E-Paper

সন্ত্রাস রোধের ডাক হাসিনার, বিএনপি অসহযোগের পথে

সিলেটে জনসভা করে বুধবার আওয়ামী লীগের নির্বাচনী প্রচার শুরু করেন দলনেত্রী শেখ হাসিনা। সিলেট আলিয়া মাদ্রাসার মাঠে এই জনসভা ডাকা হলেও গোটা শহর এ দিন অবরুদ্ধ হয়ে গিয়েছিল আওয়ামী কর্মী-সমর্থকদের ভিড়ে।

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ২১ ডিসেম্বর ২০২৩ ০৭:৪০
An Image Of Bangladesh PM Sheikh Hasina

শেখ হাসিনা। —ফাইল চিত্র।

নির্বাচন বানচালের লক্ষ্যে হরতাল-অবরোধের কর্মসূচি নেওয়া দলগুলিকে বার্তা দিলেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা— “দুইটা আগুন দিলেই সরকার পড়ে যাবে, অত সহজ না। অগ্নিসন্ত্রাস করে বিএনপি-জামাত নির্বাচন ঠেকাতে পারবে না।”

অন্য বারের মতো সিলেটে জনসভা করে বুধবার আওয়ামী লীগের নির্বাচনী প্রচার শুরু করেন দলনেত্রী শেখ হাসিনা। সিলেট আলিয়া মাদ্রাসার মাঠে এই জনসভা ডাকা হলেও গোটা শহর এ দিন অবরুদ্ধ হয়ে গিয়েছিল আওয়ামী কর্মী-সমর্থকদের ভিড়ে। সেখানেই হাসিনা বলেন, “আমরা যেমন উন্নয়নের কাজ করেছি, ওদের কাজ হচ্ছে আগুন দিয়ে মানুষ পোড়ানো। আজকে সমস্ত জায়গায় বোমাবাজি, খুন আর অগ্নিসন্ত্রাস। এর বিরুদ্ধে সকলকে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে।” মঙ্গলবার বিএনপির ডাকা হরতালের মধ্যে নেত্রকোণা থেকে ঢাকায় ঢোকার মুখে মোহনগঞ্জ এক্সপ্রেসে নাশকতার আগুনে এক মা ও তাঁর শিশুপুত্র-সহ ৪ জন প্রাণ হারান। সেই প্রসঙ্গ উত্থাপন করে হাসিনা বলেন, “কোনো দল চাইলে নির্বাচনে না আসতে পারে, কিন্তু আগুন দিয়ে মানুষ মারার অধিকার কাউকে দেওয়া হয়নি। আগুন নিয়ে খেলতে গেলে হাত পোড়ে এটা তাদের মনে রাখা উচিত।” বোন শেখ রেহানাকে পাশে নিয়ে এই জনসভায় হাজির হয়েছিলেন হাসিনা।

পাশাপাশি, দেড় মাস ধরে অবস্থান, অবরোধ ও হরতাল পালনের পরে বুধবার ‘সর্বাত্মক অসহযোগ আন্দোলন’-এর ডাক দিয়েছে বিএনপি। ৭ জানুয়ারির ভোট বয়কট করে তারা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ইস্তফা ও তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠন করে নির্বাচন করার দাবিতে রাস্তায় নেমেছে। সমমনা দল তকমা নিয়ে জামাতে ইসলামি এবং বেশ কিছু ছোট দলও বিএনপি-র সহযোগী হয়েছে। নাশকতায় যুক্ত থাকার অভিযোগে বিএনপি-র প্রায় সব নেতাকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ভোট বন্ধ বা বানচাল করার লক্ষ্যে যে কোনও রাজনৈতিক কর্মসূচিকে অবৈধ বলে ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন। তবে নিজেদের কর্মসূচি থেকে সরেনি বিএনপি, জামাত এবং সহযোগী দলগুলি। মঙ্গলবার ট্রেনে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনাকে ‘রহস্যময়’ বলে তার পিছনে ‘অন্য খেলা’র অভিযোগ করেছেন বিএনপি নেতৃত্ব। বুধবার বিএনপি-র সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভি ‘গোপন জায়গা’ থেকে ভার্চুয়াল ব্রিফিং-এ অসহযোগ আন্দোলনের ডাক দিয়ে ভোটারদের ভোটকেন্দ্রে না যেতে যেমন আহ্বান জানিয়েছেন, সরকারি কর্মীদেরও ভোটের কাজ বয়কট করার ডাক দিয়েছেন। একই সঙ্গে নাগরিকদের কর-খাজনা, বিদ্যুৎ-গ্যাসের বিল জমা না দিতে পরামর্শ দিয়েছেন।

তবে বিএনপি-র হরতাল-অবরোধ কর্মসূচিতে বেশ কিছু নাশকতার ঘটনা ঘটলেও মানুষের সাড়া তেমন মেলেনি। দেশজুড়ে যনবাহন চলেছে, স্কুল-কলেজ, অফিস-আদালতে স্বাভাবিক কাজকর্ম হয়েছে। তাই বিএনপি নেতৃত্বের অসহযোগের ডাক কতটা প্রভাব ফেলবে, অনেকেই তা নিয়ে সন্দিহান। তবে নাশকতার ঘটনা বাড়বে বলে মনে করছে বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থাগুলি। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক সূত্রের খবর, নির্বাচন এগিয়ে আসায় এ বার জামাতে ইসলামির প্রশিক্ষিত ক্যাডারেরাও এই কাজে নামবে।
এ জন্য বাংলাদেশ জুড়েই নিরাপত্তা কঠোর করা হচ্ছে। ভোটের দিন কয়েক আগে থেকে দেশের সর্বত্র সেনা মোতায়েনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে নির্বাচন কমিশন। তবে সেনাদের হাতে তদন্ত ও বিচার (ম্যাজিস্ট্রেসি)-এর ক্ষমতা দেওয়া হবে না বলে কমিশন সূত্রে জানানো হয়েছে।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Bangladesh sheikh hasina

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy