আমেরিকা যুদ্ধ করতে চাইলে চিনও শেষ পর্যন্ত লড়াই করতে প্রস্তুত। আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের শুল্কনীতি ঘিরে বিতর্কের আবহে অবস্থান বুঝিয়ে দিল চিন। সমাজমাধ্যমে আমেরিকায় চিনা দূতাবাস লিখেছে, “আমেরিকা যদি যুদ্ধই চায়, তা শুল্কযুদ্ধ হোক, বা বাণিজ্য যুদ্ধ কিংবা অন্য কোনও যুদ্ধ হোক, আমরা শেষ পর্যন্ত লড়াই করতে তৈরি আছি।”
বুধবার মার্কিন কংগ্রেসের যৌথ অধিবেশনে প্রথম ভাষণ দেন ট্রাম্প। মার্কিন প্রেসিডেন্টের ভাষণে ফের উঠে এসেছে শুল্কনীতির প্রসঙ্গ। চিন-সহ বিভিন্ন দেশের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে ট্রাম্প জানান, ওই দেশগুলি আমেরিকার উপর যত বেশি শুল্ক চাপাবে, আমেরিকাও তত শুল্ক চাপাবে। বস্তুত, ট্রাম্পের প্রশাসন চিনা পণ্যের উপর শুল্ক চাপানোর পরে ‘পাল্টা’ পদক্ষেপ করেছে শি জ়িনপিংয়ের প্রশাসন। আমেরিকার বেশ কিছু খাদ্যপণ্য এবং বস্ত্রের উপর আমদানি শুল্ক বৃদ্ধি করেছে বেজিং। এই আবহে বুধবার মার্কিন কংগ্রেসের যৌথ অধিবেশন ট্রাম্প ফের একবার চিন, ব্রাজ়িল এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের নামোল্লেখ করে অন্য দেশগুলিকেও শুল্কনীতি নিয়ে হুঁশিয়ারি দিলেন। ট্রাম্পের হুমকির পরেই আমেরিকায় চিনা দূতাবাস থেকে পাল্টা হুঁশিয়ারি দিয়ে রাখা হল।
চিনা পণ্যের উপর ট্রাম্পের শুল্ক চাপানোর নেপথ্যে অন্যতম কারণ মাদকদ্রব্য ফেন্টানাইল। ওয়াশিংটনের বক্তব্য, সীমান্ত দিয়ে ফেন্টানাইল পাচার বন্ধ করতেই শুল্ক চাপানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বেজিংকে হুঁশিয়ারি দিয়ে এর আগে ট্রাম্প জানিয়েছিলেন, চিনে তৈরি বহু অবৈধ ওষুধ মেক্সিকো সীমান্ত দিয়ে আমেরিকায় প্রবেশ করলেও বেজিং কোনও পদক্ষেপ করেনি। চিন যত দিন না এই বিষয়ে ব্যবস্থা নেবে, তত দিন পর্যন্ত চিনা পণ্যে শুল্ক চাপানো হবে।
আরও পড়ুন:
যদিও চিনা বিদেশ মন্ত্রকের বক্তব্য, “চিনা পণ্যের উপর শুল্ক চাপানোর জন্য ফেন্টানাইল প্রসঙ্গকে স্রেফ একটি অযৌক্তিক অজুহাত হিসাবে ব্যবহার করছে আমেরিকা। আমেরিকায় ফেন্টানাইল সংক্রান্ত সমস্যার দায় অন্য কোনও দেশের উপর চাপানো যায় না। এর জন্য দায়ী আমেরিকাই।” বেজিং আরও জানিয়েছে, মানবিক দিক থেকে এই সমস্যা সমাধানের জন্য চিন আমেরিকাকে সাহায্য করতে চাইছে। কিন্তু চিনের সেই উদ্যোগকে স্বীকৃতি দেওয়ার বদলে আমেরিকা চিনের উপর দোষ চাপানোর চেষ্টা করছে। চিনা পণ্যে শুল্ক চাপানোকেও এক প্রকার ‘হুমকি’ হিসাবেই দেখছে বেজিং।