Advertisement
১৬ মে ২০২৪
PM Modi

India: পশ্চিমের চাপ এবং চিন-রাশিয়া সম্পর্ক ভাবাচ্ছে দিল্লিকে

কূটনৈতিক সূত্রের মতে, ভারসাম্যের কূটনীতি আপাতত বহাল রাখলেও সাউথ ব্লক মাথায় রাখছে এই হিসেবও।

ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৩ জুলাই ২০২২ ০৫:০৪
Share: Save:

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ যত দীর্ঘায়িত হবে, মস্কোর উপর আমেরিকা-সহ পশ্চিমের নিষেধাজ্ঞার ফাঁস ততই চেপে বসবে। সেই সঙ্গে রাশিয়ার চিন-নির্ভরতাও বাড়বে। কূটনৈতিক সূত্রের মতে, ভারসাম্যের কূটনীতি আপাতত বহাল রাখলেও সাউথ ব্লক মাথায় রাখছে এই হিসেবও। সেই সঙ্গে আন্তর্জাতিক মঞ্চে এই বার্তা দেওয়াও জরুরি, ইউক্রেনে যুদ্ধ বন্ধ হোক, এটা ভারত চায়।

সোমবার রাষ্ট্রপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদে ইউক্রেন সংক্রান্ত এক বৈঠকে বিষয়টি নিয়ে ফের সরব হয়েছেন ভারতীয় স্থায়ী মিশনের কাউন্সেলর প্রতীক মাথুর। তিনি বলেন, “সংঘাতের ফলে মানুষের প্রাণ যাচ্ছে, দুর্দশার অন্ত নেই। বিশেষ করে বয়স্ক, শিশু এবং মহিলারা মহাবিপদে। লাখ লাখ মানুষ গৃহহীন।” মাথুর রাষ্ট্রুপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদের সদস্যদের মনে করিয়েছেন, ভারত গোড়া থেকেই হিংসা বন্ধের সওয়াল করে চলেছে। শান্তি, কূটনীতির কথা বলেছে। তাঁর কথায়, “ইউক্রেনের মানুষের দুর্দশা কমানোর জন্য সব প্রয়াসকে আমরা সমর্থন করি। বিশেষ করে রাশিয়া এবং ইউক্রেনের মধ্যে কথা হওয়া যে জরুরি, তা-ও বলছি আমরা। ভারত বার বার বলছে, আন্তর্জাতিক ব্যবস্থার ভিত হল আন্তর্জাতিক আইন, রাষ্ট্রপুঞ্জের সনদ, ভৌগোলিক অখণ্ডতা এবং রাষ্ট্রের সার্বভৌমত্ব রক্ষা।”

দু’দিন আগেই ইউক্রেনের সংবাদমাধ্যমের খবর, ভারত, জার্মানি-সহ বেশ কিছু দেশ থেকে ইউক্রেন তার রাষ্ট্রদূতকে সরিয়ে নিয়েছে। তার সঙ্গে ভারতীয় কর্তার এই বিবৃতির কোনও যোগ রয়েছে কিনা তা-ও আলোচনায় উঠে আসছে। গত এক মাসে বেশ কয়েকটি অতি গুরুত্বপূর্ণ বহুপাক্ষিক এবং দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। রাশিয়া থেকে অশোধিত তেল আমদানি কমাতে আমেরিকা থেকে চাপ এসেছে সেই সব বৈঠকে। মস্কো থেকে তেল কেনার ঊর্ধ্বসীমা বেঁধে দিয়ে (বাজারের থেকে অনেকটাই কম দামে) রাশিয়াকে দুর্বল করার জন্য ইতিমধ্যেই ফ্রান্স, আমেরিকা অনুরোধ করেছে নয়াদিল্লিকে।

যদিও ভারত এখনও তার নীতিতে অটল। সাউথ ব্লক সূত্রের বক্তব্য, ভারতের জ্বালানির চাহিদা বিপুল। ফলে অন্য দেশ থেকে শক্তি আমদানির ক্ষেত্রে একমাত্র বিবেচ্য অভ্যন্তরীণ চাহিদা। এটা ঘটনা যে যুদ্ধের মধ্যেও ইউরোপের দেশগুলি রাশিয়া থেকে লাগাতার অশোধিত তেল কিনে গিয়েছে। তারাও এ বার রাশ টানতে রাজি। কিন্তু ভারতই একমাত্র ব্যতিক্রম, যে আমেরিকার কৌশলগত অংশীদার হয়েও, এখনও রাশিয়া থেকে তেল আমদানি করে চলেছে। ভারত এই যুদ্ধের বাজারে রাশিয়া থেকে গত বছরের তুলনায় ৩৪৫% কয়লা ও ২৩৬% তেল বেশি আমদানি করেছে। তেল আমদানির তালিকায় রাশিয়া এখন ভারতের দ্বিতীয় স্থানে (প্রথম স্থানে ইরাক)। পাশাপাশি, রাষ্ট্রপুঞ্জে রাশিয়া বিরোধী একটি প্রস্তাবেও ভোট দেয়নি নয়াদিল্লি। কিন্তু কূটনৈতিক মহল বলছে, বিষয়টি সরু দড়ির উপর দিয়ে হাঁটার মতোই কঠিন। কত দিন এই চাপ সামলানো যাবে, তা নিয়ে সংশয় রয়েছে। এই আন্তর্জাতিক চাপ বাড়ার আগেই মোদী সরকার চাইছে যতটা বেশি সম্ভব জ্বালানি রাশিয়া থেকে সংগ্রহ করে রাখতে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

PM Modi Russia China
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE