E-Paper

সংখ্যালঘু প্রশ্নে দিল্লির দিকেই আঙুল ঢাকার

গত শুক্রবার দিল্লিতে ভারতের বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র রণধীর জায়সওয়াল বলেছিলেন, বাংলাদেশে হিন্দু, খ্রিস্টান, বৌদ্ধ-সহ সংখ্যালঘুদের উপরে উগ্রবাদীদের লাগাতার আক্রমণ ভারতের জন্য গভীর উদ্বেগের বিষয়।

সংবাদ সংস্থা

শেষ আপডেট: ২৯ ডিসেম্বর ২০২৫ ০৯:১৬

— প্রতীকী চিত্র।

বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের উপরে নিপীড়নের বিষয়ে ভারতের বিদেশ মন্ত্রক ফের ‘গভীর উদ্বেগ’ জানানোর দু’দিন পর মুখ খুলল বাংলাদেশ। তাদের বক্তব্য, একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনাকে কেন্দ্র করে ভারত বিভ্রান্তিকর প্রচার চালাচ্ছে। ভারতেই লাগাতার সংখ্যালঘুরা আক্রান্ত হচ্ছেন। বড়দিনের নানা ঘটনার উদাহরণ তুলে ধরেছে ঢাকা।

গত শুক্রবার দিল্লিতে ভারতের বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র রণধীর জায়সওয়াল বলেছিলেন, বাংলাদেশে হিন্দু, খ্রিস্টান, বৌদ্ধ-সহ সংখ্যালঘুদের উপরে উগ্রবাদীদের লাগাতার আক্রমণ ভারতের জন্য গভীর উদ্বেগের বিষয়। তিনি ময়মনসিংহে দীপু দাসের নৃশংস হত্যাকাণ্ডের তীব্র নিন্দা করেন এবং অপরাধীদের বিচারের আওতায় আনা হবে বলে প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন। প্রসঙ্গত, দীপু দাসের হত্যার বিরুদ্ধে সরব হয়েছে আমেরিকার বিদেশ মন্ত্রকও। পাশাপাশি, এই ঘটনায় নিন্দা জানিয়েছেন আমেরিকান কংগ্রেসের সদস্য রো খন্না। ধর্মীয় বিদ্বেষ, হত্যা, অগ্নিসংযোগ, ধর্মীয় কাঠামো ভাঙচুর এবং সম্পত্তি লুটের মতো ঘটনারও তীব্র নিন্দা করেন তিনি। তার আগে বাংলাদেশের পরিস্থিতি নিয়ে কথা বলতে গিয়ে আমেরিকার বিদেশ মন্ত্রকের এক মুখপাত্র বলেন, “আমেরিকা ধর্মীয় হিংসার বিরুদ্ধে। বাংলাদেশে সব সম্প্রদায়ের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য সে দেশের অন্তর্বর্তিকালীন সরকার যে পদক্ষেপ করছে, তাকে স্বাগত জানাই।”

রবিবার পাল্টা মুখ খুললেন বাংলাদেশের বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র এস এম মাহবুবুল আলম। বাংলাদেশে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের পরিস্থিতি সম্পর্কে ভারতের সাম্প্রতিক মন্তব্যকে ‘উদ্দেশ্যপ্রণোদিত’ বলে আখ্যা দিয়ে এর সঙ্গে বাস্তব পরিস্থিতির মিল নেই বলে দাবি করেন তিনি। পক্ষপাতদুষ্ট দৃষ্টিভঙ্গির মাধ্যমে বাছাই করা ঘটনাগুলিকে অতিরঞ্জিত ও বিকৃত ভাবে উপস্থাপন করে ভারতীয় জনগণকে বাংলাদেশ, ভারতের বাংলাদেশি কূটনৈতিক মিশন এবং অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে উস্কে দেওয়ার অপচেষ্টা চলছে বলে অভিযোগ তোলা হয়। একই সঙ্গে ভারতের বিভিন্ন মহলকে সংখ্যালঘু বিষয়ে বিভ্রান্তিকর বর্ণনা ছড়ানো থেকে বিরত থাকারও আহ্বানজানান মাহবুবুল।

শুধু এ-ই নয়। ভারতে সংখ্যালঘুদের অবস্থা নিয়ে বরং পাল্টা উদ্বেগ প্রকাশ করেছে বাংলাদেশে। মুখপাত্র বলেন, ‘‘ভারতে মুসলিম, খ্রিস্টান-সহ বিভিন্ন সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে সংঘটিত নৃশংস হত্যাকাণ্ড, গণপিটুনি, নির্বিচারে আটক ও ধর্মীয় অনুষ্ঠানে বাধার ঘটনায় আমরা গভীর ভাবে উদ্বিগ্ন। এ মাসে ভারতের ওডিশায় মুসলিম যুবক জুয়েল রানাকে হত্যার ঘটনা ঘটেছে। বিহারে মোহাম্মদ আজহার হোসেনের নৃশংস হত্যাকাণ্ড, কেরালায় বাংলাদেশি সন্দেহে এক নিরীহ ব্যক্তির হত্যাকাণ্ড এবং বিভিন্ন স্থানে মুসলিম ও খ্রিস্টানদের ওপর গণপিটুনি ও হিংসার ঘটনা ঘটেছে।’’

ভারতে বড়দিন উদ্‌যাপনের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে হিন্দুত্ববাদীদের হানাদারির প্রসঙ্গও টেনে মাহবুবুল বলেন, ‘‘গত সপ্তাহে বড়দিন উদ্‌যাপন উপলক্ষে ভারত জুড়ে সংঘটিত গণহিংসার বিষয়েও বাংলাদেশ গভীর ভাবে উদ্বিগ্ন। প্রতিটি দেশেরই দায়িত্ব তার সংখ্যালঘু সম্প্রদায়কে সুরক্ষা ও মর্যাদা দেওয়া।’’ বস্তুত ভারতের বিরোধী শিবিরের একাংশের বক্তব্যও কতকটা এ রকমই। কংগ্রেস নেতা রশিদ আলভির মতে যেমন, ‘‘বাংলাদেশে যা ঘটছে তার অবশ্যই নিন্দা করা উচিত। তার জন্য বাংলাদেশ সরকার দায়ী। কিন্তু ভারত সরকারের বক্তব্যে কোনও কাজ হবে না। কারণ ভারতেও সংখ্যালঘুদের নিশানাকরা হচ্ছে।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

India-Bangladesh Bangladesh Unrest Bangladesh Situation

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy