দেশের জনসংখ্যা বৃদ্ধি করতে নতুন কৌশল নিচ্ছে চিনের শি জিনপিং সরকার। যে সমস্ত পরিবারে সন্তানের জন্ম হবে, তাদের হাতে হাতে নগদ টাকা দেওয়ার পরিকল্পনা করা হচ্ছে। শীঘ্রই সন্তান জন্মে ভর্তুকি ঘোষণা করতে পারেন জিনপিং। বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতিকে রক্ষা করতেই এই পদক্ষেপ।
দীর্ঘ দিন ধরেই জনসংখ্যা হ্রাসের সমস্যায় ভুগছে চিন। সূত্রের খবর, চিনে কর্মক্ষম মানুষের সংখ্যা অনেক কমে এসেছে। দম্পতিরা সন্তানপালনে আগ্রহ হারিয়েছেন। মনোযোগী হয়েছেন সঞ্চয়ে। একটা সময়ে জনসংখ্যাই চিনের অন্যতম বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছিল। জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ করতে সরকারকে হিমশিম খেতে হচ্ছিল। ২০১৬ সাল পর্যন্ত চিনে চালু ছিল এক সন্তান নীতি। অর্থাৎ, একটির বেশি সন্তান গ্রহণ করতে পারতেন না দম্পতিরা। তবে ২০১৬ সালে সেই নিয়ম তুলে নেয় বেজিং। বরং দম্পতিদের আরও বেশি সংখ্যক সন্তানগ্রহণে উৎসাহ দেওয়া হতে থাকে। তবে তার পর থেকে জন্ম আরও কমেছে। পরিসংখ্যান বলছে, ২০১৬ সালে চিনে ১ কোটি ৮৮ লক্ষ মানুষের জন্ম হয়েছিল। ২০২৪ সালে তা কমে হয়েছে প্রায় অর্ধেক, ৯৫ লক্ষ।
আরও পড়ুন:
জন্ম কমে আসায় চিনের অর্থনীতি ধুঁকছে। যে বয়সে মানুষ সবচেয়ে বেশি কর্মক্ষম থাকে, সেই বয়সের মানুষের সংখ্যা কমে এসেছে। বেড়েছে বৃদ্ধের সংখ্যা। এতে অর্থনীতিতে লাভ হচ্ছে না। মিলছে না শ্রমিক, বাড়ছে না উৎপাদন। সূত্রের খবর, চিন সরকার পরিস্থিতি বদলাতে সন্তানপ্রতি ভর্তুকি দেওয়ার পরিকল্পনা করেছে। দম্পতিদের প্রতি সন্তানের জন্য বছরে ৩৬০০ ইউয়ান (ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় ৪৫ হাজার টাকা) দেওয়া হতে পারে। চলতি বছরের ১ জানুয়ারি বা তার পর থেকে যাদের জন্ম, তাদের পরিবার এই টাকা পাবে। তিন বছর পর্যন্ত এই টাকা দেওয়া হবে। যদিও এখনও আনুষ্ঠানিক ভাবে এ বিষয়ে কোনও ঘোষণা করেননি জিনপিং।
২০২৩ সালে বিশ্বের সবচেয়ে জনবহুল দেশের তকমা হারায় চিন। তাদের টপকে জনবহুলের তালিকায় শীর্ষে পৌঁছে যায় ভারত। রাষ্ট্রপুঞ্জের একটি রিপোর্টে দাবি, এ ভাবে চলতে থাকলে ২০৫০ সালের মধ্যে চিনের জনসংখ্যা নেমে আসবে মাত্র ১৩০ কোটিতে। ২১০০ সালের মধ্যে তা কমে হতে পারে ৮০ কোটি।