পিছু হটেছেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ‘ন্যাশনাল রাইফল অ্যাসোসিয়েশন’ (এনআরএ)-র পক্ষ থেকে সেই দাবি-ই করা হয়েছে।
মাত্র এক দিন আগের কথা। বন্দুকের যথেচ্ছ ব্যবহার রুখতে, নিতান্তই অ-ট্রাম্পোচিত ভঙ্গিতে, এক গুচ্ছ প্রস্তাব দিয়েছিলেন প্রেসিডেন্ট। যা শুনে স্তম্ভিত হয়ে গিয়েছিল ডেমোক্র্যাট, এমনকী রিপাবলিকান শিবিরও। তারপর ২৪ ঘণ্টা পার হতে না হতেই নাকি মত পাল্টে ফেলেছেন ট্রাম্প। হোয়াইট হাউসের ওভাল অফিসে ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্স এবং এনআরএ-র প্রতিনিধিদের সঙ্গে এক বৈঠকের পরেই এই মতবদল, জানানো হয়েছে ‘ন্যাশনাল রাইফল অ্যাসোসিয়েশন’-এর পক্ষ থেকে।
এনআরএ-র মুখ্য রাজনৈতিক উপদেষ্টা ক্রিস কক্স বৃহস্পতিবার স্থানীয় সময় রাত ন’টা নাগাদ টুইট করে জানান, হোয়াইট হাউসে তাঁর সঙ্গে প্রেসিডেন্ট ও ভাইস প্রেসিডেন্টের বৈঠক হয়েছে। তিনি লেখেন, ‘‘আমরা সকলেই চাই যে স্কুলে নিরাপদ পরিবেশ বজায় থাকুক, নতুন আইন আনা হোক মনোরোগীদের জন্য এবং বিপজ্জনক মানুষদের থেকে অস্ত্র দূরে রাখা হোক।’’ কিন্তু একই টুইটে কক্স লিখেছেন, ‘‘দ্বিতীয় সংশোধনীর প্রতি মর্যাদা বজায় রাখতে প্রেসিডেন্ট ও ভাইস প্রেসিডেন্ট দু’জনেই বদ্ধপরিকর। তাঁরা কেউই অস্ত্র আইনে রাশ টানার পক্ষে নন।’’
দ্বিতীয় সংশোধনী অর্থাৎ দু’শতকেরও বেশি পুরনো ১৭৯১ সালের সেই আইন, যার ফলে আমেরিকার প্রতিটি নাগরিক বন্দুক রাখার স্বাধীনতা উপভোগ করেন। ফলে সেই আইনকে মর্যাদা দিতে গেলে ট্রাম্পের গুচ্ছ গুচ্ছ প্রস্তাব অর্থহীন হয়ে যায়।
কী বলেছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট?
ট্রাম্পের প্রস্তাব ছিল—
১। রাইফেল কেনার বয়স ১৮ বছরের পরিবর্তে বাড়িয়ে ২১ বছর করা উচিত।
২। রাইফেল প্রদর্শনী বা ইন্টারনেটে অস্ত্র কেনার ক্ষেত্রে ক্রেতার অতীত রেকর্ড খতিয়ে দেখার কাজটি আরও বিস্তৃত ভাবে করতে হবে।
৩। মানসিক ভাবে অসুস্থ লোকজনের হাতে অস্ত্র যাতে না যায়, নজর রাখতে হবে সে দিকেও। মানসিক ভাবে অসুস্থদের হাতে কোনও ভাবে অস্ত্র থাকলেও, প্রশাসনের হাতে সে অস্ত্র আটক করার ক্ষমতা দিতে হবে।
৪। এমন কোনও ব্যক্তি, যার হাতে অস্ত্র থাকলে বিপজ্জনক হতে পারে বলে মনে হয়, তাদের দিকেও নজর রাখতে হবে।
৫। স্কুলে নিরাপত্তা বাড়াতে হবে।
৬। অ্যাসল্ট রাইফেল নিষিদ্ধ করা যায় কিনা, তা নিয়ে আলোচনা করতে হবে।
হোয়াইট হাউসের মিডিয়া সচিব সারা হাকেবি স্যান্ডার্স বৃহস্পতিবার রাতের এই ‘অর্নিধারিত বৈঠক’ সম্বন্ধে কোনও মন্তব্য করতে চাননি। তবে কক্সের টুইটের ঘণ্টাখানেক পরেই স্বয়ং প্রেসিডেন্ট টুইট করে বলেন, ‘‘ওভাল অফিসে এনআরএ-র প্রতিনিধির সঙ্গে খুব ভাল বৈঠক হল।’’
অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ নিয়ে ট্রাম্পের প্রস্তাব কতটা কার্যকর হবে, তা নিয়ে প্রথম থেকেই সন্দেহ প্রকাশ করেছিলেন ডেমোক্র্যাটরা। ভোলবদলের পরে তাঁরা প্রশ্ন তুলছেন, দেশের সব থেকে শক্তিশালী লবির চাপেই কি এত তাড়াতাড়ি মত বদলে ফেলতে হল স্বয়ং মার্কিন প্রেসিডেন্টকেও!
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy