Advertisement
E-Paper

চিনা মধ্যস্থতায় তালিবানের সঙ্গে দূরত্ব কমাচ্ছে পাকিস্তান! রাষ্ট্রদূতও পাঠাচ্ছে কাবুলে, নেপথ্যে কি ভারত-কৌশল?

২০২১ সালে তালিবান আফগানিস্তানের দখল নেওয়ার পর সে অর্থে কাবুলের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিল না ইসলামাবাদের। বরং গত কয়েক মাসে আফগানিস্তানের সঙ্গে পাকিস্তানের সম্পর্ক কার্যত তলানিতে নেমে আসে।

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ৩১ মে ২০২৫ ১৪:৫০
(বাঁ দিক থেকে) পাকিস্তানের বিদেশমন্ত্রী ইশাক দার, চিনের বিদেশমন্ত্রী ওয়াং ই এবং তালিবান সরকারের ভারপ্রাপ্ত বিদেশমন্ত্রী আমির খান মুত্তাকি।

(বাঁ দিক থেকে) পাকিস্তানের বিদেশমন্ত্রী ইশাক দার, চিনের বিদেশমন্ত্রী ওয়াং ই এবং তালিবান সরকারের ভারপ্রাপ্ত বিদেশমন্ত্রী আমির খান মুত্তাকি। —ফাইল চিত্র।

আফগানিস্তানের তালিবান সরকারের সঙ্গে দূরত্ব কমানোর উদ্যোগ পাকিস্তানের। শুক্রবার পাকিস্তানের বিদেশমন্ত্রী ইশাক দার জানিয়েছেন, আফগানিস্তানে খুব শীঘ্রই রাষ্ট্রদূত পাঠাতে চলেছেন তাঁরা। এর ফলে দুই দেশের বোঝাপড়া আরও বৃদ্ধি পাবে বলেও আশাপ্রকাশ করেন তিনি। একাধিক সূত্রের খবর, দু’দেশের সম্পর্কে দূরত্ব কমানোর কাজে প্রধান ভূমিকা পালন করছে চিন।

২০২১ সালে তালিবান আফগানিস্তানের দখল নেওয়ার পর সে অর্থে কাবুলের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিল না ইসলামাবাদের। অবশ্য রাষ্ট্রপুঞ্জও তালিবান সরকারকে স্বীকৃতি দেয়নি। তবে পড়শি দেশ আফগানিস্তানের সঙ্গে পাকিস্তানের সম্পর্ক গত কয়েক মাসে কার্যত তলানিতে নেমে আসে।

বিদ্রোহী সংগঠন তেহরিক-ই-তালিবান পাকিস্তান (টিটিপি)-এর একাধিক হামলায় প্রায়ই অশান্ত হয়ে ওঠে পাকিস্তানের পশ্চিম সীমান্ত। এই বিদ্রোহীদের তালিবান মদত দিচ্ছে বলে অভিযোগ পাকিস্তানের। অন্য দিকে, প্রথাগত কূটনৈতিক সম্পর্ক না-থাকলেও কাবুলের সঙ্গে যোগাযোগ নিরবচ্ছিন্ন রেখেছে নয়াদিল্লি। এই পরিস্থিতিতে একাধিক ভূরাজনৈতিক কৌশল থেকেই চিন পাকিস্তান আর তালিবান শাসিত আফগানিস্তানের দূরত্ব কমাতে চাইছে বলে মনে করা হচ্ছে।

কয়েক দিন আগেই বেজিংয়ে চিনের বিদেশমন্ত্রী ওয়াং ই-র সঙ্গে বৈঠক করেন পাক বিদেশমন্ত্রী দার এবং তালিবান সরকারের ভারপ্রাপ্ত বিদেশমন্ত্রী আমির খান মুত্তাকি। আপাত কূটনৈতিক ওই বৈঠকে তিন জনের রুদ্ধদ্বার আলোচনাও চলে। একাধিক সূত্রের দাবি, সেই আলোচনায় পাকিস্তান এবং আফগানিস্তানকে পারস্পরিক দূরত্ব কমানোর আহ্বান জানান চিনের বিদেশমন্ত্রী।

দুই দেশের এই কাছে আসার নেপথ্যে একাধিক কারণ রয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। পহেলগাঁও কাণ্ডের পর তার নিন্দা করেছিল তালিবান সরকার। তার জন্য কাবুলকে ধন্যবাদও জানিয়েছিল নয়াদিল্লি। ২০২১-এ আফগানিস্তানে জমানা বদলের পর পরিকল্পনামাফিক কাবুলকে নয়াদিল্লির বিরুদ্ধে ব্যবহার করতে পারেনি ইসলামাবাদ। বরং ভারতের সঙ্গে তালিবান সরকারের সম্পর্ক মসৃণ হয়েছে, যা চিন এবং পাকিস্তান দু’পক্ষের কাছেই মাথাব্যথার কারণ।

তা ছাড়া বেজিংয়ের বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ বা বিআরআই-এর অন্যতম অঙ্গ চিন এবং পাকিস্তানের মধ্যে অর্থনৈতিক করিডর (সিপিইসি)। বেজিং মনে করছে, আফগানিস্তান থেকে পরিচালিত বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলি পাকিস্তানের পশ্চিম সীমান্তকে অশান্ত রাখলে তাদের অর্থনৈতিক স্বার্থ ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। আফগানিস্তানের সঙ্গে একচিলতে সীমান্ত রয়েছে চিনের। অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তার স্বার্থেই অশান্ত আফগানিস্তান চায় না বেজিং। বরং চায় ‘বন্ধু’ পাকিস্তান বিষয়টির উপর নজর এবং‌ নিয়ন্ত্রণ রাখুক।

এখনও পর্যন্ত তিনটি দেশ তালিবানকে কূটনৈতিক স্বীকতি দিয়েছে। তারা হল চিন, সংযুক্ত আরব আমিরশাহি এবং উজবেকিস্তান। পাকিস্তান যদি কাবুলে রাষ্ট্রদূত পাঠায়, তবে তারা চতুর্থ দেশ হিসাবে আফগানিস্তানের সঙ্গে প্রথাগত কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপন করবে। তবে পাকিস্তান এখনও পর্যন্ত রাষ্ট্রদূতের নাম জানায়নি। এই বিষয়ে এখনও পর্যন্ত মুখ খোলেনি তালিবান সরকারও। ২০২১-এ মার্কিন সেনা আফগানিস্তান ছাড়ার পর আমেরিকা তো বটেই, পশ্চিমি দেশগুলির প্রভাব কমেছে সে দেশে। মনে করা হচ্ছে, চিন একাধিক লাভের অঙ্ক মাথায় রেখেই সেই শূন্যস্থান পূরণ করতে চাইছে।

Pakistan Afghanistan China
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy