Advertisement
E-Paper

প্রতিষেধক নয়, মুক্তি চাইছে ক্ষুব্ধ বার্লিন

এদের দাবি, ‘‘ভ্যাকসিন চাই না, করোনা নিয়ে বাড়াবাড়ি চাই না, লকডাউন মানি না।’’ রাস্তায় গিজগিজ করছে মাথা, মুখে মাস্কের বালাই নেই, স্লোগান-পোস্টারে ছয়লাপ। কোথায় সোশ্যাল ডিসট্যান্সিং, কোথায়ই বা চিৎকার-চেঁচামেচিতে ‘ড্রপলেটস’ ছড়ানোর আতঙ্ক!

সংবাদ সংস্থা

শেষ আপডেট: ০৬ সেপ্টেম্বর ২০২০ ০৬:২৩
গত শনিবার বার্লিনের সেই বিক্ষোভ। ছবি: গেটি ইমেজেস

গত শনিবার বার্লিনের সেই বিক্ষোভ। ছবি: গেটি ইমেজেস

রোগ বা তার দাওয়াই, সাফল্য কিংবা ব্যর্থতা, করোনা-অতিমারি নিয়ে রাজনীতি চলছেই! যার আঁচ হাড়েহাড়ে টের পাচ্ছে জার্মানি। বিক্ষোভ-মিছিলে উত্তপ্ত দেশ। বিক্ষুব্ধদের দাবি, ‘‘ভ্যাকসিন চাই না, বন্দি জীবন থেকে মুক্তি চাই!’’
সোনালি চুল এলোমেলো হয়ে ঝরে পড়েছে কাঁধে। হাজার হাজার মানুষের জমায়েতকে লক্ষ্য করে এক তরুণী বলে যাচ্ছেন, ‘‘ট্রাম্প এখন বার্লিনে।’’ সত্যি নয়, প্রতীকী, সম্ভবত জার্মান চ্যান্সেলর আঙ্গেলা মার্কেলকে উদ্দেশ্য করে বলা। ‘‘...চলুন ওখানে (পার্লামেন্ট ভবন) যাই, শান্তিপূর্ণ ভাবে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে দেখিয়ে দিই, আমরা বিশ্বে শান্তি দেখতে চাই। ওদের এ সব কাজকর্ম দেখে দেখে অসুস্থ হয়ে পড়ছি।’’ শান্তি অবশ্য বেশি ক্ষণ থাকেনি। হাতাহাতি, ব্যারিকেড ভাঙা, সবই হয়েছে। জার্মান সংবাদমাধ্যমের খবর অনুযায়ী মহিলার নাম টামারা কে। গত শনিবার এই টামারার নেৃতৃত্বেই এক বিশাল বিক্ষোভ সমাবেশের সাক্ষী হয়েছিল বার্লিন। গত এক-দু’মাসে এমন আরও বেশি কিছু বিক্ষোভ দেখেছে জার্মানি।

এদের দাবি, ‘‘ভ্যাকসিন চাই না, করোনা নিয়ে বাড়াবাড়ি চাই না, লকডাউন মানি না।’’ রাস্তায় গিজগিজ করছে মাথা, মুখে মাস্কের বালাই নেই, স্লোগান-পোস্টারে ছয়লাপ। কোথায় সোশ্যাল ডিসট্যান্সিং, কোথায়ই বা চিৎকার-চেঁচামেচিতে ‘ড্রপলেটস’ ছড়ানোর আতঙ্ক!

গোটা বিশ্বে ২ কোটি ৬৭ হাজার সংক্রমিত। ৮ লক্ষ ৮১ হাজারের বেশি মৃত্যু। শুধু আমেরিকাতেই মারা গিয়েছেন ১ লক্ষ ৯২ হাজার মানুষ। বার্লিনের ভিড় শুধু চায়, ‘পুরনো স্বাধীন জীবন’। তারা ‘ঘরবন্দি’ হয়ে থাকতে চায় না। গত কয়েক মাসে এই দাবিতে একাধিক বিক্ষোভ মিছিল হয়েছে জার্মানির একাধিক শহরে। তবে এর আড়ালেও রাজনীতি দেখছেন অনেকে।
ব্যাপারটা এ রকম: আমেরিকায় যখন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের করোনা-পরিস্থিতি সামলানোর ব্যর্থতাকে কাঠগড়ায় তোলা হয়েছে, জার্মানিতে করোনা নিয়ে সরকারের বাড়াবাড়িকে ‘অসহনীয়’ বলা হচ্ছে। বিরোধী পার্টিগুলির অন্যতম ‘এজেন্ডা’ এটি।
ইটালিতে করোনা-সংক্রমণ ভয়াল চেহারা নেওয়ার আগেই সীমান্ত বন্ধ করে দিয়েছিল জার্মান প্রশাসন। ব্যাপক হারে করোনা টেস্টিং, লকডাউন ও পারস্পরিক দূরত্ব বজায়, এ সবের মাধ্যমে অতিমারিকে অনেকটাই রুখে দিয়েছে তারা। এ পর্যন্ত সংক্রমিত হয়েছেন আড়াই লাখ জার্মান। কিন্তু মারা গিয়েছেন মাত্র ৯৪০১ জন। করোনার বিরুদ্ধে তাদের সাফল্য ভূয়সী প্রশংসাও কুড়িয়েছে বিশ্ব সংসারে। কিন্তু এত সব করেও না দাম দিতে হয় জার্মানিকে, এমনটাই ভয় পাচ্ছেন বিশেষজ্ঞেরা। সৌজন্যে বার্লিনের মিছিল।

জার্মানির মুনস্টার বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক তোর্স্টেন কোয়ান্ট আক্ষেপ করে বলেন, ‘‘ভাইরোলজিস্টরা বলছেন, রোগ প্রতিরোধ কোনও মহান ব্যাপার নয়। রোগ যদি আটকে দেওয়া যায়, তা হলে লোকে বিপদটাই টের পায় না।’’ বার্লিনের লাগাতার করোনা-বিরোধী মিছিল দক্ষিণপন্থীদের ষড়যন্ত্র বলে মনে করেন অনেকে। তাঁদের কথায়, ‘‘এ দেশে রোগ রুখে দিয়ে শাসক খলনায়ক!’’

Coronavirus Germany Berlin
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy