Advertisement
১১ ডিসেম্বর ২০২৩
NASA

মঙ্গল অভিযানে শ্রীরামপুরের যুবক

শ্রীরামপুরের বাসিন্দা, মধ্যবিত্ত ঘরের বাঙালি যুবক শৌনক দাস বেশ কয়েক বছর ধরে গুগ্‌ল ম্যাপের লোকাল গাইড হিসেবে কাজ করছেন। বছরখানেক আগে নাসা জানায়, যাঁরা মঙ্গলে যেতে চান, তাঁদের নাম নথিভুক্ত করাতে হবে।

নাসার পাঠানো বোর্ডিং কার্ড নিয়ে শৌনক। নিজস্ব চিত্র

নাসার পাঠানো বোর্ডিং কার্ড নিয়ে শৌনক। নিজস্ব চিত্র

সুনন্দ ঘোষ
শেষ আপডেট: ৩১ জুলাই ২০২০ ০৩:৪৫
Share: Save:

কবি বলেন, নামে কী আসে-যায়! অনেক কিছুই যে আসে-যায়, উপলব্ধি করতে পারছেন শৌনক। বুঝতে পারছেন, আসে-যায় অনেক কিছু, যদি সেই নাম যায় মঙ্গলের মতো ভিন্‌ গ্রহ অভিযানে। বেশ উত্তেজিত শোনাল তাঁর গলা। বৃহস্পতিবার মঙ্গলে পাড়ি দিলেন তিনি। সশরীরে নয়। নামে।

শ্রীরামপুরের বাসিন্দা, মধ্যবিত্ত ঘরের বাঙালি যুবক শৌনক দাস বেশ কয়েক বছর ধরে গুগ্‌ল ম্যাপের লোকাল গাইড হিসেবে কাজ করছেন। বছরখানেক আগে নাসা জানায়, যাঁরা মঙ্গলে যেতে চান, তাঁদের নাম নথিভুক্ত করাতে হবে। শ্রীরামপুরে বসে শৌনক জানান, তিনি যেতে চান। তাঁর নাম, ঠিকানা, ই-মেল যাচাই করে নাসা জানিয়ে দেয়, মঙ্গলযাত্রার তারিখ ২০২০ সালের ৩০ জুলাই।

নাম পাঠানোর পরে রীতিমতো বোর্ডিং কার্ড এসেছে শৌনকের কাছে। নাসা তাঁকে মেল করে জানিয়েছে, একটি মাইক্রো চিপে থাকবে তাঁর নাম ও ঠিকানা। বৃহস্পতিবার রওনা হয়ে ওই মঙ্গলযান ২০২১ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি মঙ্গলের মাটি ছোঁবে। সেই মাইক্রো চিপ রেখে আসা হবে মঙ্গলে। ইতিহাস হয়ে যাবে শৌনকের নাম।

একা শৌনকের নয়। এমন এক কোটি ন’লক্ষ ৩২ হাজার ২৯৫ জনের নাম থাকবে মোট তিনটি মাইক্রো চিপে। বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে উৎসাহীরা নাসার কাছে নিজেদের নাম নথিভুক্ত করিয়েছেন। তাঁদের মধ্যে আরও ভারতীয়, এমনকি শৌনকের মতো আরও বঙ্গসন্তানের থাকার সম্ভাবনা আছে। কারা তাঁরা? প্রশ্ন করায় নাসা থেকে শৌনকদের জানানো হয়, আর কারা যাচ্ছেন, তা গোপন রাখা হচ্ছে। কোনও যাত্রীকেই সহযাত্রীর নাম জানানো সম্ভব নয়।

নামে নামে মঙ্গল সফরের পাশাপাশি ওই গ্রহে সত্যি সত্যি মানুষ পাঠানোর কাজও ইতিমধ্যে শুরু করে দিয়েছে নাসা। প্রথম দফায় তার জন্য ছয় মহিলা-সহ মোট ১৩ জনকে বেছে নেওয়া হয়েছে। তাঁদের মধ্যে অবশ্য কোনও বঙ্গসন্তান নেই। ওই ১৩ জনকে এর মাঝখানে চাঁদের কক্ষপথে ঘুরিয়ে আনা হবে। ২০৩০ সালে তাঁদের মঙ্গলের মাটিতে পা দেওয়ার কথা। তার আগে, ২০২৬ সালে মঙ্গল অভিযানে ফের নথিভুক্ত করা হবে সাধারণ মানুষের নাম।

আরও পড়ুন: গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডে নাম তুলে ফেলল একটি জিরাফ, কেন জানেন?

সশরীরে সফর না-হোক, নাম তো যাচ্ছে। কেমন লাগছে? “আমি ছাপোষা বাঙালি। পৃথিবীর মাটি থেকে উঠে যে-মহাকাশযান মঙ্গলে পাড়ি দিল, সেখানে কোথাও আমার নাম থাকছে— ভাবতেই রোমাঞ্চ হচ্ছে। মনে হচ্ছে, আমিও যেন এই অভিযানে শামিল হয়ে গিয়েছি! এর আগে মঙ্গল অভিযান করে ব্যর্থ হয়েছে বহু দেশ। ভারতও। নাসার এই অভিযান যাতে সফল হয়, তার জন্য প্রার্থনা করব আমি,” বললেন শ্রীরামপুরের যুবক।

শুধু শৌনক নয়, শৌনকের মতো মঙ্গলযাত্রায় নাম লেখানো এক কোটি ন’লক্ষ ৩২ হাজার ২৯৫ জনের প্রার্থনাও নাসার কাছে খুব গুরুত্বপূর্ণ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on: Save:
Advertisement

Share this article

CLOSE