১ অগস্ট থেকে নয়া শুল্কনীতি কার্যকর হবে বলে আগেই জানিয়েছিল হোয়াইট হাউস। তার আগের রাতে পারস্পরিক বা পাল্টা শুল্কের তালিকা দিলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। ঠিক যেমনটা দিয়েছিলেন গত ২ এপ্রিল। তার পরে অবশ্য বিভিন্ন দেশের সঙ্গে বাণিজ্যচুক্তি বা বাণিজ্যিক বোঝাপড়া হয়েছে আমেরিকার। তাই শুল্কের পরিমাণে হেরফের হয়েছে। বৃহস্পতিবার ৬৮টি দেশ এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলি থেকে আমেরিকায় আমদানি হওয়া পণ্যে কত পারস্পরিক শুল্ক ধার্য করা হচ্ছে, তা প্রকাশ্যে এসেছে। ট্রাম্প ইতিমধ্যেই শুল্ক সংক্রান্ত নির্দেশনামায় স্বাক্ষর করেছেন। তবে নয়া শুল্ক কার্যকর হবে আগামী ৭ অগস্ট।
বিশ্বের যে সমস্ত দেশের সঙ্গে আমেরিকার বাণিজ্যঘাটতি (আমেরিকা থেকে রফতানি হওয়া পণ্যের তুলনায় সংশ্লিষ্ট দেশ থেকে আমদানির পরিমাণ বেশি) রয়েছে, সেই সমস্ত দেশের উপর চড়া হারে পারস্পরিক শুল্ক চাপানোর কথা আগেই জানিয়েছিল আমেরিকা। বুধবারই ট্রাম্প জানিয়েছিলেন, ‘বন্ধু’ ভারতের পণ্যে ২৫ শতাংশ শুল্ক চাপানো হবে। শুল্কের সেই পরিমাণ অপরিবর্তিত রাখা হয়েছে। পাকিস্তান, মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া, কম্বোডিয়া, তাইল্যান্ডের পণ্যে আরোপ হচ্ছে ১৯ শতাংশ পারস্পরিক শুল্ক। বাংলাদেশ, শ্রীলঙ্কা, তাইওয়ান, ভিয়েতনামের উপর প্রযুক্ত হচ্ছে ২০ শতাংশ শুল্ক। সেই হিসাবে ভারতীয় উপমহাদেশে সবচেয়ে কম শুল্ক দিতে হচ্ছে পাকিস্তানকে। চিনের সঙ্গে আমেরিকার বাণিজ্যচুক্তি সংক্রান্ত বৈঠকের নির্যাস প্রকাশ্যে আনেনি দু’পক্ষই। তাই বেজিঙের উপর কতটা শুল্ক চাপছে, তা স্পষ্ট নয়। বৃহস্পতিবার তার উল্লেখও করা হয়নি।
বৃহস্পতিবারের তালিকায় থাকা দেশগুলির মধ্যে আমেরিকায় রফতানি করা পণ্যের জন্য সবচেয়ে বেশি শুল্ক দিতে হচ্ছে সিরিয়াকে (৪১ শতাংশ)। তার পরে যথাক্রমে রয়েছে লাওস (৪০ শতাংশ), মায়ানমার (৪০ শতাংশ), সুইৎজ়ারল্যান্ড (৩৯ শতাংশ), ইরাক (৩৫ শতাংশ), সার্বিয়া (৩৫ শতাংশ)। পারস্পরিক শুল্ক ছাড়াও আমেরিকায় ব্যথা উপশমকারী ওষুধ ফেন্টানাইল (যা যুক্তরাষ্ট্রে মাদক হিসাবে ব্যবহার হয়)-এর পাচার রোধ করতে ব্যর্থ হওয়ায় কানাডার বহু পণ্যে ২৫ থেকে বাড়িয়ে ৩৫ শতাংশ শুল্ক আরোপের কথা জানিয়েছে ট্রাম্প প্রশাসন। ব্রাজ়িলে আমেরিকার আমদানির তুলনায় রফতানির পরিমাণ বেশি হলেও সে দেশের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট জ়াইর বোলসোনারোর বিরুদ্ধে চলা বিচারপ্রক্রিয়া নিয়ে আপত্তি জানিয়েছিলেন ট্রাম্প। তাই সে দেশ থেকে আমদানি করা পণ্যে ৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপের কথা জানান। মেক্সিকোর সঙ্গে আলোচনা চলার জন্য তাদের আরও ৯০ দিন সময় দিয়েছেন ট্রাম্প।
কেন এই নয়া শুল্ক, তার ব্যাখ্যা দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। ট্রাম্পের কথায়, “কিছু দেশ এমন শর্ত দিচ্ছিল, যাতে বাণিজ্যঘাটতির মোকাবিলা সম্ভব নয়। আর বাকিরা আমেরিকার অর্থনৈতিক এবং জাতীয় নিরাপত্তা সংক্রান্ত উদ্বেগের বিষয়ে অবহিত হওয়া সত্ত্বেও আমাদের সঙ্গে বোঝাপড়ায় আসতে ব্যর্থ হয়েছে।”