Advertisement
E-Paper

পুরুষের বড্ড অভাব এ দেশে! বাধ্য হয়ে ‘অস্থায়ী স্বামী’ ভাড়া করছেন মহিলারা, কী কাজ করতে হচ্ছে তাঁদের?

চাহিদা যেখানে যোগান তো থাকবেই। ইতিমধ্যে বেশ কয়েকটি ই-কমার্স সংস্থা পুরুষদের নিয়োগ করেছে। মোটা অঙ্কের অর্থ নিচ্ছেন সেই কর্মীরা।

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৭ ডিসেম্বর ২০২৫ ২১:২৭
Gender Imbalance

পুরুষদের ঘণ্টার হিসাবে ভাড়া করছেন একাকিত্বে ভোগা মহিলারা। —প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

লিঙ্গ বৈষম্য এ দেশে উল্লেখ্যযোগ্য হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে পুরুষ কম, মহিলা বেশি। অনুপাত এতটাই দৃশ্যমান যে বিবাহযোগ্য মহিলারা খুঁজেও পাত্র পাচ্ছেন না। এই পরিস্থিতিতে স্বামী ভাড়া করছেন অনেকে।

‘দ্য নিউ ইয়র্ক পোস্ট’-এর একটি প্রতিবেদন অনুযায়ী, ইউরোপের অন্যান্য দেশের চেয়ে লাটভিয়ার মহিলা এবং পুরুষের অনুপাত সাঙ্ঘাতিক হারে বদলে গিয়েছে। সে দেশে পুরুষদের তুলনায় এখন ১৫.৫ শতাংশ বেশি মহিলা রয়েছেন। যা ইউরোপীয় দেশগুলির গড় ব্যবধানের প্রায় তিন গুণ। এই পরিস্থিতিতে সময় কাটানো থেকে গৃহস্থালির কাজে সাহায্যের জন্য ‘অস্থায়ী স্বামী’ চাইছেন মহিলারা। কোনও কোনও ক্ষেত্রে এক জন পুরুষ ১০-১২ জনের কাছ থেকে বিয়ের প্রস্তাব পাচ্ছেন। তবে সেটা সীমিত সময়ের জন্য।

‘দ্য পোস্ট’-এর একটি প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, লাটভিয়ায় শুধু যুবক-যুবতীর অনুপাতেই যে বিশাল ব্যবধান তৈরি হয়েছে এমন নয়, বয়স্কদের ক্ষেত্রেও তারতম্য যথেষ্ট। যেমন ৬৫ বা তার বেশি বয়সিদের ধরলে লাটভিয়ায় পুরুষের তুলনায় মহিলা রয়েছেন তিন গুণ বেশি। কর্মক্ষেত্র থেকে শিক্ষাক্ষেত্র, সর্বত্রই মহিলারা সেখানে সংখ্যাগুরু। আর মহিলারা জানাচ্ছেন, কর্মক্ষেত্র এবং দৈনন্দিন জীবনে পুরুষের অভাব স্পষ্ট। একই কথা জানিয়েছেন সে দেশে বেসরকারি ক্ষেত্রে বড় পদে চাকরিরত এক যুবক। তাঁর কথায়, ‘‘আমার প্রায় সকল সহকর্মীই মহিলা।’’ তাঁর সংযোজন, ‘‘ওঁদের সঙ্গে কাজ করার অভিজ্ঞতা খুব ভাল। সহকর্মী হিসাবে বেশি নম্বর দেব মহিলাদের। কিন্তু দেশের লিঙ্গ ভারসাম্যও চিন্তার।’’ ওই অফিসেরই এক মহিলাকর্মীকে উদ্ধৃত করে ‘দ্য পোস্ট’ লিখেছে, ‘‘আমার অনেক সহকর্মী রয়েছেন, যাঁরা পুরুষবন্ধুর জন্যই বিদেশ ভ্রমণে যাচ্ছেন।’’

এখানেই সমস্যার শেষ নয়, এখন পুরুষ সঙ্গীর অনুপস্থিতিতে বহু লাটভিয়ান মহিলা এমন পরিষেবার দিকে ঝুঁকছেন, যেখানে পুরুষকর্মীদের ভাড়া দেওয়া হয়। তাঁরা বলছেন, বাড়ির এমন অনেক কাজ থাকে যা এত দিন মহিলারা করেননি বা করতে হয়নি। যেমন ছুতোর মিস্ত্রি, বাড়ি রং করার লোক, জিনিসপত্র মেরামতের কর্মী।

চাহিদা যেখানে যোগান তো থাকবেই। ইতিমধ্যে বেশ কয়েকটি ই-কমার্স সংস্থা পুরুষদের নিয়োগ করেছে। মোটা অঙ্কের অর্থ নিচ্ছেন তাঁরা। কাজ বাড়ি বাড়ি ঘুরে কাঠের কাজ করা, জিনিসপত্র মেরামত করা থেকে বৈদ্যুতিন সরঞ্জাম ইনস্টলেশনে সহায়তা করা। এর মধ্যে আরও একটি পরিষেবা তুমুল জনপ্রিয়তা পেয়েছে লাটভিয়ায়। সেটা হল অনলাইনে অথবা দূরভাষের মাধ্যমে ‘এক ঘণ্টার জন্য স্বামী ভাড়া’! ওই সংস্থা বরাত অনুযায়ী পুরুষদের পাঠাচ্ছেন। তাঁরা গিয়ে বাড়ি রং করা থেকে শোয়ার ঘরের পর্দা ঠিক করা, পোষ্যকে দেখভাল সমস্তটাই ‘বাড়ির কর্তার মতো’ করে দিচ্ছেন।

এ বার প্রশ্ন হল কেন এই লিঙ্গ অসাম্য? কী ভাবে তৈরি হল? লাটাভিয়ার বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকেরা বলছেন, সামাজিক কারণ তো রয়েছেই। তবে বড় কারণ হল পুরুষদের দৈনন্দিন অভ্যাস। গবেষণায় দেখা গিয়েছে, লাটাভিয়ায় পুরুষদের আয়ুষ্কাল কম। সে জন্য দায়ী করা হয়েছে ধূমপানের উচ্চ হার এবং জীবন-যাপনে শৃঙ্খলার অভাবকে। একটি সমীক্ষা অনুযায়ী, লাটভিয়ার ৩১ শতাংশ পুরুষ প্রচণ্ড ধূমপায়ী। সেখানে মাত্র ১০ শতাংশ মহিলা ধূমপান করেন। তা ছাড়াও ওই পুরুষদের ওজন অতিরিক্ত হয়। জীবনযাত্রায় শৃঙ্খলা না থাকায় বেশির ভাগই স্থূলকায়। তাই অসুখ-বিসুখও বেশি।

স্বামীদের ভাড়া দেওয়ার প্রবণতা কেবল লাটভিয়াতেই সীমাবদ্ধ নেই। ইউরোপের অন্যান্য দেশেও ‘রেন্ট মাই হ্যান্ডি হাজব্যান্ড’ পরিষেবা চালু হয়েছে। এঁরা গৃহস্থালীর কাজের জন্য ঘণ্টা বা দিনের ভিত্তিতে অর্থ নেন।

Men Women Ratio Gender
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy