Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪
India

BRICS: ‘যৌথ স্বার্থ’ নিয়ে চিন আশাবাদী, প্রশ্ন অনেক

ব্রিকস যথেষ্ট শক্তিশালী একটি গোষ্ঠী। বিশ্বের গড় অভ্যন্তরীণ উৎপাদনের ২৫ শতাংশেরও বেশি এই গোষ্ঠীভুক্ত রাষ্ট্রগুলির সম্মিলিত জিডিপি।

ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৪ জুন ২০২২ ০৬:৫২
Share: Save:

এক দিকে, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ। অন্য দিকে, দু’বছর ধরে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখায় ভারত-চিনের সংঘাতপূর্ণ পরিস্থিতি। এই ভূকৌশলগত টানাপড়েনের পরিপ্রেক্ষিতে আজ থেকে ভিডিয়ো মাধ্যমে শুরু হল ব্রিকস গোষ্ঠীভুক্ত দেশগুলির (ভারত, রাশিয়া, চিন, ব্রাজিল, দক্ষিণ আফ্রিকা) শীর্ষ পর্যায়ের সম্মেলন। তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে, সম্মেলন শুরু হওয়ার ঠিক আগেই বেজিংয়ে চিনের বিদেশমন্ত্রী ওয়াং ই বৈঠক করলেন মার্চে সে দেশে নিযুক্ত ভারতীয় রাষ্ট্রদূত প্রদীপ কুমার রাওয়তের সঙ্গে। এর পরে চিনা বিদেশ মন্ত্রকের বিবৃতি, ‘ভারত এবং চিনের যৌথ স্বার্থ তাদের নিজেদের মধ্যে মতবিরোধের তুলনায় অনেকটাই বেশি। একটি দেশের অন্যকে সহায়তা করা উচিত, খাটো না করে। সহযোগিতা বাড়ানো উচিত, একে অন্যের বিরুদ্ধে বিষোদ্গার না করে। পারস্পরিক আস্থা বাড়ানো উচিত, একে অন্যের প্রতি সন্দিহান না হয়ে।’

কূটনৈতিক শিবির বলছে, চিনা বিদেশমন্ত্রী এ কথা বললেও বাস্তব পরিস্থিতি এতটাই সুগম হবে না। প্রশ্ন, বর্তমানে যে অচলাবস্থা তৈরি হয়েছে, তার কোনও হাতে কলমে সমাধান ব্রিকস-এর কাছ থেকে পাওয়া কি সম্ভব? বর্তমান পরিপ্রেক্ষিতে এই গোষ্ঠীর সদস্যদের এক এক জনের ভূকৌশলগত লক্ষ্য এবং স্বার্থ এক এক রকম। তাদের একজোট করে ব্রিকস-এর মূল লক্ষ্য অর্জন কতটা সম্ভব?

ব্রিকস যথেষ্ট শক্তিশালী একটি গোষ্ঠী। বিশ্বের গড় অভ্যন্তরীণ উৎপাদনের ২৫ শতাংশেরও বেশি এই গোষ্ঠীভুক্ত রাষ্ট্রগুলির সম্মিলিত জিডিপি। কিন্তু চলতি পরিস্থিতিতে যৌথ ভাবে কাজের জন্য প্রয়োজন নতুন কূটনৈতিক ভাষ্য। রাশিয়ার বিরুদ্ধে আনা পশ্চিমের অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞার জন্য ভুক্তভোগী এই গোষ্ঠীর একাধিক দেশ। এখনও পর্যন্ত আমেরিকা তথা পশ্চিম বিশ্ব ব্রিকস-এর সঙ্গে অর্থনৈতিক যুদ্ধ শুরু করেনি বটে, ভবিষ্যতে কি হবে তা অনিশ্চিত।

কূটনৈতিক মহলের মতে, ভারত-চিন সীমান্ত পরিস্থিতি দু’দেশের মধ্যে যে আস্থার অভাব তৈরি করেছে, তার প্রভাব বাণিজ্যিক সহযোগিতার ক্ষেত্রে পড়তে বাধ্য। চিনের মতো ভারত রাষ্ট্রপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী সদস্য নয়, কিন্তু পশ্চিমের সঙ্গে যুদ্ধং দেহি অবস্থানেও নেই তারা। আবার এটাও ঠিক যে, ভারত পশ্চিমের ধামা ধরেও বসে নেই। সে ক্ষেত্রে ব্রিকস-কে নতুন করে উদ্ভাবন করার সুযোগ নয়াদিল্লির রয়েছে। ‘ব্রিকস নিউ ডেভেলপমেন্ট ব্যাঙ্ক’ (এনডিবি)-কে আরও প্রভাবশালী করে পশ্চিমের দিকে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দেওয়ার এটাই ঠিক সময় বলে মনে করছে কূটনৈতিক মহল। তবে এর জন্য প্রয়োজন ব্রিকস কাঠামোকে ঢেলে সাজানো, যাতে উন্নয়নশীল দেশগুলির কাছে ব্রিকস একটি দিশা দেখাতে পারে। সর্বোপরি দেশগুলির একে অপরের উপর পূর্ণ রাজনৈতিক আস্থা ফিরিয়ে আনা। যার যথেষ্ট অভাব রয়েছে বলেই মনে করছেন কূটনৈতিক বিশেষজ্ঞরা।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তেফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ

অন্য বিষয়গুলি:

India China BRICS
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE