Advertisement
E-Paper

জল নেই, খাবার নেই, কাটছে না আতঙ্ক

আমাদের ১২ জনের দল। বৃহস্পতিবার বালিতে পৌঁছই। পরের দিন দ্বীপে। আবহাওয়া চমৎকার ছিল। রবিবার ভূমিকম্পের সময়ে হোটেলের কাছেই ছিলাম। আচমকাই সব কিছু প্রবল ভাবে দুলে ওঠে। বুঝতে দেরি হয়নি— ভূমিকম্প। একে অন্যকে ডেকে এক জায়গায় হয়ে ছুটতে থাকি খোলা জায়গার দিকে। সুইমিং পুলের কাছটায় ফাঁকা জায়গা ছিল। ওখানে জড়ো হই। লোকজন (বেশির ভাগই পর্যটক) তখন ভয়ে আর্তনাদ করছেন। কান্নায় ভেঙে পড়েছেন কেউ-কেউ।

ভাগ্যশ্রী জৈন

শেষ আপডেট: ০৭ অগস্ট ২০১৮ ০৫:১২
ছবি: এপি।

ছবি: এপি।

ছবির মতো সুন্দর সমুদ্র সৈকত। ইন্দোনেশিয়ার বালি থেকে ছোট্ট একটা জাহাজে চেপে গিলি দ্বীপে পৌঁছনোর পরে সকলে আনন্দ, উচ্ছ্বাসে ভাসছিলাম। কিন্তু রবিবার বিকেলেই সব ওলটপালট হয়ে গেল।

আমাদের ১২ জনের দল। বৃহস্পতিবার বালিতে পৌঁছই। পরের দিন দ্বীপে। আবহাওয়া চমৎকার ছিল। রবিবার ভূমিকম্পের সময়ে হোটেলের কাছেই ছিলাম। আচমকাই সব কিছু প্রবল ভাবে দুলে ওঠে। বুঝতে দেরি হয়নি— ভূমিকম্প। একে অন্যকে ডেকে এক জায়গায় হয়ে ছুটতে থাকি খোলা জায়গার দিকে। সুইমিং পুলের কাছটায় ফাঁকা জায়গা ছিল। ওখানে জড়ো হই। লোকজন (বেশির ভাগই পর্যটক) তখন ভয়ে আর্তনাদ করছেন। কান্নায় ভেঙে পড়েছেন কেউ-কেউ।

এমন সময়ে কে যেন বলে ওঠে, ‘সুনামি আসছে!’ ভয়ে কাঁটা হয়ে গিয়েছিলাম। পরে শুনলাম গুজব। ভূমিকম্পের তীব্রতায় অনেক ঘরবাড়ি ভেঙে পড়েছে। হোটেলগুলিরও ক্ষতি হয়েছে। আতঙ্কের মধ্যেই সন্ধ্যা নামে। যে দ্বীপে সন্ধ্যা নামলেই পার্টি, গানবাজনা, হুল্লোড়ে মেতে ওঠে সকলে, সেখানে পর্যটকদের কারও মুখে কোনও কথা নেই। শোঁ শোঁ করে বাতাস বইছে। সমুদ্রের গর্জনে শিউরে উঠছে গা।

জল নেই, খাবার নেই। বিদ্যুৎ সংযোগ নেই। আমাদের মালপত্র হোটেলেই পড়ে ছিল। কত ক্ষণে বাড়ি ফিরব, সে চিন্তা করেই রবিবার রাতটা কেটেছে। কয়েকটা দোকানপাটে যা ফাস্ট ফুড ছিল, যে যার মতো পেরেছে কিনে ফেলেছে। আমাদের সঙ্গে ছোট বাচ্চাও রয়েছে। ওর খাবার ব্যবস্থা করতে গিয়ে হিমশিম খেলাম। শেষে কিছু খাবার জোগাড় হল। বাড়িতে যোগাযোগ করে অডিয়ো বার্তা পাঠিয়েছি। সোশ্যাল মিডিয়াতেও জানিয়েছি। দেশের সরকার সাহায্য করলে ভাল হয়।

গিলি থেকে বালিতে ফেরার দু’টো উপায়। জাহাজে কিংবা নৌকায় ঘণ্টা তিনেকের রাস্তা। কিন্তু, ভূমিকম্পের পরে তা প্রায় বন্ধ। সব থেকে কাছের বিমানবন্দর লম্বকে। সেখানে পৌঁছতেও কিছুটা জলপথে যেতে হয়। স্থানীয় প্রশাসন পর্যায়ক্রমে পর্যটকদের সেখানে নিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু প্রচণ্ড ভিড়। সকলেই আগে ফিরতে চাইছেন। আমরা বহু চেষ্টা করে একটা হেলিকপ্টারে করে বালি পৌঁছেছি। অনেক বেশি টাকা দিতে হয়েছে। প্রার্থনা করুন, যাতে নিরাপদে দেশে ফিরতে পারি।

(শিলিগুড়ির স্টেশন ফিডার রোডের বাসিন্দা ভাগ্যশ্রীর অডিয়ো বার্তা ও বাড়ির লোকজনের কথাবার্তার ভিত্তিতে অনুলিখন)

Bali Indonesia Earthquake
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy