Advertisement
E-Paper

প্রাক্তন প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে বিচারপ্রক্রিয়া চালানোয় ক্ষুব্ধ ট্রাম্প, ব্রাজ়িলের উপর চাপানো হল ৫০ শতাংশ শুল্ক

ট্রাম্পের ঘোষণার পরেই অবশ্য ব্রাজ়িলের প্রেসিডেন্ট পাল্টা মার্কিন পণ্যে পাল্টা শুল্ক আরোপের হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, “স্বাধীন এবং সার্বভৌম দেশ হিসাবে অন্য কারও নির্দেশ বা অভিভাবকত্ব মানবে না ব্রাজ়িল।”

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ১০ জুলাই ২০২৫ ০৮:৫১
(বাঁ দিকে) মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং প্রেসিডেন্ট লুইস ইনাসিয়ো লুলা দ্য সিলভা (ডান দিকে)।

(বাঁ দিকে) মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং প্রেসিডেন্ট লুইস ইনাসিয়ো লুলা দ্য সিলভা (ডান দিকে)। —ফাইল চিত্র।

ব্রাজ়িল থেকে আমেরিকায় রফতানি হওয়া পণ্যের উপর ৫০ শতাংশ শুল্ক চাপানোর কথা ঘোষণা করলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। মার্কিন প্রেসিডেন্টের অভিযোগ, ব্রাজ়িলের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ড জাইর বোলসেনারোর বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগে বিচারপ্রক্রিয়া চালাচ্ছে বর্তমান প্রেসিডেন্ট লুইস ইনাসিয়ো লুলা দ্য সিলভার প্রশাসন। এর পাশাপাশি অতিরিক্ত শুল্ক আরোপের নেপথ্য কারণ হিসাবে ব্রাজ়িল এবং আমেরিকার ‘অন্যায্য বাণিজ্য ঘাটতি’কেও দায়ী করেছেন ট্রাম্প। বাণিজ্য ঘাটতির অর্থ, আমেরিকায় ব্রাজ়িলের রফতানির পরিমাণ আমদানির তুলনায় বেশি। ট্রাম্পের ঘোষণার পরেই অবশ্য ব্রাজ়িলের প্রেসিডেন্ট পাল্টা মার্কিন পণ্যে পাল্টা শুল্ক আরোপের হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, “স্বাধীন এবং সার্বভৌম দেশ হিসাবে অন্য কারও নির্দেশ বা অভিভাবকত্ব মানবে না ব্রাজ়িল।”

মঙ্গলবার হোয়াইট হাউস থেকে সাতটি দেশকে শুল্ক-চুক্তি পাঠান ট্রাম্প। আলজেরিয়া, ইরাক, লিবিয়া এবং শ্রীলঙ্কার পণ্যে ৩০ শতাংশ শুল্ক চাপানোর কথা ঘোষণা করেন ট্রাম্প। ব্রুনেই এবং মলডোভার পণ্যে চাপানো হয় ২৫ শতাংশ শুল্ক আর ফিলিপাইনসের পণ্যে ২০ শতাংশ পণ্য। তার পরেই ব্রাজ়িলের প্রেসিডেন্টের উদ্দেশে শুল্ক-চিঠি পাঠান ট্রাম্প।

চিঠিতে ট্রাম্প অভিযোগ করেন যে, স্বাধীন নির্বাচনের উপর বার বার আঘাত করা হচ্ছে ব্রাজ়িলে। দক্ষিণ আমেরিকার এই দেশে আমেরিকানদের বাক্‌স্বাধীনতার অধিকার খর্ব করা করা হচ্ছে বলেও দাবি করেন তিনি। তবে ব্রাজ়িলের উপর তাঁর গোসার কারণ যে প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট বোলসেনারোর বিরুদ্ধে চলা বিচারপ্রক্রিয়া, তা স্পষ্ট করে দেন ট্রাম্প। ব্রাজ়িলের বর্তমান প্রেসিডেন্ট লুলাকে পাঠানো চিঠিতে তিনি লেখেন, “শ্রদ্ধেয় বোলসেনারোর সঙ্গে যে আচরণ করা হচ্ছে, তা ঠিক নয়। এই বিচারপ্রক্রিয়া চলতে পারে না। এটা এখনই বন্ধ হওয়া উচিত।” আমেরিকানদের মতপ্রকাশের স্বাধীনতা খর্ব হওয়া প্রসঙ্গে তিনি ব্রাজ়িলের সুপ্রিম কোর্টের একটি রায়ের প্রসঙ্গ উত্থাপন করেন। যে রায়ে আমেরিকার সমাজমাধ্যম সংস্থাগুলির উপর একাধিক বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছিল।

গত ২ এপ্রিল ব্রাজ়িলের পণ্যে ১০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছিলেন ট্রাম্প। বুধবার ৫০ শতাংশ শুল্ক চাপানোর কথা ঘোষণা করে ট্রাম্প জানিয়েছেন, এটি ১ অগস্ট থেকে কার্যকর হবে।

ট্রাম্পের ঘোষণার পরেই সমাজমাধ্যমে একটি পোস্ট করেন ব্রাজ়িলের প্রেসিডেন্ট লুলা। সেখানে তিনি স্পষ্ট জানান যে, সে দেশের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট বোলসেনারোর বিরুদ্ধে বিচারপ্রক্রিয়া চালাচ্ছে ব্রাজ়িলের বিচারবিভাগ। এই বিষয়ে তাঁর সরকারের কোনও হাত নেই বলেও জানান লুলা। ২০২২ সালে ব্রাজ়িলের সাধারণ নির্বাচনে বামপন্থী নেতা লুলার কাছে হেরে যান অতি দক্ষিণপন্থী বোলসেনারো। ভোটে হেরে দেশের নির্বাচনী প্রক্রিয়া নিয়ে প্রশ্ন তোলেন তিনি। তাঁর সমর্থকেরা ব্রাজ়িলের সংসদ ভবন আক্রমণ করার চেষ্টা করেন। ঘটনাটিকে কেন্দ্র করে মামলা হয়। ব্রাজ়িলের আদালত বোলসেনারোকে ‘ক্ষমতার অপব্যবহার’ করার অভিযোগে অভিযুক্ত করে। ২০২৩ সালের জুলাই মাসে সে দেশের নির্বাচন সংক্রান্ত সর্বোচ্চ আদালত সুপ্রিম ইলেকটোরাল কোর্ট জানায়, আট বছর ব্রাজ়িলের কোনও নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারবেন না তিনি। বোলসেনারোর সঙ্গে ট্রাম্পের সম্পর্ক বরাবরই মসৃণ। কয়েক দিন আগেও প্রাক্তন ব্রাজ়িলীয় প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে চলা বিচারপ্রক্রিয়া নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন ট্রাম্প।

লুলা সমাজমাধ্যমে ট্রাম্পের মতপ্রকাশের অধিকার খর্ব হওয়া সংক্রান্ত অভিযোগ খারিজ করে দেন। উল্টে মার্কিন সমাজমাধ্যম সংস্থাগুলির বিরুদ্ধে বর্ণবৈষম্য, হিংসামূলক বিষয়বস্তু ছড়ানোর অভিযোগ তোলেন। পরিসংখ্যান তুলে ধরে দাবি করেন, গত ১৫ বছর ধরে বাণিজ্য ঘাটতি রয়েছে ব্রাজ়িলের, আমেরিকার নয়। তার পরেও একপাক্ষিক ভাবে ব্রাজ়িলের উপর শুল্ক চাপানো হলে ব্রাজ়িলের পারস্পরিক অর্থনৈতিক আইন অনুযায়ী পদক্ষেপ করা হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন লুলা।

Donald Trump Brazil Luiz Inácio Lula da Silva Jair Bolsonaro US Tariff War
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy