যুদ্ধ করতে করতে ক্লান্ত রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। কিন্তু তার পরেও তিনি কোনও চুক্তি করতে রাজি নন! এমনই দাবি করলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিনি এ-ও মনে করেন, ইউক্রেন যুদ্ধ শেষ করার বিষয়ে ‘ইতিবাচক’ পদক্ষেপ করবেন পুতিন।
গত ১৫ অগস্ট আলাস্কার অ্যাঙ্কোরেজ়ে মার্কিন সেনাঘাঁটি ‘জয়েন্ট বেস এলমেনডর্ফ-রিচার্ডসন’-এ ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠক করে নিজের শর্তের কথা জানিয়ে মস্কো ফিরে গিয়েছেন পুতিন। তার পর সোমবার হোয়াইট হাউসে ওভাল অফিসে ইউক্রেন প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জ়েলেনস্কির সঙ্গে বৈঠকে বসেছিলেন ট্রাম্প। শুধু জ়েলেনস্কি নয়, সেই বৈঠক ছিল আদতে তারকাখচিত! ওভাল অফিসের বৈঠকে ছিলেন ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাক্রোঁ, ফিনল্যান্ডের প্রেসিডেন্ট আলেকজ়ান্ডার স্টাব, ইটালির প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনি, ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী কিয়ের স্টার্মার, জার্মান চ্যান্সেলর ফ্রেডরিখ মার্জ়, ইউরোপীয় কমিশনের সভাপতি উরসুলা ভন ডের লেইন এবং নেটোর মহাসচিব মার্ক রুট। উদ্দেশ্য একটাই— রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের অবসান। কিন্তু সেই অবসানের পথ কতটা মসৃণ হবে, আদৌ কোন রফাসূত্র বার হবে কি না, তা নিয়ে সংশয় রয়েছে অনেকের মনেই।
পুতিনকে নিয়ে সংশয় রয়েছে ট্রাম্পের মনেও। তা তিনি গোপনও করেননি। তবে ট্রাম্পের কথায়, ‘‘প্রেসিডেন্ট পুতিন কী ভাবছেন, তা আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যে জানতে পারব। সম্ভবত তিনি চুক্তি চান না। যদি তা না হয়, তবে পুতিন একটি কঠিন পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে পারেন।’’
‘ফক্স নিউজ়’-এ এক সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প ইউক্রেন যুদ্ধের ভবিষ্যৎ এবং পুতিনের মতিগতি নিয়ে নানা সম্ভাবনার কথা বলেছেন ট্রাম্প। যুদ্ধ অবসানের প্রসঙ্গে মার্কিন প্রেসিডেন্টের মত, ‘‘আমার মনে হয় না, এটা সমস্যা হবে। আমার মনে হয় পুতিন ক্লান্ত। ক্লান্ত সকলেই।’’ ট্রাম্প এ-ও মনে করেন, ‘‘পুতিন এবং জ়েলেনস্কির মধ্যে সম্পর্ক একটু ভাল হতে পারে। দু’জনকেই একটু নমনীয় হতে হবে।’’
জ়েলেনস্কির সঙ্গে বৈঠকের পর নিজের সমাজমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে ট্রাম্প লেখেন, “বৈঠক শেষে আমি রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে ফোনে কথা বলেছি। পাশাপাশি, জ়েলেনস্কি এবং পুতিনের মধ্যে একটি বৈঠকের প্রস্তাবও দিয়েছি। ইতিমধ্যেই সেই বৈঠকের তোড়জোড় শুরু করা হচ্ছে। সেই বৈঠক হওয়ার পর, আমরা একটি ত্রিপাক্ষিক বৈঠক করব। সেখানে দুই রাষ্ট্রপ্রধান থাকবেন এবং আমিও থাকব।”
আরও পড়ুন:
ট্রাম্প জানিয়েছেন, যুদ্ধ–পরবর্তী ইউক্রেনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য সে দেশে সেনা পাঠাবে না আমেরিকা। তিনি বলেন, ‘‘ফ্রান্স, জার্মানি, ব্রিটেন-সহ অন্যেরা ইউক্রেনে সেনা পাঠাতে চায়। আমি মনে করি না, তাতে কোনও সমস্যা হতে পারে। তবে আমেরিকা সেনা পাঠাবে না ইউক্রেনে।’’
অন্য দিকে, নোবেল পুরস্কারের পর এ বার ট্রাম্পের কণ্ঠে শোনা গেল ‘স্বর্গে যাওয়ার’ কথা। মার্কিন প্রেসিডেন্টের দাবি, যদি তিনি রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ থামাতে সক্ষম হন, তবে স্বর্গে যেতে পারেন!