Advertisement
E-Paper

ভুল মেনে বিশ্বযুদ্ধে অশ্বেতাঙ্গ শহিদদের সম্মান ব্রিটেনের

এশিয়া, আফ্রিকা, পশ্চিম এশিয়ার কালো, বাদামি চামড়ার সেই সব সেনা-জওয়ানেরা যে মৃত্যুর পরেও জাতি বৈষম্যের শিকার তা আজ মেনে নিয়েছে ‘কমনওয়েলথ ওয়ার গ্রেভ কমিশন’।

শ্রাবণী বসু

শেষ আপডেট: ২৩ এপ্রিল ২০২১ ০৬:৫৯
ছবি: রয়টার্স।

ছবি: রয়টার্স।

দেরি হল। তবু ভুল মেনে নিয়ে অবশেষে ক্ষমা চাইল ব্রিটেন।

ক্ষমা চাইল এই বলেই যে, প্রথম বিশ্বযুদ্ধে যে হাজার হাজার অশ্বেতাঙ্গ সেনা-জওয়ানের মৃত্যু হয়েছিল, তাঁদের কথা কেউ মনে রাখেনি। তাঁদের মৃত্যুতে ন্যূনতম সম্মানটুকু জানায়নি কেউ। তাঁদের নামে কোনও স্মৃতিফলক নেই, পরিচয়পত্র নেই, নেই কোনও সমাধি। ব্রিটিশ সরকারের হিসেবের খাতায় তাঁরা শুধু সংখ্যামাত্র। তাঁরা অন্তত ১ লক্ষ ১৬ হাজার নাম-গোত্রহীন অ-শ্বেতাঙ্গ সেনা। সংখ্যাটা সাড়ে তিন লক্ষও হতে পারে। ৫০ হাজার ভারতীয় সেনা রয়েছে সেই তালিকায়। এশিয়া, আফ্রিকা, পশ্চিম এশিয়ার কালো, বাদামি চামড়ার সেই সব সেনা-জওয়ানেরা যে মৃত্যুর পরেও জাতি বৈষম্যের শিকার তা আজ মেনে নিয়েছে ‘কমনওয়েলথ ওয়ার গ্রেভ কমিশন’।

প্রথম বিশ্বযুদ্ধে ইউরোপীয় দেশগুলির পাশাপাশি ভারত, ইরাক, প্যালেস্তাইন, মিশর, কেনিয়া, তাঞ্জানিয়ার কয়েক লক্ষ সেনা শহিদ হয়েছিল। শ্বেতাঙ্গ জওয়ানেরা মৃত্যুর পরে যথাযোগ্য সম্মান পেয়েছেন। তাঁদের প্রত্যেকের জন্য নির্দিষ্ট নামফলক ও পরিচয় নথিভুক্ত রয়েছে। কিন্তু বাদামি আর কালো চামড়ার মানুষেরা সেই স্বীকৃতিটুকুও পাননি।

আজ হাউজ় অব কমন্সে এই প্রসঙ্গে ‘গভীর দুঃখপ্রকাশ’ করেছেন ব্রিটেনের প্রতিরক্ষামন্ত্রী বেন ওয়ালেস। তিনি বলেন, ‘‘এ ক্ষেত্রে যে বৈষম্যমূলক মনোভাব কাজ করেছে, তা নিয়ে কোনও সন্দেহ নেই।’’ যেমন কমিশনের রিপোর্টে জানা গিয়েছে, ভারতীয় সেনার দায়িত্বে থাকা জনৈক জেনারেল কক্স মনে করতেন, ভারতের হিন্দু ও মুসলিম শহিদদের নাম রেকর্ডে রাখার প্রয়োজন নেই। প্রত্যেকের জন্য পৃথক স্মৃতিফলক বা সমাধির প্রয়োজনও নেই। ওয়ালেসের মতে, সেই সময়ের বহু সেনা আধিকারিক এমন সাম্রাজ্যবাদী, ধর্মীয় ও জাতিগত বিভেদমূলক মতাদর্শে বিশ্বাসী ছিলেন। যাঁরা মৃতদের ক্ষেত্রেও এই ধরনের বৈষম্যমূলক আচরণ করতেন। সেই ভুল মেনে নিয়ে ওয়ালেস বলেন, ‘‘আমরা অতীতকে বদলাতে পারি না। তবে ভুল স্বীকার করে সেই অনুযায়ী পদক্ষেপ করতে পারি।’’

দুই বিশ্বযুদ্ধে উপেক্ষিতদের উপযুক্ত সম্মান জানানোর দায়িত্বে রয়েছে এই ওয়ার কমিশন। তবে প্রশ্ন উঠেছে, প্রায় এক দশক আগে প্রসঙ্গটি কমিশনের সামনে এলেও ক্ষমা চাইতে এত দেরি হল কেন? অভিযোগ মেনে নিয়ে কমিশনের ডিরেক্টর-জেনারেল ক্লেয়ার হর্টন আজ বলেছেন, ‘‘বিষয়টি এত দিন গভীর ভাবে দেখা হয়নি। উপযুক্ত গুরুত্ব দিয়ে দেখা হয়নি।’’

Britain World War
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy