Advertisement
১৮ এপ্রিল ২০২৪
Jair Bolsonaro

টিকা-দুর্নীতি, চাপ বাড়ছে বোলসোনারোর উপরে

করোনাকে হালকা ভাবে নেওয়ার জন্য প্রথম থেকেই সমালোচনায় বিদ্ধ বোলসোনারো। এ বার ভ্যাকসিন দুর্নীতি সামনে আসায় আরও চাপে প্রেসিডেন্ট।

প্রেসিডেন্ট জাইর বোলসোনারো

প্রেসিডেন্ট জাইর বোলসোনারো —ফাইল চিত্র

নিজস্ব প্রতিবেদন
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৯ জুন ২০২১ ০৪:৫৬
Share: Save:

ভারতীয় সংস্থা ‘ভারত বায়োটেক’-এর তৈরি করোনা প্রতিষেধক কোভ্যাক্সিনের দাম মেটানোর জন্য সিঙ্গাপুরের সংস্থা কেন বিল পাঠাল! খটকা লাগে ব্রাজিলের স্বাস্থ্য মন্ত্রকের চিকিৎসা সরঞ্জাম আমদানি দফতরের প্রধান লুই রিকার্ডো মিরান্ডার। বিষয়টি আরও খতিয়ে দেখতে গিয়ে রিকোর্ডোর চক্ষু চড়কগাছ। রিকার্ডো বুঝতে পারেন, তিনি যে ‘কেলেঙ্কারির’ অনুসন্ধানে নেমেছেন, সেটির সঙ্গে জড়িয়ে প্রশাসনের বহু তাবড় নাম। এমনকি উঠে আসে প্রেসিডেন্ট
জ়াইর বোলসোনারোর জড়িয়ে
থাকার আশঙ্কাও।

করোনাকে হালকা ভাবে নেওয়ার জন্য প্রথম থেকেই সমালোচনায় বিদ্ধ বোলসোনারো। এ বার ভ্যাকসিন দুর্নীতি সামনে আসায় আরও চাপে প্রেসিডেন্ট। অভিযোগ উঠেছে, কোটি কোটি টাকা তছরুপের বিষয়টি সম্পর্কে জানতেন বোলসোনারো। আগামী বুধবার এবং শনিবার বোলসোনারো-বিরোধী বিক্ষোভের ডাক দিয়েছেন বিরোধীরা। প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে সরাসরি অভিযোগ আনা হবে কি না, তা নিয়ে ভোটাভুটি চালাবে সেনেট কমিশন। বোলসোনারো যদিও জানান, দুর্নীতি হয়ে থাকলে তার সরকার যোগ্য ব্যবস্থা নেবে।

অতিমারির মোকাবিলায় ব্রাজিল সরকারের পদক্ষেপগুলির কার্যকারিতা খতিয়ে দেখতে সেনেটের একটি কমিটি গড়া হয়েছে। সেই কমিটির সামনে রিকার্ডো জানান, ৮ মার্চ সিঙ্গাপুরের এক সংস্থার তরফে কোভ্যাক্সিনের দাম হিসেবে বিরাট অঙ্কের টাকা মেটানোর জন্য একটি বিল এসে পৌঁছয় তাঁর টেবিলে। কোভিড বিধি লঙ্ঘনের জন্য নিয়মিত শিরোনামে আসা বোলসোনারো যে আদৌ কোভ্যাক্সিন কিনতে উদ্যোগী হবেন, এটাই তিনি ভাবতে পারছিলেন না। কারণ, কোভ্যাক্সিনের থেকে কম দামের টিকার প্রস্তাবও ফিরিয়ে দিয়েছে তার সরকার।

রিকার্ডোর সবচেয়ে বড় খটকা লাগে এই দেখে যে, ব্রাজিলের সঙ্গে ৩০ কোটি ডলারের কোভ্যাক্সিন চুক্তির কথা লেখা থাকলেও, কোন সংস্থার তরফে তা পাঠানো হয়েছে, তার উল্লেখই ছিল না ওই চালানটিতে! তা ছাড়া, যে কোভ্যাক্সিনের দাম চেয়ে এই চিঠি পাঠানো হয়েছে, তা আদৌ ব্রাজিলে এসে পৌঁছোয়নি! এমনকি প্রতিষেধকটির কাছে দেশের সংশ্লিষ্ট নিয়ামক সংস্থার ছাড়পত্রও নেই বলে জানান তিনি। রিকার্ডোর দাবি, তা সত্ত্বেও ওই বিলটি পাস করিয়ে দেওয়ার জন্য চাপ বাড়িয়ে তাঁর কাছে যখন তখন ফোন আসতে শুরু করে। আর ফোনগুলি আসছিল তাঁর উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে। তবে এর পরে একাধিক গরমিল ধরা পড়ায় শেষমেশ বাতিল বলে ঘোষণা করা হয় সংশ্লিষ্ট চুক্তিটি। শুরু হয় তদন্ত।

বিষয়টি নিয়ে রিকার্ডো তাঁর ভাই তথা কংগ্রেসের সদস্য লুই মিরান্ডার সঙ্গে কথা বলেন। মিরান্ডা ভাইদের দাবি, ২০ মার্চ চুক্তিটির অসঙ্গতি নিয়ে বোলসোনারোর দ্বারস্থ হন তাঁরা। প্রেসিডেন্ট উল্টে তাঁদের কয়েক জন প্রভাবশালী কংগ্রেস সদস্যের কথা উল্লেখ করে তা ‘চুপচাপ’ পাস করে দেওয়ার হুমকি দেন। এই প্রভাবশালী সদস্যটি হলেন, নিম্নকক্ষে বোলসোনারোর সহযোগী রিকার্ডো ব্যারস। তাঁকেই এই পরিকল্পনার ‘মাথা’ বলে মনে করা হচ্ছে। বোলসোনারো এবং ব্যারস অবশ্য অভিযোগ অস্বীকার করে পাল্টা দায় চাপিয়েছেন মিরান্ডা ভাইদের উপরেই। দু’জনের দাবি, এ সব তাঁদের ভাবমূর্তিতে আঘাত করার চেষ্টা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Covaxin Jair Bolsonaro Bolsonaro
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE