শুনসান বেজিং।—ছবি এএফপি।
হু হু করে বাড়ছে সংখ্যাটা। চিনে নোভেল করোনাভাইরাসের হানায় মৃতের সংখ্যা ইতিমধ্যেই আশিতে দাঁড়িয়েছে। সংক্রমিতের সংখ্যা তিন হাজার ছুঁয়ে ফেলল বলে। এই অবস্থায় আর অপেক্ষা নয়। চিনের সব চেয়ে বিপজ্জনক শহর উহানে আটকে থাকা ভারতীয়দের ‘এয়ারলিফ্ট’ করে উদ্ধার করার জন্য কেন্দ্রের কাছে আবেদন জানাল কেরল সরকার।
চিনের ‘তালাবন্দি’ শহরগুলোয় বাস-ট্রেন-বিমান, এমনকি ফেরি পরিষেবাও বন্ধ। স্টেশন বা বিমানবন্দরে প্রবেশ নিষিদ্ধ। এ অবস্থায় গত কাল কিছু দেশ চিনের কাছে প্রস্তাব দিয়েছিল, তাদের দেশের বাসিন্দাদের তুলে নিয়ে যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হোক। আজ একই প্রস্তাব দিয়ে কেরলের মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে চিঠি লিখে জানিয়েছেন, উহানের পরিস্থিতি ভয়াবহ। নিকটবর্তী কোনও শহরে যদি
একটি বিশেষ বিমান পাঠিয়ে আটকে থাকা ভারতীয়দের ‘এয়ারলিফ্ট’ করে উহান থেকে উদ্ধার করা যায়। বেজিংয়ের ভারতীয় দূতাবাসের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীকে কথা বলার জন্যেও আবেদন জানিয়েছেন তিনি। এরই মধ্যে আজ এয়ার ইন্ডিয়া জানিয়েছে, উহান থেকে ভারতীয়দের উদ্ধারে একটি বোয়িং বিমান প্রস্তুত রাখা হচ্ছে। কেন্দ্রের সবুজ সঙ্কেত পেলেই বিমানটি উহানের উদ্দেশে রওনা হবে।
চিন-ফেরত বেঙ্গালুরুর দুই বাসিন্দাকে আজ থেকে পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে। মুম্বইয়েও ৩৬ বছরের এক যুবককে হাসপাতালে আইসোলেশন ওয়ার্ডে রাখা হয়েছে। তাঁর উপসর্গ দেখে খারাপ কিছুই সন্দেহ করছেন চিকিৎসকেরা। কমপক্ষে ৭০০ ভারতীয় আটকে রয়েছেন চিনে। উহান-সহ হুবেই প্রদেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেন তাঁরা। বিদেশ মন্ত্রকের পক্ষ থেকে গত কাল জানানো হয়েছে, চিনে আটকে পড়া ভারতীয়দের মধ্যে কেউ সংক্রমিত হননি। এর আগে দু’টি হটলাইন খোলা হয়েছিল (+৮৬১৮৬১২০৮৩৬২৯ এবং +৮৬১৮৬১২০৮৩৬১৭)। কাল তৃতীয় একটি হটলাইন খোলা হয়, +৮৬১৮৬১০৯৫২৯০৩।
নেপালেও করোনাভাইরাস সংক্রমণের খবর মেলায় সীমান্তবর্তী ভারতীয় এলাকাগুলোতে নজরদারি চালানো হচ্ছে। স্বাস্থ্য মন্ত্রকের তরফে আজ টুইট করে বলা হয়েছে, ‘‘যে হেতু নেপাল থেকে নিশ্চিত ভাবে সংক্রমণের খবর মিলেছে, সীমান্তবর্তী এলাকা পশ্চিমবঙ্গে পানিটাঙ্কিতে নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। সেই সঙ্গে নেপাল-ভারত সব চেকপয়েন্টে লক্ষ রাখা হচ্ছে।’’
আজ উহান পরিদর্শনে গিয়েছিলেন চিনা প্রধানমন্ত্রী লি খ্যছিয়াং। এই প্রথম দেশের কোনও শীর্ষস্থানীয় নেতা ঘটনাস্থলে গেলেন। উহানের হাসপাতালগুলো ঘুরে দেখেন তিনি। খ্যছিয়াংয়ের যাওয়ার সামান্য আগেই উহান প্রশাসন জানায়, মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৮০ হয়েছে। ২৭৪৪ জনের সংক্রমণ নিশ্চিত। এর মধ্যে ৪৬১ জনের সংক্রমণ থেকে নিউমোনিয়া হয়েছে। অবস্থা সঙ্কটজনক। আজ আমেরিকা জানিয়েছে, তাদের দেশে পাঁচ জনের নোভেল করোনাভাইরাস সংক্রমণ নিশ্চিত হয়েছে। এরা প্রত্যেকেই সম্প্রতি চিনের উহানে গিয়েছিলেন। আরও অন্তত ১০০ জনকে নজরদারিতে রাখা হয়েছে। সন্দেহ করা হচ্ছে, তাঁদেরও সংক্রমণ ঘটে থাকতে পারে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy