বাংলাদেশে রবিবার ভোর থেকে ৪৮ ঘণ্টার হরতালের ডাক দিল শক্তির দিক দিয়ে প্রধান বিরোধী দল বিএনপি। এত দিন তারা দফায় দফায় অবরোধ কর্মসূচি চালাচ্ছিল। বৃহস্পতিবার দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভি গোপন স্থান থেকে ভার্চুয়াল সাংবাদিক বৈঠক করে জানিয়েছেন, নির্বাচন কমিশনের ঘোষিত নির্বাচনী নির্ঘণ্ট বাতিল, শেখ হাসিনার ‘অবৈধ সরকারের’ ইস্তফা এবং ‘অন্তর্বর্তী নিরপেক্ষ সরকারের’ হাতে ক্ষমতা তুলে দেওয়ার দাবিতে রবিবার সকাল ৬টা থেকে তাঁরা হরতালের ডাকছেন। মঙ্গলবার সকাল ৬টা পর্যন্ত ৪৮ ঘণ্টা তা চলবে।
যদিও বাংলাদেশে হরতালের অস্ত্র বহু ব্যবহারে ধার হারিয়েছে, জনজীবনে তার প্রভাব তেমন পড়ে না বললেই চলে, তার পরেও বিএনপির এই হরতালের ডাকে আমজনতা কিছুটা শঙ্কিত। ফের কিছু অশান্তি ও নাশকতা হতে পারে বলে মনে করছেন তাঁরা। বিএনপির ‘সমমনস্ক’ কয়েকটি দলের মঞ্চ ‘বাম ও গণতান্ত্রিক জোট’-এর ডাকা অর্ধদিবস হরতালের মধ্যে এ দিন ঢাকা শহরের জনজীবন কার্যত থমকে ছিল— তবে তার কারণ ছিল প্রবল যানজট। দোকান-পাট, অফিস-আদালত, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ছিল খোলা। দূরপাল্লার সব বাস, ট্রেন ও স্টিমার ছেড়েছে। তার মধ্যেই বুধবার গভীর রাতে টাঙ্গাইল স্টেশনে দাঁড়িয়ে থাকা একটি খালি ট্রেনের ৩টি বগি রহস্যময় আগুনে পুড়ে যায়। সম্প্রতি বিএনপির অবরোধ কর্মসূচির মধ্যে রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকা বেশ কয়েকটি বাসে আগুন দেওয়া হয়। টাঙ্গাইলে ট্রেনে অগ্নিকাণ্ড তেমনই নাশকতার ঘটনা বলে মনে করছে পুলিশ।
নির্বাচনের নির্ঘণ্ট প্রকাশের পরে বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে শাসক দল আওয়ামী লীগের দফতরে বৃহস্পতিবার নেতা-কর্মীদের ভিড় উপচে পড়ে। দফতরের সামনে শামিয়ানা টাঙিয়ে দুপুরে খিচুড়ি বিলি করা হয় দূরান্ত থেকে আসা কর্মীদের মধ্যে। শনিবার থেকে মঙ্গলবার পর্যন্ত মনোনয়ন ফর্ম বিক্রি করার কথা এ দিন ঘোষণা করেছেন দলের নেতৃত্ব। সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বৃহস্পতিবার বলেন, “সংবিধানের বিধি-বিধান পালনের প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি। নির্বাচন সংক্রান্ত সব বিষয়ে সহযোগিতা করার জন্য আমরা অঙ্গীকারবদ্ধ।” বিএনপির আন্দোলন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “নির্বাচন বন্ধ করা যাবে না। তার চেয়ে তারাও নির্বাচনে অংশ নিক। আমরা স্বাগত জানাব।”
নির্বাচনী নির্ঘণ্ট প্রকাশের পরে ঢাকায় আমেরিকার রাষ্ট্রদূত পিটার হাস দেশে গিয়েছেন না অন্য কোথাও, তা নিয়ে এ দিন ঢাকায় জল্পনা ছিল জোরদার। বাংলাদেশের বিদেশ মন্ত্রক জানিয়েছে, হাস রুটিন মেনে সরকারকে জানিয়ে বিদেশে গিয়েছেন। তবে কোথায়, সে প্রশ্নের জবাব আমেরিকার দূতাবাস দেবে।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)