E-Paper

ট্রাম্প ‘ভাঁড় হতে পারেন, তা-ও ভাল’, মোদীকে কাসপারভ

পুতিন জমানার কট্টর সমালোচক কাসপারভ এখন মানবাধিকার কর্মী। রুশ প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক জনমত তৈরি করতে বহু দিন ধরেই সচেষ্ট তিনি। পুতিন প্রশাসন তাঁর নাম সন্ত্রাসবাদীর তালিকাতেও পর্যন্ত তুলেছে।

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ১০ অগস্ট ২০২৫ ০৮:৫৭
ডোনাল্ড ট্রাম্প।

ডোনাল্ড ট্রাম্প। —ফাইল চিত্র।

ভারত-পাকিস্তান সংঘর্ষ থামানোর ‘কৃতিত্ব’ ফের নিজের কাঁধে তুলে নিলেন আমেরিকান প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। স্বাভাবিক ভাবেই তাঁর মন্তব্য ঘিরে বিতর্ক বেধেছে। বিতর্ক আরও বাড়িয়েছেন প্রাক্তন বিশ্বজয়ী রুশ দাবাড়ু গ্যারি কাসপারভ।

পুতিন জমানার কট্টর সমালোচক কাসপারভ এখন মানবাধিকার কর্মী। রুশ প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক জনমত তৈরি করতে বহু দিন ধরেই সচেষ্ট তিনি। পুতিন প্রশাসন তাঁর নাম সন্ত্রাসবাদীর তালিকাতেও পর্যন্ত তুলেছে। এক্স হ্যান্ডলে তিনি লিখেছেন, ‘ট্রাম্প ভাঁড় হতে পারেন, কিন্তু তা-ও তুলনামূলক ভাবে ভাল কিছুর পক্ষে অবস্থান নেন।’ ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে সাবধান করে দিয়ে কাসপারভ লিখেছেন, নিজের ক্ষমতার জন্য মোদীর ‘বন্ধু’ ভ্লাদিমির পুতিন চাইলে তাঁকে, তাঁর গোটা দেশকে ‘বেচে দিতে পারেন’।

গত কাল হোয়াইট হাউসে একটি অনুষ্ঠানে ট্রাম্প বলেছেন, সম্প্রতি দক্ষিণ এশিয়ার দুই দেশে সংঘর্ষ ভয়াবহ রূপ নিয়েছিল। পাঁচ-ছ’টি যুদ্ধবিমান গুলি করে নামানো হয়েছিল। ট্রাম্প আগেও এ ধরনের মন্তব্য করেছেন। দাবি করেছেন, তিনি পরমাণু শক্তিধর দুই দেশ ভারত-পাকিস্তানের সংঘর্ষ থামিয়েছেন। ইসলামাবাদ এ জন্য আমেরিকার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করলেও দিল্লি বারবার বিরোধিতা করেছে। ভারত জানিয়েছে, সরাসরি পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর সঙ্গে কথা বলে আলোচনার মাধ্যমে সংঘর্ষ থামানো হয়েছিল। আমেরিকা বা অন্য কোনও দেশ কোনও প্রকার মধ্যস্থতা করেনি।

কিন্তু ট্রাম্প তা মানতে নারাজ। গত কাল তিনি ফের বলেছেন, ‘‘ওরা ও দিকেই এগোচ্ছিল। বড়সড় কিছু হতে যাচ্ছিল। হয়তো পরমাণু যুদ্ধ ঘটত... বড় কিছুর মুখোমুখি পৌঁছে দু’দেশের দুই মহান রাষ্ট্রপ্রধান এগিয়ে আসেন। ভারত, পাকিস্তানের সমস্যা আমি মিটিয়ে দিয়েছি। আমার ধারণা অন্য কোনও কিছুর থেকে সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্য। সে ভাবেই আমি বিষয়টাতে ঢুকি।’’ ট্রাম্পের কথায়, ‘‘আমি বলে দিয়েছিলাম, আমি এমন কোনও দেশের সঙ্গে কথা বলব না, যারা নিজেদের ও গোটা বিশ্বকে বিস্ফোরণে উড়িয়ে দিতে চায়।’’

ট্রাম্পের যুদ্ধ থামিয়ে শান্তি ফেরানোর কৃতিত্ববাহী তালিকায় নাম রয়েছে কঙ্গো-রোয়ান্ডা, তাইল্যান্ড-কম্বোডিয়া, সার্বিয়া-কোসোভোরও। হোয়াইট হাউসের অনুষ্ঠানে আমেরিকান প্রেসিডেন্ট বলেছেন, ‘‘মানুষের প্রাণ বাঁচাতে আমি খুব ভালবাসি। সেটাই সব।’’ এ হেন আত্মপ্রশংসার পাশাপাশি ট্রাম্প দুঃখপ্রকাশ করে এ-ও বলেছেন, ‘‘যা-ই করি না কেন, আমাকে কেউ নোবেল শান্তি পুরস্কার দেবে না।’’

ট্রাম্পের বক্তব্যে অসন্তোষ প্রকাশ করেছে ভারত। সরাসরি আপত্তিও জানিয়েছে। উল্টো দিকে, এ দিন পুতিনের স্তুতি করে তাঁকে ভারতে আমন্ত্রণ বার্তা দিয়েছেন মোদী। এক্স-এ মোদীর সেই পোস্টে কাসপারভ লেখেন, ‘আপনার বন্ধু ভ্লাদিমির পুতিন? এক জন গণহত্যাকারী যুদ্ধাপরাধী? আপনার বন্ধু যে কি না নিজের একনায়কতন্ত্র আর এক ঘণ্টা বাড়ানোর জন্য আপনাকে, আপনার গোটা দেশকে যে কোনও মুহূর্তে বেচে দিতে পারে? ও রকম বন্ধু থাকলে কার গণতন্ত্রের প্রয়োজন? ট্রাম্প ভাঁড় হতে পারে, কিন্তু তা-ও তুলনামূলক ভাবে ভাল কিছুর পক্ষে অবস্থান নেন।’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Donald Trump US President India-Pakistan

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy