Advertisement
E-Paper

আমেরিকায় বিনিয়োগ করলে চিপ আমদানিতে ১০০ শতাংশ শুল্ক মাফ, ট্রাম্পের ঘোষণায় কি তবে জিতলেন অ্যাপল কর্ণধার কুক!

কুক জানিয়েছেন, অ্যাপল ফোন এবং ঘড়িতে যে কাচ ব্যবহার করা হয়, তা খুব শীঘ্রই তৈরি হবে কেন্টাকিতে।

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ০৭ অগস্ট ২০২৫ ১৯:৩৯
(বাঁ দিকে) ডোনাল্ড ট্রাম্প। টিম কুক (ডান দিকে)।

(বাঁ দিকে) ডোনাল্ড ট্রাম্প। টিম কুক (ডান দিকে)। — ফাইল চিত্র।

অন্য দেশ থেকে আমদানি করা কম্পিউটার ও সেমিকন্ডাক্টর চিপের উপরে ১০০ শতাংশ শুল্ক চাপানোর হুঁশিয়ারি দিয়েছেন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তাতে বিপাকে পড়েছিল প্রযুক্তি সংস্থাগুলি। তাদের পণ্যের দাম বৃদ্ধির সম্ভাবনা তৈরি হয়েছিল। এ বার ট্রাম্প জানালেন, যে প্রযুক্তি সংস্থা আমেরিকায় বিনিয়োগ করবে, তাদের এই শুল্ক থেকে অব্যাহতি দেওয়া হবে। অ্যাপল-সহ অন্য সংস্থাগুলি যারা ইতিমধ্যেই সে দেশে বিনিয়োগের কথা ঘোষণা করেছে তারা এখন অনেকটাই স্বস্তিতে। মনে করা হচ্ছে, ট্রাম্পের এই ঘোষণায় আদতে জয় হয়েছে অ্যাপল সংস্থার প্রধান টিম কুকেরা।

আমেরিকার সংবাদমাধ্যম ‘ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল’-এ প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, বুধবার ট্রাম্প জানান, অ্যাপল আমেরিকায় আরও ১০ হাজার কোটি ডলার বিনিয়োগের কথা ঘোষণা করেছে। ভারতীয় মুদ্রায় যার মূল্য প্রায় আট লক্ষ কোটি টাকা। তার পরেই তিনি চিপ আমদানিতে শুল্ক ছাড়ের বিষয়টি জানান। অ্যাপল নতুন করে বিনিয়োগের কথা ঘোষণা করলেও ভারত এবং চিনে তাদের উৎপাদন যে বন্ধ করছে না, তা-ও এক প্রকার স্পষ্ট করে দিয়েছে। তার পরেও ট্রাম্পের এই ঘোষণাকে অ্যাপল সংস্থার সিইও টিম কুকের বড় জয় বলে মনে করা হচ্ছে।

ট্রাম্প যখন ভারত এবং চিন থেকে আমেরিকায় রফতানি করা পণ্যের উপর অতিরিক্ত শুল্ক চাপানোর কথা ঘোষণা করেছিলেন, তখন তাঁর প্রভাব নিয়ে সতর্ক করে হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন কুক। বিষয়টি ভাল চোখে দেখেননি ট্রাম্প। সরাসরি জানিয়ে দেন, ভারত বা অন্য দেশে আইফোন তৈরি করলে চলবে না। আমেরিকাতেই তৈরি করতে হবে। এ বার আমেরিকায় আরও বিনিয়োগের কথা ঘোষণা করেছে অ্যাপল সংস্থা। নরম হয়েছেন ট্রাম্পও। জানিয়ে দিয়েছেন, সে দেশে আরও বিনিয়োগ করলে চিপ আমদানিতে শুল্ক ছাড় মিলবে। প্রসঙ্গত, ট্রাম্প প্রথম বার আমেরিকার প্রেসিডেন্ট থাকার সময়েও শুল্কছাড় পেয়েছিলেন কুক।

অ্যাপল একা নয়, আমেরিকার বেশ কিছু প্রযুক্তি সংস্থা সে দেশে নতুন করে বিনিয়োগের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ফলে গত কয়েক মাসে আমেরিকায় নতুন করে কোটি কোটি টাকা বিনিয়োগ হয়েছে।

বিশেষজ্ঞদের একাংশ বলছেন, আমেরিকায় আইফোন, আইপ্যাড-সহ নিজেদের পণ্য তৈরি করা অ্যাপলের পক্ষে অর্থনৈতিক ভাবে একপ্রকার অসম্ভব। সেখানে তৈরি করলে খরচ অনেক বেশি পড়ে। সে কারণেই উৎপাদনের বড় অংশ চিন এবং ভারতে করে তারা। তবে আমেরিকায় ১০ হাজার কোটি ডলার বিনিয়োগের ঘোষণা তারা করে দিয়েছে। এর আগে ফেব্রুয়ারি মাসে ৫০ হাজার কোটি ডলার বিনিয়োগের কথা ঘোষণা করেছিলেন কুক। ভারতীয় মুদ্রায় যার মূল্য ৪১ লক্ষ কোটি টাকা। পাশাপাশি, কুক জানিয়েছেন, অ্যাপল ফোন এবং ঘড়িতে যে কাচ ব্যবহার করা হয়, তা খুব শীঘ্রই তৈরি হবে কেন্টাকিতে। তৈরি করবে কর্নিং সংস্থা। এর আগে কেন্টাকিতে কিছু কাচ তৈরি হয়েছে। এই সব প্রতিশ্রুতির বদলেই কি টিপের উপরে শুল্কছাড় আদায় করে নিল অ্যাপল। সেই জল্পনা রয়েই গিয়েছে।

অন্য দিকে, সূত্র বলছে, বিদেশ থেকে আমেরিকায় রফতানি করা চিপের উপরে ট্রাম্প যে শুল্ক বসিয়েছেন, তার নেপথ্যে রয়েছে মার্কিন চিপ প্রস্তুতকারী সংস্থাগুলি। তারাই তদ্বির করেছে প্রেসিডেন্টের কাছে। সূত্রের খবর, বুধবার হোয়াইট হাউসে আমেরিকার চিপ প্রস্তুতকারী সংস্থা এনভিডিয়া সংস্থার প্রধান জেনসেন হুয়াংয়ের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন ট্রাম্প। সম্প্রতি ট্রাম্পের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা তৈরি হয়েছে হুয়াংয়ের। মে মাসে পশ্চিম এশিয়ায় ট্রাম্পের সফরসঙ্গীও হয়েছিলেন তিনি। সে জন্য তাঁর প্রশংসাও করেছিলেন ট্রাম্প। কুকের অনুপস্থিতি নিয়েও সে সময় প্রশ্ন তুলেছিলেন তিনি। যদিও বুধবার ট্রাম্প সেই কুকের প্রশংসা করেছেন। তাঁর বিনিয়োগের ঘোষণার পরে আমেরিকার প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘‘আমাদের লক্ষ্য ছিল আমেরিকায় তৈরি করেই আইফোন বিক্রি হবে আমেরিকায়। সেই লক্ষ্যের দিকে আরও একধাপ এগোলাম আমরা।’’ বুধবারের পরে আমেরিকায় অ্যাপলের শেয়ারদরও বৃদ্ধি পেয়েছে।

কুক শুধু বিনিয়োগের ঘোষণা করে থামেননি। তিনি এ-ও জানিয়েছেন, ১২টি প্রদেশের ২৪টি কারখানায় অ্যাপলের জন্য ১৯০০ কোটি চিপ তৈরি করবে আমেরিকার সংস্থা। প্রসঙ্গত, ট্রাম্পের প্রথম জমানাতেও এ ধরনের ঘোষণা করেছিল অ্যাপল। নিন্দকেরা বলে, এ ধরনের বিনিয়োগের প্রতিশ্রুতি আগেও বহু বার দিয়েছে অ্যাপল সংস্থা। কিন্তু তার সবটা আর পূরণ করেনি। তাই বিনিয়োগের প্রতিশ্রুতি কতটা কার্যকর হবে, সেই নিয়ে জল্পনা থেকেই যাচ্ছে। আমেরিকার সংবাদ মাধ্যম ‘ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল’-কে চেম্বার অফ প্রোগ্রেসের সিইও অ্যাদাম কোভাসেভিক জানিয়েছেন, ট্রাম্পের সঙ্গে সম্পর্ক সঠিক পথে চালনা করার বিষয়টি শিখে গিয়েছে সংস্থাগুলি। তাঁর কথায়, ‘‘কাজটা সবচেয়ে ভাল করেছে অ্যাপল এবং চিপ প্রস্তুতকারী সংস্থা এনভিডিয়া।’’

Donald Trump Tim Cook Apple
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy