তবে কি বদলে যাচ্ছে শত্রু-মিত্র অক্ষ! এক দিকে রাশিয়া ও আমেরিকা, অন্য দিকে ইউরোপের বেশির ভাগ দেশ। ইউক্রেন-প্রশ্নে ক্রমশ ফাটল ধরছে পশ্চিমের সম্পর্কে।
এত দিন যুদ্ধে ইউক্রেনের প্রধান সহযোদ্ধা ছিল আমেরিকা। কিন্তু বর্তমান প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রতিপক্ষ রাশিয়ার দিকে বন্ধুত্বের হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন। চাপ সৃষ্টি করছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জ়েলেনস্কির উপরে। কখনও মস্কোর সঙ্গে সমঝোতা করতে বলছেন, কখনও জ়েলেনস্কিকে ‘অনির্বাচিত একনায়ক’ বলে আক্রমণ করছেন। এই পরিস্থিতিতে আজ জ়েলেনস্কির পাশে দাঁড়িয়েছে ব্রিটেন-ফ্রান্সের মতো দেশ। ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী কিয়ের স্টার্মার উইনস্টন চার্চিলের সঙ্গে তুলনা করেছেন জ়েলেনস্কির।
এ দিন স্টার্মার বলেন, ‘‘দেশে যুদ্ধ চলছে বলেই জ়েলেনস্কিকে নির্বাচন স্থগিত রাখতে হয়েছে। যথেষ্ট যুক্তিযুক্ত কাজ।’’ মনে করিয়ে দিয়েছেন, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়ে ব্রিটেনকেও একই কাজ করতে হয়েছিল। তবে আসন্ন আমেরিকা-সফরের আগে ট্রাম্পের পুরোপুরি বিরুদ্ধাচরণ করেননি স্টার্মার। বলেছেন, ‘‘আমাদের এক সঙ্গে কাজ করতে হবে। আমেরিকার নেতৃত্বে দীর্ঘমেয়াদি শান্তি আনতে আমরা প্রস্তুত।’’ ১৯টি দেশের রাষ্ট্রনেতাদের সঙ্গে বৈঠকের পরে ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাকরঁ জানিয়েছেন, ফ্রান্স ও তার মিত্র দেশগুলি ইউক্রেনের পাশে আছে। যুদ্ধ থামাতে হলে ইউক্রেনের দাবিদাওয়া ও ইউরোপের নিরাপত্তাকে অগ্রাধিকার দিতে হবে।
ট্রাম্প অবশ্য আক্রমণাত্মক কথা বলেই যাচ্ছেন। সমাজমাধ্যমে লিখেছেন, ‘‘ভেবে দেখুন, এক জন মোটামুটি সফল কৌতুকাভিনেতা ভলোদিমির জ়েলেনস্কি আমেরিকাকে ৩৫ হাজার কোটি ডলার ব্যয় করতে বললেন, এমন একটা যুদ্ধ করতে বললেন, যেটা জেতা সম্ভব নয়, যেটা শুরুই হওয়া উচিত ছিল না। ...এখন আমেরিকা ও ট্রাম্পের সাহায্য ছাড়া সমঝোতাও করতে পারবেন না।’’ এ দিন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টকে সতর্কও (হুমকি) করে দিয়েছেন ট্রাম্প। বলেছেন, ‘‘যা করার তাড়াতাড়ি করুন। এর পর দেশটারই আর অস্তিত্ব থাকবে না।’’
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)