Advertisement
E-Paper

অতিরিক্ত সময় কাজে ক্লান্ত চিন, তবু প্রশ্ন তোলা যাবে না! ‘হতাশা উস্কে’ শাস্তির মুখে দুই ব্লগার

চিনের সাইবার নিরাপত্তা সংক্রান্ত প্রশাসন সম্পতি দু’মাসের একটি অভিযান শুরু করেছে। এই অভিযানের অঙ্গ হিসাবেই হতাশা তৈরি করতে পারে, এমন পোস্ট এবং অ্যাকাউন্টগুলি হয় মুছে ফেলা হচ্ছে, নয়তো বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে।

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ১৩ অক্টোবর ২০২৫ ১৬:৪৪
China cracks down on the haters who allegedly spread pessimism

—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

চিনের কঠোর অনুশাসন এবং লৌহকঠিন শৃঙ্খলার কথা গোটা বিশ্বেই সুবিদিত। সরকারি প্রচারমাধ্যমের ফাঁক গলে সে দেশের অল্প কিছু খবরই প্রকাশ্যে আসে, অধিকাংশই রয়ে যায় অন্তরালে। সম্প্রতি মার্কিন সংবাদমাধ্যম ‘নিউ ইয়র্ক টাইম্‌স’-এর একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কর্মস্থলে কাজের সময় এবং চাপ কমানোর পক্ষে সওয়াল করে শাস্তির মুখে পড়েছেন সে দেশের দুই ব্লগার। চিনের প্রশাসন মনে করছে, সমাজমাধ্যমে ওই দু’জনের পোস্ট দেশবাসীর মনে হতাশা এবং নৈরাশ্য তৈরি করছে। নেতিবাচক পোস্ট দেখে পাছে দেশের তরুণ প্রজন্ম কর্মবিমুখ হয়ে ওঠে, তাই সমাজমাধ্যমের বাছাই করা অ্যাকাউন্টগুলিকে বন্ধ করে দিতে চাইছে বেজিং।

চিনের সাইবার নিরাপত্তা সংক্রান্ত প্রশাসন সম্পতি দু’মাসের একটি অভিযান শুরু করেছে। এই অভিযানের অঙ্গ হিসাবেই হতাশা তৈরি করতে পারে, এমন পোস্ট এবং অ্যাকাউন্টগুলি হয় মুছে ফেলা হচ্ছে, নয়তো বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে। যে দুই ব্লগার শাস্তির মুখে পড়েছেন, তাঁদের এক জন চিনের কর্মসংস্কৃতি নিয়ে প্রশ্ন তুলে বিদ্রুপাত্মক ভঙ্গিতে বলেছিলেন সন্তান নেওয়া দূরস্থান, বিয়ে করাই উচিত নয়। অপর জন বলেছিলেন, জীবনধারণের মানের নিরিখে পশ্চিমি দেশগুলির তুলনায় চিন এখনও পিছিয়ে রয়েছে। তাঁদের এই মন্তব্যকে ভাল চোখে দেখেনি প্রশাসন। তাঁদের শাস্তি পেতে হয়েছে। কী শাস্তি, তা অবশ্য স্পষ্ট নয়।

চিনের সরকারি প্রচারমাধ্যম সিসিটিভি সম্প্রতি একটি সম্পাদকীয় নিবন্ধে জানিয়েছে, জীবনে হতাশা আসতেই পারে। কিন্তু দর্শকদের দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য তা ব্যবহার করা উচিত নয়। ইন্টারনেটে নেতিবাচকতা ছড়ানো উচিত নয় বলেও সওয়াল করা হয়েছে ওই নিবন্ধে। সে দেশের প্রশাসন মনে করছে, সমাজমাধ্যমে ঘুরতে থাকা নেতিবাচক পোস্টগুলি আসলে কঠোর পরিশ্রমকে অবজ্ঞা করার বার্তা দিচ্ছে।

চিনের একদলীয় শাসনব্যবস্থায় বিরুদ্ধমত প্রকাশের জায়গা বিশেষ নেই। চিনের কমিউনিস্ট পার্টি, সরকারের কোনও নীতি নিয়ে মুখ খোলার পর মন্ত্রী-আমলা নিরুদ্দেশ হয়ে গিয়েছেন বা পদচ্যুত হয়েছেন, আকছার এমন ঘটনার কথা শোনা গিয়েছে। তবে এ বারের লৌহশৃঙ্খল ঠিক রাজনৈতিক কোনও কারণে নয়।

নিউ ইয়র্ক টাইম্‌স-এর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিগত কয়েক বছর ধরেই সাফল্যের ‘ইঁদুর দৌড়’ থেকে বেরোতে চাইছেন সে দেশের ছাত্র-যুবদের একটি বড় অংশ। তাঁদের বক্তব্য, কাজের চাপ কমুক। তার জন্য যদি উচ্চাকাঙ্ক্ষা বা বিলাসিতাকে বিসর্জন দিতে হয়, তাতেও তাঁরা রাজি। কিন্তু দেশের যুবসমাজ যদি হঠাৎই কর্মবিমুখ হয়ে ওঠে, কাজের চাপ কমানোর দাবি সংক্রামক হয়ে ওঠে, তবে উৎপাদনশীলতা মার খাবে বলে আশঙ্কা করছেন সে দেশের শাসকবর্গ। বিশ্বের সেরা অর্থনীতির দেশ হওয়ার লড়াইয়ে আমেরিকার সঙ্গে টক্কর দিতে এই ঢিলেমি চাইছে না বেজিং। তাই হতাশাকে শাস্তি দিয়ে গোটা দেশকে কর্মচঞ্চল করার চেষ্টা করছে চিন। শি জিনপিংদের বার্তা একটিই, হতাশা ছড়াবেন না!

Cyber Case Social Medial
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy