নিরাপত্তা সংক্রান্ত মামলায় হেরে যাওয়ার পর আবেগতাড়িত রাজকুমার হ্যারি ব্রিটেনের রাজপরিবারের সঙ্গে ‘পুনর্মিলন’ চেয়েছিলেন। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম ‘বিবিসি’-কে দেওয়া একটি সাক্ষাৎকারে রাজকুমার জানান, তিনি আর নিরাপত্তা নিয়ে আইনি লড়াই লড়তে চান না। বরং রাজপরিবারের সঙ্গে ‘পুনর্মিলন’ চান। ফিরতে চান ব্রিটেনে। হ্যারির ওই মন্তব্যের পরে রাজপরিবারের তরফে কী বলা হয়, তা জানতে কৌতূহলী ছিলেন সকলেই। অবশেষে এই প্রসঙ্গে মুখ খুলল বাকিংহাম প্যালেস।
ব্রিটেনের রাজপরিবারের তরফে একটি বিবৃতি দিয়ে হ্যারির নিরাপত্তা সংক্রান্ত মামলা নিয়ে লেখা হয়েছে, “আদালত সব বিষয় বার বার খতিয়ে দেখেছে। কিন্তু প্রতি বারই একই সিদ্ধান্তে পৌঁছোনো হয়েছে।” যে বিষয় আদালত খতিয়ে দেখেছে এবং ব্রিটেনের সরকারি দফতর মেনে নিয়েছে, সেই বিষয়ে ব্রিটেনের রাজার হস্তক্ষেপ করা উচিত নয় বলে জানানো হয়েছে ওই বিবৃতিতে।
উল্লেখ্য, ২০২০ সালে ব্রিটেনের রাজপরিবার ছেড়ে চলে যান হ্যারি। আমেরিকায় থাকতে শুরু করেন। বর্তমানে তাঁর ঠিকানা ক্যালিফর্নিয়ার মনটেসিটো শহর। ব্রিটেন ছাড়ার সময়েই তাঁর নিরাপত্তায় কিছু কাটছাঁট করা হয়েছিল। ব্রিটেনের রাজপরিবারের সদস্যেরা যে নিরাপত্তা পান, হ্যারি রাজপরিবার ছাড়ার পর তাতে কিছু পরিবর্তন করা হয়। সেই পরিবর্তনের সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করে হ্যারি আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন। লন্ডনের রয়্যাল কোর্টস অফ জাস্টিসে সেই মামলার শুনানি হয়। গত মাসে হ্যারির আর্জি খারিজ হয়ে যাওয়ার পর মামলাটি আবার উঠেছিল। কিন্তু শুক্রবারও একই রায় শুনিয়েছে আদালত। তাতেই হতাশ এবং ‘বিধ্বস্ত’ রাজকুমার।
আরও পড়ুন:
রয়্যাল কোর্টস অফ জাস্টিসের বিচারক স্যর জিওফ্রে ভস হ্যারির বিপক্ষে রায় দিয়ে জানান, হ্যারির ক্ষোভ আইনি বিষয়ে নতুন কোনও মাত্রা যোগ করবে না। হ্যারি ব্রিটেন ছাড়ায় যে হেতু সামগ্রিক পরিস্থিতির বদল হয়েছে, তার জন্য নিরাপত্তা সংক্রান্ত আদালতের পুরনো সিদ্ধান্ত বহাল রাখেন বিচারক। আদালতের রায়কে স্বাগত জানিয়েছে ব্রিটেনের সরকার। তাদের বক্তব্য, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে ব্রিটেনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা যে ঢেলে সাজানো হয়, আদালতের রায়ে তার প্রমাণই মিলেছে।
বিবিসিকে হ্যারি বলেন, ‘‘এই মুহূর্তে আমি স্ত্রী এবং সন্তানকে ব্রিটেনে ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়ার মতো পরিস্থিতি দেখতে পাচ্ছি না। আমার সঙ্গে আমার পরিবারের কারও কারও অনেক মতপার্থক্য রয়েছে। কিন্তু আমি ক্ষমা করে দিয়েছি। পরিবারের সঙ্গে পুনর্মিলন চাই। আর ঝগড়াঝাঁটি চালিয়ে কোনও লাভ নেই। জীবন খুব দামি।’’