আমেরিকার দরজা বন্ধ হতে চলেছে ১২টি দেশের জন্য। আংশিক নিষেধাজ্ঞা জারি হয়েছে আরও সাত দেশের উপরে। সোমবার থেকে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের এই নির্দেশ কার্যকর হতে চলেছে আমেরিকায়।
হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে বিদেশি পড়ুয়াদের ভর্তি নিয়ে বিতর্কের আবহে দেশকে ‘সুরক্ষিত রাখতে’ আজ ১২টি দেশের নাগরিকদের আমেরিকায় প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছেন ট্রাম্প। আফগানিস্তান, ইরান, মায়ানমার, চাদ, কঙ্গো, ইকুয়েটরিয়াল গিনি, ইরিত্রিয়া, হেটি, লিবিয়া, সোমালিয়া, সুদান ও ইয়েমেনের নাগরিকদের উপরে এই নিষেধাজ্ঞা চাপানো হয়েছে। এদের মধ্যে বেশির ভাগ দেশই আফ্রিকার অত্যন্ত গরিব রাষ্ট্র, যেখান থেকে প্রতি বছর লক্ষ লক্ষ শরণার্থী আমেরিকা ও ইউরোপের দেশগুলির উদ্দেশে পাড়ি জমান এবং সুযোগ পেলে অবৈধ ভাবে প্রবেশ করেন। এ ছাড়াও আংশিক নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে আরও সাতটি দেশের নাগরিকদের উপরে। সেগুলি হল— ভেনেজ়ুয়েলা, বুরুন্ডি, কিউবা, লাওস, সিয়েরা লিয়ন, টোগো এবং তুর্কমেনিস্তান। প্রসঙ্গত, প্রথম দফায় প্রেসিডেন্ট থাকাকালীন ইরান ও আফগানিস্তান-সহ বেশ কয়েকটি দেশের নাগরিকদের আমেরিকায় প্রবেশ নিষিদ্ধ করেছিলেন ট্রাম্প।
ওভাল অফিস থেকে এক ভিডিয়ো বার্তায় প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প জানিয়েছেন, আমেরিকায় অবৈধ অভিবাসী ও শরণার্থীর সংখ্যা লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে। দিন কয়েক আগে কলোরাডোর বাফেলোতে ইহুদিদের উপরে হওয়া হামলার কথাও উল্লেখ করেছেন ট্রাম্প। পুলিশ জানিয়েছিল, হামলাকারী এক অবৈধ অভিবাসী। প্রেসিডেন্টের কথায়, “এই ঘটনা আমাদের চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে যে অভিবাসীদের যথেষ্ট যাচাই করে না নিলে এই ধরনের সমস্যার মোকাবিলা করা যাবে না। আমরা এদের চাই না।”
তবে নিষেধাজ্ঞার আওতায় পড়া দেশগুলির কিছু নাগরিককে এর বাইরে রাখা হয়েছে। তাঁরা হলেন ২০২৬ ও ২০২৮-এ যথাক্রমে ফুটবল বিশ্বকাপ এবং গ্রীষ্মকালীন অলিম্পিক্সে অংশ নিতে আসা খেলোয়াড় এবং তাঁদের সঙ্গীরা। এ ছাড়া, ইরান ও আফগানিস্তান থেকে পালিয়ে আসা যে সব মানুষ ইতিমধ্যেই আমেরিকায় বৈধ শরণার্থীর মর্যাদা ও বিশেষ অভিবাসী ভিসা পেয়ে গিয়েছেন, তাঁরা আমেরিকায় থেকে যেতে পারবেন। দ্বৈত নাগরিকেরাও নিষেধাজ্ঞার আওতায় পড়ছেন না। তাঁরাও। আগামী সোমবার, অর্থাৎ ৯ জুন থেকে এই নির্দেশ কার্যকর হবে বলে উল্লেখ করা হয়েছে প্রেসিডেন্টের সই করা এগজ়িকিউটিভ অর্ডারে।
ট্রাম্পের এই সিদ্ধান্তের সমালোচনা করেছেন বিরোধী ডেমোক্র্যাটরা। তাঁদের বক্তব্য, মার্কিন প্রেসিডেন্টের এই সিদ্ধান্তের ফলে আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে আরও কোণঠাসা হবে আমেরিকা। ট্রাম্পের সিদ্ধান্তের সমালোচনায় সরব হয়েছে মানবাধিকার সংগঠনগুলিও। ‘অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল’ এই নিষেধাজ্ঞাকে ‘বৈষম্যমূলক এবং হিংস্র’ বলে দাবি করেছে।