘গণহত্যা’ নিয়ে সাধারণ মানুষের মনে যে ‘ক্ষত’ রয়েছে, তাতে আঘাত করেছেন হাসিনা। তার প্রভাবেই এই ঘটনা হয়েছে। তবে অন্তর্বর্তী সরকার দেশ এবং জনগণকে রক্ষার বিষয়ে সচেতন রয়েছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করছে।

এর পরে ভারতকেও বিবৃতিতে বার্তা দিয়েছে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার। তাদের অনুরোধ, শেখ হাসিনা যাতে এ দেশে বসে বিবৃতি দিতে না পারেন, তা নিশ্চিত করা হোক। বিবৃতিতে লেখা হয়েছে, ‘‘সরকার আশা করে, ভারত যেন তার ভূখণ্ডকে বাংলাদেশে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি করে, এমন কাজে ব্যবহৃত হতে না দেয় এবং শেখ হাসিনাকে বক্তব্য দেওয়ার সুযোগ না দেয়।’’

বুধবার সমাজমাধ্যমে ভাষণ দেন হাসিনা। সে কথা আগেই প্রচার করেছিল তাঁর দল আওয়ামী লীগ এবং ছাত্রলীগ। অভিযোগ, ভাষণ শুরুর আগেই বিক্ষোভকারীদের রোষ গিয়ে পড়ে মুজিবুর রহমানের ধানমন্ডির বাড়ির উপর। ওই বাড়িতে তাণ্ডব চালায় উন্মত্ত ছাত্র-জনতা। তার পর আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। বাংলাদেশি সংবাদমাধ্যম ‘প্রথম আলো’র প্রতিবেদন অনুযায়ী, বুধবার রাত প্রায় ১১টা নাগাদ ধানমন্ডিতে মুজিবের বাড়ির সামনে একটি ক্রেন এবং একটি এক্সক্যাভেটর এনে বাড়ি ভাঙা শুরু হয়। রাত সাড়ে ১২টা নাগাদ ভবনের একটি অংশ ভেঙে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়। পরে শেখ হাসিনার প্রয়াত স্বামীর বাসভবন সুধা সদনে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়।

গত বছরের ৫ অগস্ট বাংলাদেশে হাসিনার সরকারের পতন হয়। সেই সময়েও বিক্ষুব্ধ জনতা ভাঙচুর করেছিল মুজিবের ধানমন্ডির এই বাড়ি। তার পর থেকে বাড়িটি পরিত্যক্ত অবস্থাতেই পড়েছিল। বুধবার হাসিনার সরকারের পতনের ছ’মাসের মাথায় আবার বিক্ষোভকারীরা তাণ্ডব চালালেন সেই বাড়িতে। এই বাড়িতেই পাঁচ দশক আগে গুলিতে ঝাঁঝরা হয়ে গিয়েছিলেন মুজিবুর।

এই প্রসঙ্গে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানান হাসিনা। হাসিনা বলেন, “ধানমন্ডির ৩২ নম্বর বাড়ি থেকে জাতির পিতা (শেখ মুজিব) স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছিলেন। ওই ঘটনার পর পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী তাঁকে গ্রেফতার করে নিয়ে গিয়েছিল। তখনও এই বাড়িটি তারা লুটপাট করেছিল। কিন্তু আগুন দিয়ে পোড়ায়নি, ভাঙেনি।” আওয়ামী লীগের নেত্রীর দাবি, বাংলাদেশের সাধারণ মানুষ এর বিচার করবেন। এই কথাগুলি বলতে গিয়ে গলা বুজে আসে তাঁর। এ বার ধানমন্ডির বাড়ি ভাঙা নিয়ে প্রথম বিবৃতি দিল বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার। তারা আঙুল তুলল হাসিনারই দিকে।

Bangladesh Unrest Shiekh Hasina Bangladesh News

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

{-- Slick slider script --}}