Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪
G20 summit

যুদ্ধ থামানোর দায় অন্যদেরও, বার্তা চিনকে

ইউক্রেন পরিস্থতি নিয়ে নয়াদিল্লি চরম উদ্বিগ্ন। সাইপ্রাসের পরে অস্ট্রিয়া সফরে এসে বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর এই বিষয়ে সরব হয়েছেন।

আন্তর্জাতিক এই বেহাল পরিস্থিতিতে জি ২০-র প্রেসিডেন্টের দায়িত্বপালন ‘অত্যন্ত বড় একটি বিষয়’ সে কথাও মনে করিয়ে দিতে চেয়েছেন বিদেশমন্ত্রী।

আন্তর্জাতিক এই বেহাল পরিস্থিতিতে জি ২০-র প্রেসিডেন্টের দায়িত্বপালন ‘অত্যন্ত বড় একটি বিষয়’ সে কথাও মনে করিয়ে দিতে চেয়েছেন বিদেশমন্ত্রী। ফাইল ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৩ জানুয়ারি ২০২৩ ০৭:২৮
Share: Save:

নতুন বছরে রাশিয়ার আগ্রাসন থামানোর জন্য নয়াদিল্লিকে আরও সক্রিয় ভূমিকায় দেখতে চাইছে আমেরিকা তথা পশ্চিমি দুনিয়া। জি ২০-র সভাপতি হওয়ার সুবাদে এই বছর ভারতকে নিয়মিত ভাবে গোষ্ঠীভুক্ত বিভিন্ন দেশের সঙ্গে কূটনৈতিক কর্মসূচিতে যুক্ত হতে হচ্ছে। শীর্ষ বৈঠক সেপ্টেম্বরে। সেখানে তো বটেই, এই বছরে সময় যত গড়াবে, মস্কোর উপরে নিজেদের প্রভাব খাটিয়ে হিংসা বন্ধের সূত্র সন্ধানে চাপ বাড়বে নয়াদিল্লির উপরে।

এই পরিস্থিতিতে ভারত আন্তর্জাতিক মহলে প্রচার শুরু করেছে যে, শান্তি ফেরানোর জন্য সচেষ্ট নরেন্দ্র মোদী সরকার। ইউক্রেন পরিস্থতি নিয়ে নয়াদিল্লি চরম উদ্বিগ্ন। সাইপ্রাসের পরে অস্ট্রিয়া সফরে এসে বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর এই বিষয়ে সরব হয়েছেন। ভিয়েনায় বসবাসকারী ভারতীয়দের সঙ্গে আলোচনায় তিনি ইউক্রেন নিয়ে ‘গভীর উদ্বেগ’ প্রকাশ করেছেন। তাঁর কথায়, “ইউক্রেন সংঘর্ষ অত্যন্ত গভীর উদ্বেগের বিষয়। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী সেপ্টেম্বর মাসে জানিয়েছিলেন যে, আমরা সত্যিই বিশ্বাস করি আর যুদ্ধের সময় নেই। মতবিরোধ এবং মতপার্থক্যের মীমাংসা হিংসা দিয়ে হয় না।” এখানেই না-থেমে বিদেশমন্ত্রীর মন্তব্য, “গোড়া থেকেই আমরা চেষ্টা করছি রশিয়া ও ইউক্রেনকে সংলাপ এবং কূটনীতির রাস্তায় আনতে। কিন্তু এটাও খুব জরুরি যে-সব রাষ্ট্র আলোচনার মাধ্যমে সমাধানে বিশ্বাসী তারা স্পষ্টভাষায় কথা বলুক। আমরা শান্তির পক্ষে এবং বিশ্বের বেশির ভাগ রাষ্ট্রই তাই।”

কূটনৈতিক শিবিরের মতে, জয়শঙ্কর ভিয়েনা থেকে এই বার্তাই দিতে চেয়েছেন যে, শান্তি ফেরানোর দায় কেবল ভারতের একার নয়। এ রকম অনেক রাষ্ট্রই রয়েছে যাদের সঙ্গে মস্কোর সুসম্পর্ক। যেমন চিন। এই রাষ্ট্রগুলিকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলটা পশ্চিমের দিকে ঠেলে দিতে চেয়েছেন। ভারতের জাতীয় নিরাপত্তার প্রসঙ্গ তুলে জয়শঙ্কর বলেছেন, “চিনের সঙ্গে আমাদের সীমান্তে যে চ্যালেঞ্জ তৈরি হয়েছে, তাকে কেন্দ্র করেই আমাদের জাতীয় সুরক্ষা আবর্তিত হচ্ছে। পাশাপাশি পাকিস্তানের সঙ্গে আন্তঃসীমান্ত সন্ত্রাসের বিষয়টি তো রয়েছেই।” ঘটনা হল গত সপ্তাহে কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী একাধিক বার বলেছেন, চিন এবং পাকিস্তান একসঙ্গে ভারতের উপর হামলার কৌশল নিয়েছে। অবিলম্বে এই জোড়া চ্যালেঞ্জের মোকাবিলা করতে সেনাবাহিনীর সঙ্গে নেতৃত্বকে বসার অনুরোধ করেছেন তিনি।

আন্তর্জাতিক এই বেহাল পরিস্থিতিতে জি ২০-র প্রেসিডেন্টের দায়িত্বপালন ‘অত্যন্ত বড় একটি বিষয়’ সে কথাও মনে করিয়ে দিতে চেয়েছেন বিদেশমন্ত্রী। জি-২০ নিয়ে মোদী সরকারের প্রচারের সমালোচনা করে কংগ্রেসের অনেক নেতা বলেছিলেন, বিষয়টি তো রুটিনমাফিক। কংগ্রেস জমানাতেও ন্যাম বা কমনওয়েলথ-এর নেতৃত্ব দিয়েছে ভারত। কিন্তু তা নিয়ে দেশ জুড়ে এত প্রচার অভিযান তো করা হয়নি! বিরোধী দলের এই শ্লেষের জবাব দিয়ে নাম না-করে বিদেশমন্ত্রী বলেছেন, “আমি অনেক সময়ই এই কথাটা শুনতে পাই যে জি ২০-র প্রেসিডেন্ট পদটি তো রুটিনমাফিক এসেছে। এ আর বড় কথা কী? এই কথা কাঁরা বলেন, আপনারা বুঝতেই পারছেন! কিন্তু আমার যেটা বলার তা হল, এটা অবশ্যই বড় কথা। আমাদের কূটনীতির ইতিহাসে এমন নজির নেই যে, বিশ্বের শীর্ষ স্থানীয় ২০টি দেশ যারা বিশ্ব বাণিজ্য নিয়ন্ত্রণ করে, তাদের নেতারা ভারতে এসেছেন।” তাঁর মতে বিশ্ব অর্থনীতির বেহাল পরিস্থিতি, কোণঠাসা আন্তর্জাতিক বণ্টন ব্যবস্থা, রাজনৈতিক মেরুকরণের মধ্যে জি-২০ সংগঠনের দায়িত্ব নিয়েছে ভারত।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

G20 summit India China Clash Russia Ukraine War
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE