Advertisement
E-Paper

বোরখায় নিষেধে আপত্তি শ্রীলঙ্কায়

অভ্যন্তরীণ এই সঙ্কটের মধ্যে শ্রীলঙ্কায় এখনও সন্ত্রাসের সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। গোয়েন্দা সূত্র থেকে মিলছে নানা রকম তথ্য।

সংবাদ সংস্থা

শেষ আপডেট: ৩০ এপ্রিল ২০১৯ ০৩:৫১
প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

ইস্টার বিস্ফোরণের পরে বোরখা নিষিদ্ধ করার প্রসঙ্গে আলোচনা চলছিল বেশ কিছু দিন ধরেই। এ বার শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট মৈত্রীপালা সিরিসেনা জরুরি আইনের আওতায় বোরখায় নিষেধ আরোপে সিলমোহর দিলেন। সোমবার থেকেই প্রয়োগ করা হচ্ছে নিষেধ। বোরখার কথা উল্লেখ না করে প্রেসিডেন্টের দফতর সূত্রে শুধু জানানো হয়েছে, ‘এমন কোনও আবরণ যা মুখ চিনতে বাধা সৃষ্টি করে, নিরাপত্তার স্বার্থে তা নিষেধ করা হচ্ছে।’ এই নির্দেশ কার্যকর হওয়া মাত্র মুসলিম নেতারা সমালোচনায় সরব হয়েছেন।

‘অল সেলন জামিয়াতুল ইলামা’ নামে শ্রীলঙ্কায় মৌলবিদের গোষ্ঠীর তরফে হিলমি আহমেদ বলেছেন, ‘‘মূর্খের মতো একটা সিদ্ধান্ত! তিন দিন আগে আমরাই মিলিত ভাবে সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম, যে মুসলিম মহিলারা এখন নিরাপত্তার স্বার্থে মুখ ঢাকবেন না। আর যাঁরা মুখ ঢাকতে চান, তাঁরা বাইরে বেরোবেন না। আজকের সিদ্ধান্ত থেকে স্পষ্ট, প্রেসিডেন্ট সিরিসেনা এবং প্রধানমন্ত্রী রনিল বিক্রমসিংহের মধ্যে মতানৈক্য রয়েছে। এই সিদ্ধান্ত মেনে নেওয়া যায় না। ধর্মগুরুদের সঙ্গে আলোচনা না করে প্রশাসন এ ভাবে কারও ধর্মে নাক গলাতে পারে না।’’ যদিও বাংলাদেশের লেখিকা তসলিমা নাসরিন টুইটে লিখেছেন, ‘‘নিরাপত্তার জন্য শ্রীলঙ্কা বোরখা নিষিদ্ধ করেছে। ভাল সিদ্ধান্ত। মেয়েরা নিজেকে মানুষ বলে ভাবতে পারবে। ছোট কারাগারে বন্দি হয়ে থাকা ওঁদের ভবিতব্য নয়।’’

অভ্যন্তরীণ এই সঙ্কটের মধ্যে শ্রীলঙ্কায় এখনও সন্ত্রাসের সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। গোয়েন্দা সূত্র থেকে মিলছে নানা রকম তথ্য। একটি সূত্রে দাবি, ইস্টার রবিবারে বিস্ফোরণে যারা জড়িত ছিল, তাদের শাগরেদরাও ফের হামলার ছক কষছে, সেনা উর্দিতে তারা এই হামলা চালাতে পারে বলে দাবি। স্থানীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে আবার জানা যাচ্ছে, কিছু মহিলা বোমারু ভক্ত সেজে বৌদ্ধ মন্দিরে হানা দিতে পারে। শ্রীলঙ্কার ইস্টার্ন প্রভিন্সের মুসলিম-প্রধান শহর সৈন্থামারুদু-র বাড়িতে অভিযান চালানোর পরে সেখান থেকে প্রচুর সাদা স্কার্ট-ব্লাউস উদ্ধার হয়েছে বলে দাবি। সেই পোশাক দেখেই তদন্তকারীদের অনুমান, বৌদ্ধ ভক্ত সেজে মন্দিরে ঢুকতে পারে মহিলা বোমারুরা। ওই সংবাদমাধ্যম সূত্রে দাবি, ২৯ হাজার শ্রীলঙ্কা মুদ্রার (ভারতীয় টাকায় ১১ হাজার ৫৮৭টাকা) বিনিময়ে গিরিউল্লার একটি পোশাক বিপণি থেকে ন’জোড়া সাদা স্কার্ট ব্লাউস কেনা হয়েছিল। যে মহিলারা পোশাকগুলি কিনেছিলেন, তাঁদের ছবি ওই দোকানের সিসি ক্যামেরা থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। সৈন্থামারুদু-র বাড়ি থেকে উদ্ধার হয়েছে পাঁচ জোড়া স্কার্ট ব্লাউস। বাকি পোশাক কোথায়, খোঁজ চলছে।

তদন্ত এগোচ্ছে তদন্তের মতো। কিন্তু পুলিশপ্রধানকে সরানো নিয়েও প্রকাশ্যে এসেছে প্রেসিডেন্ট আর প্রধানমন্ত্রীর মধ্যে দ্বন্দ্ব। সোমবার সিরিসেনা ভারপ্রাপ্ত পুলিশপ্রধান হিসেবে নিয়োগ করেন চন্দন বিক্রমরত্নেকে, যিনি এত দিন পুলিশপ্রধানের পরের পদে ছিলেন। আগেকার পুলিশপ্রধান পুজিত জয়সুন্দরকে নিযুক্ত করে ছিলেন প্রধানমন্ত্রী বিক্রমসিংহে। ইস্টার বিস্ফোরণের আগে পাঠানো সতর্কবার্তা প্রশাসনের সব স্তরে না পৌঁছনোর অভিযোগ ওঠায় পুজিতকে ইস্তফা দিতে বলেছিলেন সিরিসেনা। পুজিত তা মানতে চাননি। প্রেসিডেন্ট শুক্রবার তাঁর ইস্তফার কথা ঘোষণা করে দিলেও সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা যায়, পুজিত সরকারি বাসভবন ছাড়েননি। চন্দন বিক্রমরত্নে পুলিশপ্রধানের অন্তর্বর্তী দায়িত্ব পাওয়ার পরে সোমবার অবশ্য পুজিতের প্রতিক্রিয়া মেলেনি।

Sri Lanka Blast Veil Maithripala Sirisena Ranil Wickremesinghe
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy