Advertisement
E-Paper

আমাদের ক্ষতি হলে ছেড়ে কথা বলব না! ভারত-আমেরিকার বাণিজ্যচুক্তি নিয়ে গুঞ্জন বৃদ্ধি হতেই বিবৃতি প্রকাশ করল চিন

আমেরিকার সঙ্গে বাণিজ্যচুক্তি নিয়ে দর কষাকষি করতে গিয়ে কোনও দেশ যেন চিনের স্বার্থকে বিঘ্নিত না-করে। বিবৃতি প্রকাশ করে এ কথা জানিয়েছে চিন। এমন কিছু ঘটলে চিনও কড়া পদক্ষেপ করবে বলে জানিয়ে রাখল বেজিং।

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ২৯ জুন ২০২৫ ১৫:৩০
(বাঁ দিকে) ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, (মাঝে) আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং চিনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং (ডান দিকে)।

(বাঁ দিকে) ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, (মাঝে) আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং চিনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং (ডান দিকে)। —ফাইল চিত্র।

আমেরিকার সঙ্গে বাণিজ্যচুক্তি সারতে গিয়ে কোনও দেশ যেন চিনের স্বার্থকে বিঘ্নিত না করে! এমনটা হলে চিনও ছেড়ে কথা বলবে না। বিবৃতি প্রকাশ করে এমনটাই জানিয়ে দিল চিনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের প্রশাসন। ভারত-আমেরিকা বাণিজ্যচুক্তি শীঘ্রই চূড়ান্ত হবে কি না, তা নিয়ে গত কয়েক দিনে আলোচনা ক্রমশ বৃদ্ধি পেয়েছে। এই পরিস্থিতিতে চিনের এই বার্তা যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে। যদিও সরাসরি কোনও দেশের নাম উল্লেখ করেনি চিন।

শুল্কসংঘাত কাটিয়ে উঠে সম্প্রতি বেজিংয়ের সঙ্গে বাণিজ্যচুক্তি সেরে ফেলেছে ওয়াশিংটন। আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জানিয়েছেন, চিনের পরেই ভারতের সঙ্গে বাণিজ্যচুক্তি সেরে ফেলতে পারে মার্কিন প্রশাসন। ভারত ছাড়া আরও কিছু দেশের সঙ্গে বাণিজ্যচুক্তি সারতে পারে আমেরিকা। এরই মধ্যে একটি বিবৃতি প্রকাশ করল চিনা বাণিজ্য মন্ত্রক। চিনের সংবাদমাধ্যম ‘সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট’ অনুসারে ওই বিবৃতিতে বলা হয়েছে, আমেরিকার সঙ্গে বাণিজ্যচুক্তি সারতে গিয়ে যেন চিনের স্বার্থের কোনও ক্ষতি না-হয়।

বিবৃতিতে চিনা বাণিজ্য মন্ত্রক বলেছে, “যদি এমন কোনও পরিস্থিতি তৈরি হয়, তা চিন কখনওই মেনে নেবে না। নিজেদের স্বার্থ রক্ষা করার জন্য কড়া পদক্ষেপ করা হবে। এটি চিনের বৈধ অধিকারের মধ্যে পড়ে।” চিনা বাণিজ্য মন্ত্রক এ-ও স্পষ্ট করে দিয়েছে, আমেরিকার সঙ্গে বিভিন্ন দেশের বাণিজ্যিক সমঝোতায় তাদের কোনও আপত্তি নেই। আমেরিকার সঙ্গে বাণিজ্যচুক্তি সেরে ফেলার উদ্যোগকে তারা স্বাগত জানাচ্ছে। তবে একই সঙ্গে বহুপাক্ষিক আন্তর্জাতিক বাণিজ্যবিধি যাতে মেনে চলা হয়, সেটির উপরেও জোর দিয়েছে চিনা প্রশাসন। আমেরিকার সঙ্গে বাণিজ্যচুক্তি চূড়ান্ত করার সময়ে অন্য দেশগুলি যাতে আন্তর্জাতিক বাণিজ্যবিধি মেনে ‘ন্যায্য’ ভাবে চলে, তা স্মরণ করিয়ে দিয়েছে চিন।

বস্তুত, আমেরিকার নতুন শুল্কনীতি আপাতত ৯০ দিনের জন্য স্থগিত রেখেছে ট্রাম্পের প্রশাসন। আগামী ৯ জুলাই ওই ৯০ দিনের মেয়াদ শেষ হচ্ছে। তার আগেই আমেরিকার সঙ্গে বাণিজ্যচুক্তি সম্পূর্ণ করে ফেলতে চাইছে বিভিন্ন দেশ। বাণিজ্যচুক্তি নিয়ে ভারতের সঙ্গেও দফায় দফায় আলোচনা চলছে ভারতের। কিন্তু গাড়ির যন্ত্রাংশ, ইস্পাত এবং কৃষিজাত পণ্যের আমদানি শুল্ক নিয়ে মতবিরোধের কারণে তা নিয়ে চুক্তির রূপরেখা এখনও চূড়ান্ত হয়নি বলে সরকারি সূত্রের খবর। ‘টাফ নেগোশিয়েটর’ মোদীর সঙ্গে দর কষাকষি করা যে ‘কঠিন’ বলেও উল্লেখ করেছিলেন ট্রাম্প।

তবে বর্তমান পরিসংখ্যান বলছে, ভারতের মোট রফতানির প্রায় ১৮ শতাংশ যায় আমেরিকার বাজারে। আমদানির ক্ষেত্রে দেশীয় বাজারের ৬.২২ শতাংশ মার্কিন পণ্য। দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য হয় ১০.৭৩ শতাংশ। বাণিজ্যচুক্তি চূড়ান্ত না হলে ভারতীয় চিংড়ি, কার্পেট, চিকিৎসা সরঞ্জাম এবং সোনার গহনা রফতানিকারকেরা ধাক্কা খেতে পারেন বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। যদিও আমেরিকার সামগ্রিক বাণিজ্য পরিসংখ্যানে তার তেমন প্রভাব পড়বে না। তবে মোটরগাড়ি ও তার যন্ত্রাংশ, সয়াবিন এবং ভুট্টার মতো কৃষিপণ্যে ভারত শুল্ক কমালে তার কিছুটা সুফল পাবে ওয়াশিংটন।আমেরিকার সঙ্গে বাণিজ্যচুক্তি নিয়ে আলোচনার জন্য ইতিমধ্যে ভারতের প্রতিনিধিদল ওয়াশিংটনে রয়েছে। ট্রাম্পের ৯ জুলাইয়ের সময়সীমা শেষ হওয়ার আগে চুক্তি চূড়ান্ত হয় কি না, সে দিকে নজর রয়েছে সকলের। তবে সংবাদ সংস্থা রয়টার্স নয়াদিল্লির সরকারি আধিকারিক সূত্রে জানিয়েছে, আমেরিকার সঙ্গে তাড়াহুড়ো করে কোনও অন্তর্বর্তী চুক্তি সেরে ফেলার পক্ষপাতী নয় ভারত। ওই সূত্রের মতে, ভারত চাইছে ৯ জুলাইয়ের আগে বিষয়টি সেরে ফেলতে। তবে ওই সময়সীমার মধ্যেই চুক্তি চূড়ান্ত করতে হবে, এতটাও মরিয়া নয় নয়াদিল্লি।

India US Trade China USA India US Tariff
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy