জার্মানির সেন্ট্রাল মিউনিখের রাস্তায় তখন ভিড়। চলছিল একটি মিছিলও। বৃহস্পতিবার স্থানীয় সময় সকাল সাড়ে ১০টা। সেই ভিড়ের মধ্যে হুড়মুড়িয়ে ঢুকে পড়ে একটি গাড়ি। এলোপাথাড়ি চাপা দেয় পথচারীদের। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, এই ঘটনায় আহত হয়েছেন অন্তত ২৮ জন। তার মধ্যে রয়েছে শিশুও। আহতদের কয়েক জনের অবস্থা সঙ্কটজনক। বাভারিয়া প্রদেশের রাজধানী হল এই মিউনিখ। সেই বাভারিয়ার গভর্নর মার্কুস সডার এই ঘটনাকে ‘হামলা’ বলেই উল্লেখ করেছেন। অভিযুক্ত চালককে ইতিমধ্যে হেফাজতে নিয়েছে পুলিশ। তারা জানিয়েছে, ঘাতক গাড়ির চালক ২৪ বছরের এক আফগান। জার্মানিতে আশ্রয়প্রার্থী তিনি।
শুক্রবার থেকে মিউনিখে শুরু হচ্ছে তিন দিনের ‘মিউনিখ নিরাপত্তা সম্মেলন’। তাতে যোগ দেওয়ার কথা আমেরিকার ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভান্স, ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি-সহ রাষ্ট্রপ্রধানদের। সেই জন্য কড়া নিরাপত্তায় মুড়ে রাখা হয়েছে এই শহর। তার মধ্যেই সম্মেলনস্থল থেকে মাত্র ১.৬ কিলোমিটার দূরে ঘটে গেল এই ‘হামলা’।

এই সেই ঘাতক গাড়ি। ছবি: রয়টার্স
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, ঘটনার সময় রাস্তায় প্রতিবাদ মিছিল করছিলেন একটি কর্মচারী সংগঠনের সদস্যেরা। এই ঘটনায় তাঁরা কেউ হতাহত হয়েছেন কি না, তা এখনও স্পষ্ট নয়। মিউনিখ পুলিশের মুখপাত্র ক্রিস্টিয়ান হুবের জানিয়েছেন, মিছিলের কারণে রাস্তায় টহল দিচ্ছিল পুলিশের গাড়ি। পিছন থেকে একটি গাড়ি এসে পুলিশের গাড়িকে ‘ওভারটেক’ করে সামনে চলে যায়। তার পরে বেপরোয়া ভাবে মিছিলের মধ্যে ঢুকে পড়ে। তার ধাক্কায় ছিটকে পড়তে থাকেন পথচারীরা। সঙ্গে সঙ্গে ঘাতক গাড়িটিকে লক্ষ্য করে একটি গুলি ছোড়ে পুলিশ। তার পরে চালককে গ্রেফতার করা হয়। হুবের জানিয়েছেন, অভিযুক্ত ২৪ বছরের আফগান। তিনি দেশে আশ্রয়ের আবেদন জানিয়েছিলেন।
আরও পড়ুন:
মিউনিখের মেয়র ডায়টর রেইটর ঘটনার নিন্দা করে জানিয়েছেন, তিনি ‘স্তম্ভিত’। প্রত্যক্ষদর্শীদের অবস্থাও একই রকম। কেউ থরথর করে কাঁপছেন। কেউ কেঁদে ফেলেছেন। একে একে তাঁদের বয়ান সংগ্রহ করছে পুলিশ। সেন্ট্রাল মিউনিখের রাস্তায় ছড়িয়েছিটিয়ে পড়ে রয়েছে জুতো, বাচ্চাদের প্যারাম্বুলেটর, ব্যাগ। ঘটনাস্থল পরীক্ষা করা হচ্ছে।
এর আগেও বার্লিনে এমন ঘটনা হয়েছিল। ২০১৬ সালে বড়দিনের বাজারে ভিড়ের মধ্যে ট্রাক নিয়ে ঢুকে পড়েছিলেন টিউনিশিয়ার এক উদ্বাস্তু যুবক। ওই ঘটনায় ১৩ জনের মৃত্যু হয়েছিল।