Advertisement
E-Paper

পুঁজিবাদের হাত ধরেও মার্ক্স-শরণে শি চিনফিং

একটি কমিউনিস্ট পার্টির প্রধানের মুখে মার্ক্স-স্তুতি তো স্বাভাবিক। কিন্তু শি চিনফিং-এর মুখে এই মার্ক্স-স্তুতি নিয়েই চর্চা শুরু হয়েছে চিনের অন্দরে-বাহিরে।

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ০৮ মে ২০১৮ ০৫:০৯
শি চিনফিং-এর মুখে মার্ক্স-স্তুতি নিয়েই চর্চা শুরু হয়েছে চিনের অন্দরে-বাহিরে।

শি চিনফিং-এর মুখে মার্ক্স-স্তুতি নিয়েই চর্চা শুরু হয়েছে চিনের অন্দরে-বাহিরে।

দু’শো পেরিয়েও তিনি প্রাসঙ্গিক। প্রাণবন্ত। সেই মার্ক্সের দ্বিশত জন্মবার্ষিকী উদ্‌যাপন অনুষ্ঠানে দাঁড়িয়ে এই কথাটিই মনে করিয়ে দিয়ে চিনা কমিউনিস্ট পার্টির প্রধান তথা প্রেসিডেন্ট শি চিনফিং যা বললেন, তার মর্মার্থ, ‘মার্ক্সবাদ সর্বশক্তিমান, কারণ ইহা বিজ্ঞান’।

একটি কমিউনিস্ট পার্টির প্রধানের মুখে মার্ক্স-স্তুতি তো স্বাভাবিক। কিন্তু শি চিনফিং-এর মুখে এই মার্ক্স-স্তুতি নিয়েই চর্চা শুরু হয়েছে চিনের অন্দরে-বাহিরে। ১৯৮০-র দশকে মুক্ত বাজার অর্থনীতির হাত ধরে অতি দ্রুত বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ আর্থিক শক্তি হয়ে ওঠা চিন বহু দিনই মার্ক্সবাদের পথ ছেড়েছে বলে সরব সমালোচকেরা। সেই চিনের বর্তমান প্রেসিডেন্ট শি নিজেও বিশ্বের দরবারে দেশের উদার ও পুঁজিবাদী অর্থনীতির পক্ষেই সওয়াল করছেন। অথচ দেশে এমন একজনের ভাবধারা ও মতাদর্শকে সামনে রেখে পথ চলার কথা বলছেন, যিনি পুঁজিবাদের ঘোর বিরোধী!
শি-র মুখে মার্ক্সের জয়গানে তাই অনেকেই বিস্মিত।

বেজিংয়ের সেন্ট্রাল হল অব পিপল-এ মার্ক্সের দ্বিশত জন্মবার্ষিকী পালন অনুষ্ঠানে শুক্রবার বক্তৃতা দিয়েছেন শি। মার্ক্সের বিশাল ছবির সামনে দাঁড়িয়ে তিনি বলেন, ‘‘যে কোনও ধরনের বাস্তব সমস্যার সমাধানে মার্ক্সবাদকেই আমাদের আঁকড়ে ধরতে হবে। কারণ উনিই মানবতার সর্বশ্রেষ্ঠ চিন্তাবিদ।’’ সেই সঙ্গেই মার্ক্সবাদের প্রয়োগ, বাস্তবতা, বিজ্ঞানসম্মত দিকগুলি নিয়ে দীর্ঘ আলোচনা করেছেন।

চিনা রাজনীতি নিয়ে নিয়মিত চর্চা করেন, এমন বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য, মাত্র ক’দিন আগেই দেশের আজীবন প্রেসিডেন্ট পদে মনোনীত হলেও এই মুহূর্তে প্রবল চাপে রয়েছেন শি। প্রেসিডেন্ট পদে তাঁর আজীবন থাকার বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া মানতে পারছেন না দেশের কমিউনিস্ট পার্টির অনেকেই। প্রকাশ্যে কেউ কিছু না বললেও চাপটা টের পেতে শুরু করেছেন শি। এই অবস্থায় তরুণ প্রজন্মের মন জিততে তাঁর সেরা বাজি দু’শো পেরনো এক চিন্তাবিদের ভাবধারা। সরকারি স্তরেও নানা অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে চিন। ‘মার্ক্স ওয়াজ় কারেক্ট’ নামে একটি বিশেষ অনুষ্ঠান দেখানো হচ্ছে সরকারি চ্যানেলে। কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীরা সেখানে প্রশ্নোত্তর পর্বে অংশও নিচ্ছেন।

কিন্তু এত করেও কি তরুণ মন জেতা যাবে? চিনা রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত এক অধ্যাপকের কথায়, ‘‘কয়েক বছর আগেই বিবিসি-র ভোটাভুটিতে ‘সহস্রাব্দের শ্রেষ্ঠ চিন্তাবিদ’ নির্বাচিত হয়েছেন মার্ক্স। অথচ চিনে তো মার্ক্স-কে নিয়ে গত কয়েক দশকে সে ভাবে আলোচনাই হয়নি!’’ তা ছাড়া দেশের মাটিতেই পুঁজিবাদের বিপুল বিস্তার দেখে বড় হওয়া নতুন প্রজন্ম মার্ক্স-কে কী ভাবে ব্যাখ্যা করবে, তা নিয়েও সংশয় রয়েছে অনেকের মনেই। সোশ্যাল মিডিয়ায় শি-র বক্তব্য নিয়ে হাসাহাসিও শুরু হয়েছে। কিন্তু সে সবে মোটেই গুরুত্ব দিচ্ছে না চিনা কমিউনিস্ট পার্টি। শি-র মতো তাদেরও মন্ত্র, ‘মার্ক্স শরণং…।’’

শি চিনফিং China Karl Marx Xi Jinping
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy