ইরান এবং ইজ়রায়েলের বিরুদ্ধে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়েছে বলে ঘুমোতে গিয়েছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। কারণ যে সময় তিনি যুদ্ধবিরতি সংক্রান্ত দাবি সংবলিত তৃতীয় পোস্টটি করেছিলেন, সেই সময় আমেরিকায় গভীর রাত। ভারতীয় সময় মঙ্গলবার বিকেল সাড়ে ৪টে নাগাদ (ওয়াশিংটনের সময় অনুযায়ী মঙ্গলবার সকাল ৭টা) সমাজমাধ্যমে আরও একটি পোস্ট করলেন ট্রাম্প। অর্থাৎ যে সময় আমেরিকাবাসী ঘুম ভেঙে সবে উঠছে। ট্রাম্প ঘুমিয়েছিলেন কি না, জানা নেই। তবে সাতসকালেই তাঁর যাবতীয় রাগ গিয়ে পড়ল ‘বন্ধু’ ইজ়রায়েলের উপর। সরাসরি নির্দেশ দিলেন, ইরানের উপর যেন আর না বোমা ফেলা হয়!
যুদ্ধবিরতি নিয়ে হতাশার কথা গোপন করেননি ট্রাম্প। সকালে নেদারল্যান্ডসের দ্য হেগে নেটোর সম্মেলনে যোগ দেওয়ার আগে সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে ট্রাম্প জানান, ইরান এবং ইজ়রায়েল উভয়েই যুদ্ধবিরতির শর্ত লঙ্ঘন করেছে। তাই দুই দেশের আচরণেই তিনি সন্তুষ্ট নন। বিশেষ করে ইজ়রায়েলের আচরণে তিনি যে হতাশ, তা-ও স্পষ্ট করে দেন ট্রাম্প।
পরে সমাজমাধ্যমে একটি পোস্ট করে ইজ়রায়েলের প্রতি ট্রাম্পের বার্তা, “ওই বোমাগুলি ছুড়ো না। তুমি যদি এটা করো, তবে (যুদ্ধবিরতির শর্তে) বড় লঙ্ঘন হবে। এখনই তোমার পাইলটদের (ইরান থেকে) ফিরিয়ে নাও।”
মঙ্গলবার (ভারতীয় সময় অনুসারে) ট্রাম্পের যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবে সম্মতি জানিয়েছিল ইজ়রায়েল। ইজ়রায়েলের তরফে একটি বিবৃতি দিয়ে জানানো হয়েছিল, “প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের প্রতি পূর্ণ সমর্থন জানিয়ে, ইজ়রায়েল তাঁর প্রস্তাব মেনে পারস্পরিক সংঘর্ষবিরতিতে সম্মত হচ্ছে।” সেই সময় ইরানের তরফে যুদ্ধবিরতিতে সম্মতি দেওয়া বা না-দেওয়ার বিষয়ে কিছু জানানো হয়নি। পরিস্থিতি রাতারাতি বদলে যায় তার কিছু সময় পরেই।
আরও পড়ুন:
ইজ়রায়েল দাবি করে, যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করে হামলা চালিয়েছে ইরান। তাই ইরানের প্রাণকেন্দ্র তেহরান লক্ষ্য করে হামলা চালানোর নির্দেশ দেন ইজ়রায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী। ইজ়রায়েলের এই নির্দেশের পরেই যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন সংক্রান্ত অভিযোগ অস্বীকার করে ইরান। পাশাপাশি ইরানের নিরাপত্তা সংক্রান্ত সর্বোচ্চ নীতি নির্ধারক গোষ্ঠী ন্যাশনাল সিকিয়োরিটি কাউন্সিল (জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদ) জানায়, তারা ইজ়রায়েলের সঙ্গে সংঘর্ষবিরতির পথে হাঁটছে। ইরানের বিবৃতিতে এ-ও বলা হয় যে, ‘‘জায়নবাদী (ইহুদি জাতীয়তাবাদী মতাদর্শ) শত্রু এবং তার সমর্থকদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।” বলা হয়, ‘শত্রুর নিষ্ঠুরতা’র সমুচিত জবাব দিয়েছে ইরানের সেনাবাহিনী।
ইরান অবশ্য জানায়, শত্রুপক্ষ যদি যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করে, তবে তারাও পাল্টা হামলা চালাবে। সে ক্ষেত্রে ইজ়রায়েলের পর ইরানও যুদ্ধবিরতি ভাঙার ঘোষণা করবে বলে মনে করা হচ্ছে।