Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪
International News

‘বাগদাদি ধর্মগুরু’, শিরোনাম লিখে বেকায়দায় ওয়াশিংটন পোস্ট, সোশ্যাল মিডিয়ায় আক্রমণ-রসিকতার ঢেউ

বিতর্ক বাধে দ্বিতীয় শিরোনাম নিয়েই। এই শিরোনাম প্রকাশিত হতেই সারা বিশ্ব থেকে ‘ওয়াশিংটন পোস্ট’কে নিশানা করে তুমুল সমালোচনা শুরু হয়।

গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ

গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ

নিজস্ব প্রতিবেদন
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৮ অক্টোবর ২০১৯ ১৬:২৪
Share: Save:

বিশ্বের অন্যতম কুখ্যাত সন্ত্রাসী। পৃথিবীর সবচেয়ে ভয়ঙ্কর জঙ্গি সংগঠন আইএস-এর মাথা আবু বকর আল বাগদাদি। জঙ্গি হানা, গণহত্যা, ধর্ষণ, লুঠপাট— অপরাধের কোনও কিছুই প্রায় বাদ নেই তার জীবনপঞ্জিতে। এ হেন বাগদাদির মৃত্যু সংবাদে ‘ধর্মগুরু’ শিরোনামে প্রতিবেদন প্রকাশ করে বিপাকে মার্কিন সংবাদপত্র ‘ওয়াশিংটন পোস্ট’-এর অনলাইন সংস্করণ। যদিও প্রথম শিরোনাম ছিল ‘শীর্ষ সন্ত্রাসী’র মৃত্যু। পরে সেটি পাল্টে লেখা হয়, ‘উগ্র ধর্মগুরু’। আর এতেই নানা মহল থেকে তীব্র ক্ষোভ, কটাক্ষ আছড়ে পড়ে সোশ্যাল মিডিয়ায়। শুরু হয় ব্যঙ্গ বিদ্রুপ। পরে অবশ্য সেই শিরোনাম পাল্টে দিয়ে ওয়াশিংটন পোস্ট কর্তৃপক্ষের তরফে ভুল স্বীকার করে বলা হয়েছে, তাড়াহুড়োয় পরিবর্তন করতে গিয়েই এই কাণ্ড ঘটেছে, যা হওয়া উচিত ছিল না।

শনিবার রাতভর (মার্কিন সময় অনুযায়ী) জল্পনা জিইয়ে রেখে রবিবার সকালে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ঘোষণা করেছেন, মার্কিন সেনার অভিযানে ‘কুকুরের মতো মৃ্ত্যু হয়েছে বাগদাদির’। তার পর থেকেই অনলাইন সংবাদ মাধ্যমগুলি এই খবর নিয়ে কার্যত ঝাঁপিয়ে পড়ে। সেই স্রোতেই ওয়াশিংটন পোস্ট প্রথমে সেই খবর প্রকাশ করে ‘টেররিস্ট ইন চিফ’ বা শীর্ষ সন্ত্রাসীর মৃত্যু। কিন্তু কিছুক্ষণের মধ্যেই সেই শিরোনাম পাল্টে করা হয়েছিল, ‘উগ্র ধর্ম-বিশারদ ইসলামিক স্টেটের মাথার ৪৮ বছর বয়সে জীবনাবসান।’’

বিতর্ক বাধে এই দ্বিতীয় শিরোনাম নিয়েই। এই শিরোনাম প্রকাশিত হতেই সারা বিশ্ব থেকে ‘ওয়াশিংটন পোস্ট’কে নিশানা করে তুমুল সমালোচনা শুরু হয়। আমেরিকায় ট্রাম্পপন্থীরা ওয়াশিংটন পোস্টকে তীব্র আক্রমণ শুরু করেন। সোশ্যাল মিডিয়াতেও শুরু হয় ব্যাঙ্গ-বিদ্রুপ, কটাক্ষ, শ্লেষ। প্রশ্ন ওঠে, এই রকম কুখ্যাত এক জন ‘মোস্ট ওয়ান্টেড’ জঙ্গিকে কী ভাবে ‘ধর্মগুরু’ বলল ওয়াশিংটন পোস্টের মতো নির্ভরযোগ্য একটি সংবাদ মাধ্যম। ওই শিরোনামে কার্যত বাগদাদির গুণকীর্তন করা হয়েছে এবং ওই শব্দবন্ধে কার্যত তার কুখ্যাত রূপ ঢাকা পড়ে গিয়েছে।

আরও পড়ুন: এক ঘণ্টার অপারেশন বাগদাদি শেষ সুড়ঙ্গের প্রান্তে, কী ভাবে চলল মার্কিন সেনার অভিযান

সোশ্যাল মিডিয়াও ঝাঁপিয়ে পড়ে ওয়াশিংটন পোস্টের পিছনে। #wapoDeathNotice এবং #WashingtonPost টুইটারে ট্রেন্ডিং হয়ে যায় কিছুক্ষণের মধ্যেই। সেখানে সারা বিশ্বের বাস্তবের কুখ্যাত ব্যক্তিদের ‘অবিচুয়ারি’ বা মৃত্যু সংবাদ নিয়ে রসিকতা চলতে থাকে। হিটলার, ওসামা বিন লাদেনের মতো ব্যক্তিদের মৃত্যুর খবর কী রকম হতে পারত (ওয়াশিংটন পোস্টের শিরোনামের মতো হলে) কী ভাবে হওয়া উচিত ছিল, তা বুঝিয়ে দেন নেটিজেনরা। অনেকে আবার সিনেমা, উপন্যাসের কাল্পনিক ভিলেনদের মৃত্যু সংবাদ নিয়েও রসিকতার উত্যুঙ্গে উঠে গিয়েছেন। উদাহরণ— মোগাম্বো, থানোসের মতো চরিত্র।

এর পরেই তড়িঘড়ি সেই দ্বিতীয় শিরোনাম ফের পরিবর্তন করে দেয় ‘ওয়াশিংটন পোস্ট’ কর্তৃপক্ষ। সংস্থার মুখপাত্র ক্রিস কোরাত্তি টুইটারে লেখেন, ‘আল বাগদাদির মৃত্যু সংবাদ নিয়ে আমাদের এই শিরোনাম (দ্বিতীয় শিরোনাম) এমন হওয়া উচিত ছিল না। আমরা খুব দ্রুত সেটা পাল্টে দিয়েছি।’ পরে সংবাদ মাধ্যমকে তিনি বলেন, ‘‘আমাদের প্রতিনিধিরা বছরের পর বছর ইরাক সিরিয়ায় কাটিয়েছেন। আইএস-এর বর্বরতা নিয়ে তাঁরা খবর করেছেন। দুর্ভাগ্যজনক ভাবে তড়িঘড়ি লেখা ওই শিরোনামে বাগদাদি ও আইএস-এর সেই নৃশংসতা ঠিক ভাবে প্রকাশ পায়নি। তবে সেটা দ্রুত পাল্টে দেওয়া হয়েছে।’’

আরও পড়ুন: মোদীর বিমানে আপত্তি, আন্তর্জাতিক মঞ্চে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে নালিশ ভারতের

যদিও এতেও বিতর্ক থামেনি। টুইটার, ফেসবুক, হোয়াটসঅ্যাপে ঘুরছে ওই শিরোনামের স্ক্রিন শট। তাই দিয়েই মুহূর্মুহূ পোস্ট, কমেন্টস আছড়ে পড়ছে সোশাল মিডিয়ায়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE