Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪
coronavirus

টিকার জোরেই কি ‘সুস্থ’ ব্রিটেন

‘ইম্পেরিয়াল কলেজ লন্ডন’-এর বক্তব্য, লক্ষণ মন্দ নয়। করোনাভাইরাসের সংক্রমণের হারও কমেছে।

ছবি: সংগৃহীত।

নিজস্ব প্রতিবেদন
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৯ এপ্রিল ২০২১ ০৬:৩৪
Share: Save:

রাস্তায় কাউকে সামান্য হাঁচতে শুনলেই সতর্ক দৃষ্টি। সাত হাত দূরে ছিটকে যাচ্ছে কাছাকাছি থাকা মাথাগুলো। কারণ, ব্যাপারটা আর সামান্য নেই। হাঁচি, সর্দিকাশি, মাথার যন্ত্রণা, ক্লান্তি— এ সবই কোভিডের উপসর্গ। এমনকি পেট ব্যথা, ডায়েরিয়াও। কিন্তু সাম্প্রতিক রিপোর্ট অনুযায়ী, এর কোনও কিছু নেই, সম্পূর্ণ উপসর্গহীন করোনা-পজ়িটিভের সংখ্যা বাড়ছে ব্রিটেনে। অর্থাৎ ভাইরাস সংক্রমণ ঘটিয়ে ফেললেও, রোগীকে সে ভাবে ঘায়েল করতে পারছে না।

এ দেশের ‘অফিস ফর ন্যাশনাল স্ট্যাটিসটিক্স’ জানাচ্ছে, দৈনিক সংক্রমিতের অর্ধেকেরও বেশি উপসর্গহীন। তাদের রিপোর্ট: গত ২১ মার্চ যাঁদের করোনা পরীক্ষা হয়েছিল, তাঁদের মধ্যে ৪৭ শতাংশের রিপোর্ট পজ়িটিভ এসেছে। এঁদের মধ্যে ৫৩ শতাংশের কোনও উপসর্গ ছিল না। কিন্তু এই উপসর্গহীনেরাও সমান সংক্রামক। অর্থাৎ, ওই ব্যক্তি নিজে না-ভুগলেও, নিজের অজান্তেই পাশের ব্যক্তিকে আক্রান্ত করতে পারেন। তাই মাস্ক পরা, দূরত্ববিধি মানা এখনও আবশ্যিক।

‘ইম্পেরিয়াল কলেজ লন্ডন’-এর বক্তব্য, লক্ষণ মন্দ নয়। করোনাভাইরাসের সংক্রমণের হারও কমেছে। বর্তমানে ব্রিটেনে ৫০০ জনের মধ্যে ১ জন করোনা-আক্রান্ত। ফেব্রুয়ারির থেকে যা দুই-তৃতীয়াংশ কম। হাসপাতালে ভর্তির সংখ্যাও কমেছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এর একটা বড় কারণ টিকাকরণ। বাসিন্দাদের প্রতিষেধক দেওয়ার বিষয়ে অনেকটাই এগিয়ে ব্রিটেন। টিকা প্রয়োগ প্রথম শুরু করেছিল তারাই (চিন ও রাশিয়াকে বাদ দিলে)।

বিশ্বে করোনা
মৃত - ২৯,০৫,৪৭৮
আক্রান্ত - ১৩,৩৯,৭৭,৪৯৫
সুস্থ - ১০,৭৯,৮৮,০৭১

একটি সরকারি সমীক্ষায় ধরা পড়েছে, বর্তমানে ১ লক্ষ ৪০ হাজার বাসিন্দার মধ্যে ২২৭ জন পজ়িটিভ। অর্থাৎ ০.২ শতাংশ। ৫ থেকে ১২ বছরের মধ্যে সংক্রমিত ০.৪১ শতাংশ। ৬৫ বছরের ঊর্ধ্বে ০.০৯ শতাংশ।

ভাইরাসের সংখ্যাবৃদ্ধির ক্ষমতাও মেপে দেখেছেন বিশেষজ্ঞেরা। সেটি ১.০। অর্থাৎ অতিমারি নতুন করে বাড়ছে না, কমছেও না। এক জন সংক্রমিতের থেকে গড়ে এক জনই নতুন করে করোনা-আক্রান্ত হচ্ছেন।

সরকারি রিপোর্টটির সঙ্গে যুক্ত ইম্পেরিয়াল কলেজের অধ্যাপক স্টিভেন রাইলি বলেন, ‘‘আমাদের পরীক্ষার ফল স্থিতিশীল। অন্য সমীক্ষাতেও এই প্যাটার্ন-ই ধরা পড়েছে। এ বারে ধীরে ধীরে কড়াকড়ি কিছুটা কমানো যাবে। তবে সেই সঙ্গে ভবিষ্যৎ পরিস্থিতিও নজরে রাখতে হবে।’’

এ দিকে, ব্রিটিশ সরকারের পক্ষ থেকে গত কাল ঘোষণা করা হয়েছে, ৩০ বছরের কমবয়সিদের অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজ়েনেকার টিকা দেওয়া হবে না। সাইনাস থ্রম্বোসিস বা রক্ত জমাট বেঁধে যাওয়ার মতো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার জন্যই এই সিদ্ধান্ত বলে জানিয়েছে সরকার। ব্রিটেনে ১৮ থেকে ৩০ বছর বয়সসীমায় বাসিন্দার সংখ্যা অন্তত এক কোটি। এই বয়সসীমার বাসিন্দাদের ফাইজ়ার বা মডার্নার টিকা দেওয়া হবে বলে জানানো হয়েছে। তবে এই নয়া সিদ্ধান্তে এই বয়ঃসীমার বাসিন্দাদের টিকা পেতে কিছুটা দেরি হতে পারে বলে জানিয়েছে প্রশাসন।

কিন্তু কেন এমন সিদ্ধান্ত নিল প্রশাসন? সরকার সূত্রের বক্তব্য, ‘অতিরিক্ত সাবধানতা’ (আল্‌ট্রা কশনারি মেজ়ার্স) থেকেই এই ব্যবস্থা নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। অ্যাস্ট্রাজ়েনেকার ভ্যাকসিন নিরাপদ বলেই দাবি করছেন তাঁরা। এই টিকা প্রয়োগে হাসপাতালে ভর্তি ও কোভি়ড-১৯-এ মৃত্যু অনেকটাই কমেছে। তবুও টিকাকরণের ফলে হওয়া সামান্য পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াও এড়াতে চায় সরকার।

তথ্য সহায়তা: শ্রাবণী বসু

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Corona coronavirus
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE