Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪
International News

পিছু হঠছেন ট্রাম্প, ভিসা থাকলেই আমেরিকায় ঢোকা যাবে, আসছে নয়া নির্দেশ

বহু বিতর্কের পর অবশেষে কিছুটা পিছু হঠার পথে ডোনাল্ড ট্রাম্প। অভিবাসন নীতির প্রশ্নে যে কড়া অবস্থান নিয়েছিলেন, সেখান থেকে কিছুটা পিছু হঠার ইঙ্গিত। যে মুসলিম প্রধান দেশগুলির নাগরিকদের আমেরিকা প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প, সেই দেশগুলির তালিকা থেকে সম্ভবত সরিয়ে দেওয়া হচ্ছে ইরাকের নাম।

ছবি: সংগৃহীত।

ছবি: সংগৃহীত।

সংবাদ সংস্থা
শেষ আপডেট: ০১ মার্চ ২০১৭ ১৩:১০
Share: Save:

বহু বিতর্কের পর অবশেষে কিছুটা পিছু হঠার পথে ডোনাল্ড ট্রাম্প। অভিবাসন নীতির প্রশ্নে যে কড়া অবস্থান নিয়েছিলেন, সেখান থেকে কিছুটা পিছু হঠার ইঙ্গিত। যে মুসলিম প্রধান দেশগুলির নাগরিকদের আমেরিকা প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প, সেই দেশগুলির তালিকা থেকে সম্ভবত সরিয়ে দেওয়া হচ্ছে ইরাকের নাম। শুধু তাই নয়, যাঁদের কাছে বৈধ ভিসা রয়েছে, তাঁদের কারওকেই আমেরিকায় ঢুকতে বাধা দেওয়া হবে না। এমন নীতিই ঘোষিত হতে চলেছে বলে খবর।

অভিবাসন নীতি কঠোর করতে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এর আগে যে নির্দেশিকায় সই করেছিলেন, সে নির্দেশিকা মার্কিন আদালত বাতিল করে দিয়েছে। ট্রাম্প প্রশাসন জানিয়েছিল, আদালত একটি নির্দেশিকা বাতিল করে দিয়েছে বলে সরকার হাত গুটিয়ে বসে থাকবে না। আবার সংশোধিত নির্দেশিকা জারি করা হবে। যে বিষয়গুলি নিয়ে আদালত আপত্তি তুলেছিল, সেগুলি এড়িয়ে নতুন নিষেধাজ্ঞা জারি হবে। সেই নতুন নিষেধাজ্ঞা তৈরি হয়ে গিয়েছে বলে খবর। বেশ কয়েকটি দেশের নাগরিকদের এবং শরণার্থীদের আমেরিকা প্রবেশ কঠিন করে তোলার একাধিক সংস্থান এই নতুন নির্দেশিকায় থাকছে বলে খবর। ধর্মীয় সংখ্যালঘু শরণার্থীদের আমেরিকায় ঢুকতে দেওয়ার বিষয়ে যে ছাড় ছিল, নতুন নির্দেশিকায় সেই ছাড় প্রত্যাহার করা হচ্ছে বলে শোনা যাচ্ছে। তবে যাঁদের হাতে বৈধ মার্কিন ভিসা ইতিমধ্যেই রয়েছে, তাঁরা যে দেশের নাগরিকই হন, আমেরিকায় ঢুকতে তাঁদের বাধা দেওয়া হবে না। এমন নির্দেশিকাই নাকি জারি হতে চলেছে। নতুন নির্দেশিকা তথা নিষেধাজ্ঞা জারির সব প্রস্তুতি নাকি সারা। শুধু প্রেসিডেন্টের স্বাক্ষর হওয়া বাকি।

আরও পড়ুন

লিমুজিন থেকে লিফট, ৪৫৯ টনের লটবহর নিয়ে বিদেশ সফরে সৌদি রাজা

প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের অভিবাসন নীতির বিরুদ্ধে এ ভাবেই বিক্ষোভ মুখর হয়েছিল আমেরিকার একাংশ। —ফাইল চিত্র।

সংবাদ সংস্থা সূত্রে খবর, ইরাকের উপর থেকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের বিষয়ে পেন্টাগন ও স্টেট ডিপার্টমেন্টের তরফে থেকে ক্রমাগত চাপ দেওয়া হচ্ছিল ট্রাম্পের উপর। মূলত আইএস-এর বিরুদ্ধে লড়াইয়ে ইরাকের ভূমিকার কথা মাথায় রেখেই সে দেশের নাগরিকদের উপর থেকে নিষেধাজ্ঞা সরানোর পরামর্শ দেওয়া হচ্ছিল। ট্রাম্প সে পরামর্শ মেনে নিচ্ছেন বলেই খবর।

নয়া অভিবাসন নীতিতে একটু কৌশলী অবস্থান নিচ্ছে ট্রাম্প সরকার। এ দিন মার্কিন কংগ্রেসে তাঁর প্রথম ভাষণে ট্রাম্প জানিয়েছেন, নয়া নীতিতে আমেরিকায় ঢুকতে ইচ্ছুক অভিবাসীদের মেধা ও দক্ষতার উপরে বেশি জোর দেওয়া হবে। এতে আমেরিকায় অদক্ষ কর্মীর সংখ্যা কমবে। ট্রাম্পের মতে, অভিবাসন নীতি নিয়ে রিপালিকান ও ডেমোক্র্যাট— দু’পক্ষ ‘সমঝোতা’য় এলে তবেই এই সংস্কার সম্ভব হবে। এমন ভাবে এই নির্দেশিকা আনা হচ্ছে, যাতে আদালত একে কোনও যুক্তিতে বাতিল করতে না পারে। কিন্তু যাঁদের আমেরিকা প্রবেশ ট্রাম্প আটকাতে চান, তাঁদের আটকে দেওয়ার পথও সরকারের সামনে খোলা থাকে। ওয়াশিংটন সূত্রে এমন খবরই মিলছে।

জঙ্গি কার্যকলাপ রোধ ও জাতীয় নিরাপত্তার অজুহাতে একবগ্গা ভাবে মুসলিম অভিবাসী ও শরণার্থীদের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা যে সহজ নয়, তা ট্রাম্প বেশ বুঝে গিয়েছেন। তাই এ দিন তাঁর সুর বেশ নরম করেছেন ট্রাম্প। জানিয়েছেন, মার্কিনিদের স্বার্থরক্ষা করেই অভিবাসী ও শরণার্থীদের জন্য দরজা খুলতে চায় আমেরিকা। তিনি বলেন, “অভিবাসন নীতিতে সত্যিকারের সংস্কার সম্ভব বলেই আমার বিশ্বাস। তবে তার জন্য মার্কিনিদের কর্মসংস্থান ও মজুরি বাড়ানোর লক্ষ্যমাত্রা মাথায় রাখতে হবে। সেই সঙ্গে দেশের নিরাপত্তা ব্যবস্থা মজবুত করতে হবে। এবং আইনের শাসনের উপর আস্থা ফেরাতে হবে।”

প্রেসিডেন্ট পদে বসার পরই এক প্রশাসনিক নির্দেশ জারি করে ইরাক, ইরান, ইয়েমেন, লিবিয়া, সিরিয়া, সুদান ও সোমালিয়ার মতো সাতটি মুসলিম প্রধান দেশের নাগরিকদের এবং শরণার্থীদের মার্কিন মুলুকে ঢোকার দরজা বন্ধ করে দেন ট্রাম্প। আমেরিকার মাটিতে সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপ ঠেকাতেই নিষেধাজ্ঞার যুক্তি দেখিয়েছিলেন তিনি। তবে সে নির্দেশের পরই বিশ্ব জুড়ে প্রবল সমালোচনা-বিক্ষোভের মুখে পড়ে ট্রাম্প প্রশাসন। প্রতিবাদ চলতে থাকে মার্কিন মুলুকের অন্দরেও। শেষমেশ সিয়াটল ফেডেরাল কোর্ট সেই নিষেধাজ্ঞায় স্থগিতাদেশ দেওয়ার ফলে ফের খুলে যায় শরণার্থী ও মুসলিম অভিবাসীদের জন্য আমেরিকার দরজা।

পুরনো নির্দেশিকাটি জারি হওয়ার পরে মার্কিন বিদেশ দফতর হাজার দশেক ভিসা বাতিল করে দিয়েছিল। নির্দেশিকাটিই পরে আদালতে খারিজ হয়ে যায়। এ বার ট্রাম্প প্রশাসন যে সিদ্ধান্ত নিচ্ছে, তাতে ভিসা বাতিল করার পথে আর হাঁটবে না আমেরিকা। যাঁদের বৈধ ভিসা রয়েছে, তাঁরা আমেরিকায় ঢুকতে পারবেন বলে জানা যাচ্ছে। কিন্তু ধর্মীয় সংখ্যালঘু শরণার্থীদের জন্য যে নতুন নীতি নেওয়া হচ্ছে বলে খবর, তাতে মুসলিম শরণার্থীদের আমেরিকা প্রবেশে বাধা বহাল থাকবে বলে ট্রাম্প বিরোধী শিবির আশঙ্কা প্রকাশ করছে।

আরও পড়ুন

অস্ত্রোপচার ছাড়াই ৭ লাখি বিল, তদন্তের শুরুতেই অভিযুক্ত অ্যাপোলো

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE