ফাইল চিত্র।
টিকার ভাণ্ডারে টান পড়েছে ব্রিটেনে। অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজ়েনেকা জুটির তৈরি প্রতিষেধক চ্যাডক্স১-এর একটি বড় অংশ সরবরাহ করছে ভারতীয় টিকাপ্রস্তুতকারী সংস্থা সিরাম ইনস্টিটিউট। ব্রিটেন জানিয়েছে, ভারতীয় সংস্থাটি প্রত্যাশা মতো প্রতিষেধক সরবরাহ করতে না-পারায় এই পরিস্থিতি। বাধ্য হয়ে টিকাকরণের গতি কমানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে ব্রিটেন সরকার। এ-ও শোনা যাচ্ছে, এপ্রিলে ভারত সফরে গিয়ে এ বিষয়ে পুণের সিরাম ইনস্টিটিউটের সঙ্গে আলোচনায় বসতে পারেন খোদ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন।
প্রশাসনের বক্তব্য, প্রতিষেধকে টান পড়ার অন্যতম কারণ, আগামী মাসের মধ্যে চ্যাডক্স১-এর ১ কোটি ডোজ় সরবরাহ করার কথা ছিল সিরাম ইনস্টিটিউটের। কিন্তু তারা জানিয়েছে, আপাতত ৫০ লক্ষের বেশি তারা জোগান দিতে পারবে না। ব্রিটেনের জাতীয় স্বাস্থ্য পরিষেবা (এনএইচএস) ইতিমধ্যেই চিঠি দিয়ে বিভিন্ন স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠান, হাসপাতালগুলিকে জানিয়েছে, টিকাকরণের গতি কমাতে হবে। সাধারণ মানুষকে জানানো হয়েছে, ৫০-এর কমবয়সিদের এখনই টিকা দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না।
অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজ়েনেকার সঙ্গে বছরে ২০০ কোটি ডোজ় ভ্যাকসিন তৈরির চুক্তি করেছে সিরাম ইনস্টিটিউট। যাতে উন্নত দেশগুলির পাশাপাশি গরিব, উন্নয়নশীল দেশগুলোতেও প্রতিষেধকের জোগান দিতে পারে তারা। কিন্তু ভারতে সিরামের প্রতিষেধকের চাহিদা বাড়ায় তারা প্রত্যাশামতো টিকার জোগান দিতে পারছে না বলে জানিয়েছে পুণের সংস্থাটি। সিরাম ইনস্টিটিউটের পক্ষ থেকে এক কর্তা বলেছেন: ‘‘৫০ লক্ষ ডোজ় কয়েক সপ্তাহ আগে ব্রিটেনে পাঠানো হয়েছে। পরে আরও ডোজ় পাঠানোর চেষ্টা করব। কিন্তু বর্তমানে যা পরিস্থিতি, তাতে ভারত সরকারের টিকাকরণ প্রকল্পে আমাদের তৈরি প্রতিষেধকের প্রয়োজন রয়েছে।’’
টিকাকরণের গতি কমার খবরে হতাশ ব্রিটেনবাসী। ইউরোপে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত ব্রিটেন। ৪২ লক্ষ ৭৪ হাজার করোনা-আক্রান্ত। ১ লক্ষ ২৫ হাজার মৃত্যু। ব্রিটেন স্ট্রেনের দাপটে সংক্রমণ এখনও নিয়ন্ত্রণের বাইরে। এর মধ্যে ভরসা জাগাচ্ছিল টিকাকরণ। তাতেও বাধার মুখে পড়ে চিন্তায় প্রশাসন। ব্রিটেনের স্বাস্থ্য মন্ত্রক জানিয়েছে, আপাতত তাদের লক্ষ্য জুলাই মাসের মধ্যে সমস্ত প্রাপ্তবয়স্ককে টিকার প্রথম ডোজ়টি দিয়ে দেওয়া। তবে এপ্রিলে সিরাম ইনস্টিটিউটের সঙ্গে বরিস জনসনের বৈঠকে কোনও সুরাহা মিলবে বলে আশায় রয়েছে ব্রিটেন।
ব্রিটেনের কিন্তু নিজস্ব টিকাপ্রস্তুতকারী কারখানা রয়েছে। সেখানে সপ্তাহে ১০ থেকে ২০ লক্ষ ডোজ় অ্যাস্ট্রাজ়েনেকার টিকা তৈরি করা হচ্ছে। এখনও পর্যন্ত এ দেশে ২ কোটি ৫০ লক্ষ বাসিন্দাকে টিকার একটি ডোজ় দেওয়া হয়েছে। ১৭ লক্ষ বাসিন্দাকে দু’টি ডোজ়ই দেওয়া হয়ে গিয়েছে। এই পরিসংখ্যানেও ব্রিটেন হতাশা প্রকাশ করায় বাকি ইউরোপের দাবি, নিজেদেরটুকুই শুধু
ভাবছেন বরিস জনসন। ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)-এর অন্যতম অভিযোগ, টিকার বেশির ভাগ ডোজ় চলে যাচ্ছে ব্রিটেনে। বাকি ইউরোপ কিছুই পাচ্ছে না। সম্প্রতি, টিকাকরণের জন্য প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম ব্রিটেনে ঢুকতে না-দেওয়ার হুমকিও দিয়েছিল ইইউ। তা নিয়ে তীব্র সমালোচনার মুখে পড়ে তারা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy