বিতর্ক তাঁকে নিয়ে কিছু কম নেই। এ বার আলোচনার কেন্দ্রে তাঁর হাতটাও!
রিপাবলিকান পদপ্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্পের হাত নিয়ে এই চর্চায় কেউ বিব্রত, কেউ আবার খুঁজে পাচ্ছেন নিপাট মজা।
গত কাল মিশিগানে একটি সভায় ফ্লোরিডার সেনেটর মার্কো রুবিওকে বিঁধে ট্রাম্পকে বলতে শোনা গিয়েছে, ‘‘আমি আপনাদের দেখাতে চাই, আমি কত বড় খেলোয়াড়। দেখুন আমার হাতের আকৃতি। কী ভাবে ওঁকে জাপটে ধরতে পারি আমি!’’ হাত নিয়ে এই বিতণ্ডা অবশ্য শুরু হয়েছিল রুবিওর হাত ধরেই। তিনি প্রথম বলেছিলেন, ট্রাম্পের হাতগুলো ছোট ছোট। তাঁর কথায়, ‘‘ওঁর হাত দেখেছেন? ছোট হাতের মানুষদের সম্পর্কে কী বলা হয় জানেন? আর যা-ই হোক, ওঁদের বিশ্বাস করা যায় না।’’ রুবিওর এই মন্তব্যের উৎস আবার ১৯৮০ সালের একটি পত্রিকা। যেখানে ট্রাম্পকে এই ভাবেই আক্রমণ করা হয়েছিল।
এই সবের জবাব দিতে গত কাল ট্রাম্প সরাসরি বেছে নেন তাঁর সভায় উপস্থিত দর্শকদের। নিজের দুই হাত তুলে দেখিয়ে জানতে চান, সেগুলো সত্যিই ছোট কি না! তার পরেই আসে রুবিওকে জাপটে ধরার কথা।
যদিও রিপাবলিকান পার্টির অন্দরে অনেকেই অবশ্য বলছেন, জাতীয় রাজনীতির অঙ্গনে রুবিওর এ হেন আক্রমণ মেনে নেওয়া যায় না। রুবিও যদিও তাতে দমছেন না। তাঁর দাবি, তিনি কিছু ভুল বলছেন না। রুবিরও মন্তব্য, ‘‘ট্রাম্প যে ধরনের বাঁকা কথা বলায় সিদ্ধহস্ত, এই আক্রমণ তার কাছে কিছুই নয়। ট্রাম্প যাঁকে তাঁকে ব্যক্তিগত আক্রমণ করছেন। পার পাচ্ছেন না মহিলা, সংখ্যালঘু এবং প্রতিবন্ধীরাও।’’ রুবিওর মন্তব্য, ‘‘ট্রাম্পের মতো এত কুৎসিত ভাষা ব্যবহার মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে নজিরবিহীন।’’
বস্তুত ট্রাম্পের এই আলটপকা মন্তব্যের জেরে আম মার্কিন জনতা নাকি উদ্বেগের শিকার হচ্ছেন— এমনটাই দাবি ওয়াশিংটনের এক মনোবিদের। অ্যালিসন হাওয়ার্ড নামে ওই মনোবিদ জানিয়েছেন, ডোনাল্ড ট্রাম্পের রাজনৈতিক উত্থানে অনেকেই উদ্বিগ্ন। সম্প্রতি অ্যালিসনের কাছে এমন দু’এক জন রোগী এসেছেন যাঁরা প্রশ্ন করেছেন ট্রাম্প সম্পর্কে। কারণ ট্রাম্প তাঁদের চিন্তা বাড়িয়েছেন। এক রোগী প্রশ্ন করেছেন, ট্রাম্প যে ধরনের বিভাজন নীতির কথা বলে বেড়াচ্ছেন, তাতে এত জনপ্রিয়তা পাচ্ছেন কী ভাবে! আর এক জন জানতে চেয়েছেন, ‘‘ছেলেবেলায় ট্রাম্পের কোনও সমস্যা হয়েছিল কি? উনি এমন ‘খারাপ মানুষ’ হয়ে উঠলেন কী ভাবে?’’
অ্যালিসনের বক্তব্য, ‘‘ট্রাম্প লোকজনকে নাড়িয়ে দিয়েছেন। আমাদের ছোটবেলা থেকে শেখানো হয়, কারও সম্পর্কে খারাপ কথা বলতে নেই, কাউকে ব্যঙ্গ করা উচিত নয়, কারও চামড়ার রং দেখে তাঁকে আলাদা করে দেওয়া উচিত নয়। এই সামাজিক শিক্ষার প্রতিটি উপাদান তিনি গুঁড়িয়ে দিচ্ছেন। আর গোটা ব্যাপারটায় তিনি সফলও হচ্ছেন।’’ মার্কিন সংবাদমাধ্যমের বিশ্লেষণ, ট্রাম্পের এক একটা জয়ের পরে রিপাবলিকান-ডেমোক্র্যাট— দুই দলের সমর্থকই চিন্তিত। সম্প্রতি একটি মার্কিন দৈনিকের সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, ৬৯ শতাংশ নাগরিক বলছেন প্রেসিডেন্ট হিসেবে ট্রাম্পকে ভাবলে তাঁদের ঘুম উড়ে যাচ্ছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy