‘নতুন বাংলাদেশ দিবস’ ঘোষণা করেও তা থেকে পিছু হঠল বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার। গত বুধবার একটি বিজ্ঞপ্তিতে অন্তর্বর্তী সরকার ঘোষণা করেছিল, ৮ অগস্টকে ‘নতুন বাংলাদেশ দিবস’ হিসাবে পালন করা হবে। বস্তুত, গত বছরের ৫ অগস্ট বাংলাদেশের শেখ হাসিনার সরকারের পতন হয়। তার তিন দিন পরে ৮ অগস্ট দায়িত্ব গ্রহণ করে মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার। ওই দিনটিকেই ‘নতুন বাংলাদেশ দিবস’ বলে ঘোষণা করেছিল ইউনূসের প্রশাসন। তবে ওই ঘোষণার চার দিন পরেই সিদ্ধান্ত বদল করতে হল অন্তর্বর্তী সরকারকে।
গত বুধবার বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে মোট তিনটি দিন পালনের ঘোষণা করেছিল অন্তর্বর্তী সরকার। জুলাই আন্দোলনের পরে গত বছরের ৫ অগস্ট আওয়ামী লীগের সরকারের পতন হয়েছিল। ওই দিনটিকে জুলাই ‘গণ-অভ্যুত্থান দিবস’ হিসাবে ঘোষণা করেছিল ইউনূস সরকার। অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্বগ্রহণের দিনটিকে ঘোষণা করা হয়েছিল ‘নতুন বাংলাদেশ দিবস’ হিসাবে। এ ছাড়া ১৬ জুলাইকে ‘আবু সাঈদ দিবস’ দিবস হিসাবে ঘোষণা করা হয়েছিল। বস্তুত ওই দিনই পুলিশের রবার বুলেটের আঘাতে মৃত্যু হয়েছিল আন্দোলনের অন্যতম মুখ সাঈদের। বাংলাদেশি সংবাদমাধ্যম ‘প্রথম আলো’ অনুসারে, রবিবার অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদ জানিয়েছে, ৮ অগস্ট কোনও বিশেষ দিন পালিত হবে না বাংলাদেশে। ১৬ জুলাইকে আন্দোলনে নিহতদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে বিশেষ দিবস হিসাবে পালন করা হবে। ৫ অগস্ট পূর্বঘোষিত ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থান দিবস’ হিসাবেই পালিত হবে।
অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্বগ্রহণের দিনটিকে ‘নতুন বাংলাদেশ দিবস’ হিসাবে ঘোষণা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছিল বাংলাদেশের রাজনীতির অন্দরেই। বাংলাদেশে তরুণদের নতুন দল জাতীয় নাগরিক পার্টির তিন প্রথম সারির নেতা সারজিস আলম, হাসনাত আবদুল্লাহ এবং আখতার হোসেন এই দিনটি পালনে আপত্তি জানিয়েছিলেন। হাসনাতের বক্তব্য, ৮ অগস্ট নয়, ৫ অগস্টই ‘নতুন বাংলাদেশে’র জন্ম হয়েছে। সমাজমাধ্যমে তিনি লেখেন, “৫ আগস্টের সাধারণ ছাত্র–জনতার এই অর্জনকে সরকারের কুক্ষিগত করার চেষ্টা মেনে নেওয়া হবে না।” সারজিসও লেখেন, “৮ আগস্ট দ্বিতীয় স্বাধীনতা শুরু হয়নি। দ্বিতীয় স্বাধীনতা নষ্টের, ছাড় দেওয়ার এবং বিপ্লব বেহাতের কর্মযজ্ঞ শুরু হয়েছে। ৫ আগস্ট ‘জুলাই গণ–অভ্যুত্থান দিবস’ এবং ‘দ্বিতীয় স্বাধীনতা দিবস।”
গত কয়েক দিন ধরে বাংলাদেশের নতুন রাজনৈতিক দলের নেতাদের একের পর এক প্রশ্নের মুখে পড়তে হয়েছে অন্তর্বর্তী সরকারকে। এই আবহে অন্তর্বর্তী সরকার জানিয়ে দিল, ৮ অগস্ট কোনও বিশেষ দিন পালন করা হবে না বাংলাদেশে। যদিও কী কারণে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে তা এখনও স্পষ্ট করেনি ইউনূসের সরকার।