Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪

নিউক্লিয়ার সাবমেরিনে ভারতের চেয়ে অনেক পিছিয়ে পড়েছে চিন!

সাবমেরিন বহরের আধুনিকীকরণে পিছিয়ে পড়ছে চিন? আমেরিকার প্রতিরক্ষা গবেষকরা সে রকমই বলছেন। যে কোনও আধুনিক নৌবাহিনীর জন্য পারমাণবিক ডুবোজাহাজ বা নিউক্লিয়ার সাবমেরিন অপরিহার্য। চিন নিউক্লিয়ার সাবমেরিন বানিয়েছে।

ভারতের নিউক্লিয়ার সাবমেরিন আইএনএস অরিহন্ত— প্রতিপক্ষের সমীহের কারণ।

ভারতের নিউক্লিয়ার সাবমেরিন আইএনএস অরিহন্ত— প্রতিপক্ষের সমীহের কারণ।

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ০১ জানুয়ারি ২০১৬ ১৩:২৪
Share: Save:

সাবমেরিন বহরের আধুনিকীকরণে পিছিয়ে পড়ছে চিন? আমেরিকার প্রতিরক্ষা গবেষকরা সে রকমই বলছেন। যে কোনও আধুনিক নৌবাহিনীর জন্য পারমাণবিক ডুবোজাহাজ বা নিউক্লিয়ার সাবমেরিন অপরিহার্য। চিন নিউক্লিয়ার সাবমেরিন বানিয়েছে। কিন্তু তা একেবারেই আধুনিক নয়। এই ধরনের সাবমেরিনের প্রধান গুণ নিঃশব্দে হানা দেওয়ার ক্ষমতা। চিনের নিউক্লিয়ার সাবমেরিনগুলির নাকি সে ক্ষমতা একেবারেই নেই! ভারতের নিউক্লিয়ার সাবমেরিন আইএনএস অরিহন্ত কিন্তু সে ব্যাপারে খুবই পারদর্শী।

নিউক্লিয়ার সাবমেরিনকে বলা হয় ‘স্টিল্থ ফাইটার’। অর্থাৎ ‘নীরব ঘাতক’। ভারী ক্ষেপণাস্ত্র হানার এবং পরমাণু হামলা চালানোর ক্ষমতা থাকে এই নিউক্লিয়ার সাবমেরিনের। কিন্তু এমন প্রযুক্তি ব্যবহার করে এই সাবমেরিন তৈরি হয় যে প্রতিপক্ষকে সে তার অবস্থান বুঝতে দেয় না। সমুদ্রের গভীরে ডুবে যাতায়াতের সময় এই সাবমেরিন থেকে কোনও আওয়াজ বাইরে বেরোয় না। রেডারকে ফাঁকি দিয়ে শত্রুশিবিরের খুব কাছাকাছি গোপনে পৌঁছে যেতে পারে নিউক্লিয়ার সাবমেরিনগুলি।

চিনের তৈরি নিউক্লিয়ার সাবমেরিনগুলি যথেষ্ট শব্দ করে যাতায়াত করে। ফলে অনেক সময় রেডার ছাড়াও এই সব চিনা সাবমেরিনের উপস্থিতি টের পাওয়া সম্ভব। তাই মার্কিন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, চিনা নিউক্লিয়ার সাবমেরিনকে কিছুতেই ‘স্টিল্থ ফাইটার’ বলা যাবে না। চিনের তৈরি জিন ক্লাস নিউক্লিয়ার সাবমেরিন খুব আধুনিক। কিন্তু, মার্কিন নেভাল ইনটেলিজেন্স রিপোর্ট বলছে, ওই চিনা সাবমেরিন ১৯৭০ সালে রাশিয়ায় তৈরি পুরনো প্রযুক্তির সাবমেরিনের চেয়েও অনেক বেশি আওয়াজ করে। চিন টাইপ-৯৫ নামে নতুন এক ধরনের নিউক্লিয়ার সাবমেরিন তৈরি করছে। কিন্তু তার আওয়াজও রাশিয়ার আকুলা ক্লাস সাবমেরিনের চেয়ে অনেকটা বেশিই হবে।

আরও পড়ুন:

ভারতীয় বায়ুসেনার দু’টি স্কোয়াড্রনই চুরমার করতে পারে পাক এয়ারফোর্সকে!

ভারতের তৈরি নিউক্লিয়ার সাবমেরিন আইএনএস অরিহন্ত কেমন? বিশেষজ্ঞরা বলছেন, রাশিয়ার আকুলা ক্লাসের চেয়েও অনেক আধুনিক মানের নিউক্লিয়ার সাবমেরিন হল ভারতের অরিহন্ত। ভারতের হাতে থাকা আইএনএস চক্র নামের নিউক্লিয়ার সাবমেরিনটি আসলে আকুলা ক্লাসেরই। সেটি রাশিয়ার কাছ থেকে লিজ নিয়েছে ভারত। আইএনএস অরিহন্ত ভারতীয় নৌসেনার অন্তর্ভুক্ত হওয়ার পর দেখা গিয়েছে ক্ষিপ্রতা, নীরবে হানা দেওয়ার দক্ষতা, বিধ্বংসী আক্রমণের ক্ষমতা— সব দিক থেকেই ভারতের অরিহন্ত রুশ আকুলার চেয়ে অনেক এগিয়ে। অরিহন্তের চেয়ে উন্নত আইএনএস অরিদমনের কাজও শেষের পথে। অরিহন্ত বা অরিদমনের সঙ্গে এঁটে ওঠা অনেক দূরের কথা, চিনের তৈরি নিউক্লিয়ার সাবমেরিনগুলি এখনও আকুলার সঙ্গেই পাল্লা দিতে সক্ষম নয়।

সামরিক প্রযুক্তিতে গত কয়েক দশকে চিন ব্যাপক উন্নতি করেছে। মহাশক্তিধর দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠাও পেয়েছে আন্তর্জাতিক মহলে। কিন্তু নিউক্লিয়ার সাবমেরিন তৈরিতে এত পিছনে কেন? সেন্টার ফর আ নিউ আমেরিকান সিকিওরিটি’র ডিফেন্স স্ট্র্যাটেজিস অ্যান্ড অ্যাসেসমেন্ট প্রোগ্রামের ডিরেক্টর তথা মার্কিন নৌবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত ক্যাপটেন জেরি হেনড্রিক্সের কথায়, চিনের নৌ-প্রযুক্তি বিভিন্ন ক্ষেত্রে উন্নতি করলেও সাবমেরিনের ব্যাপারে তারা খুব একটা উন্নতি করতে পারেনি। ফলে নিজেদের প্রযুক্তিতে সাবমেরিন তৈরির চেষ্টা করে তাকে সর্বাধুনিক স্তরে নিয়ে যেতে চিন ব্যর্থ হচ্ছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE